রোনালদোর গোল ছাড়াই বায়ার্নকে হারাল রিয়াল

রিয়ালকে সমতায় ফেরান মার্সেলো। ছবি: রয়টার্স
রিয়ালকে সমতায় ফেরান মার্সেলো। ছবি: রয়টার্স
>
  • চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
  • রিয়ালের হয়ে গোল করেন মার্সেলো ও অ্যাসেনসিও।
  • বায়ার্নের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন জশুয়া কিমিখ।

লিভারপুল-রোমা ম্যাচের মতো গোলবন্যা হবে না জানা ছিল। জিদান ও হেইঙ্কেস ওভাবে খেলান না দলকে। তাই বলে ইউরোপিয়ান ক্লাসিকো তো ম্যাড়ম্যাড়ে হতে পারে না। সেটা হয়ওনি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ দুই দলই উপহার দিয়েছে উত্তেজনাকর ফুটবল। জমজমাট ৯০ মিনিটের লড়াই শেষে বায়ার্নের মাঠ থেকে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফিরেছে রিয়াল। বলের দখল কিংবা সুযোগ সৃষ্টিতে এগিয়ে থেকেও লাভ হলো না বায়ার্নের।

প্রথম মিনিটেই গোল খেয়ে বসতে পারত রিয়াল। মাদ্রিদের দল থেকে অবহেলিত হামেস রদ্রিগেজের চাপের মুখে ডি বক্সে বল হারান দানি কারভাহাল। সে বল একটুর জন্য জালে পাঠাতে পারেননি টমাস মুলার। সে চাপ বজায় থাকল প্রথম ১৫ মিনিট। রিয়ালকে এ সময়ে মাঠে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর ধীরে ধীরে খেলায় ফিরে জিদানের দল। পরে ১০ মিনিটে বলের দখল কিংবা আক্রমণে এগিয়ে ছিল রিয়ালই। কিন্তু ২৭ মিনিটে একটা ভুল করে বসল রিয়াল।

আক্রমণে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করল রিয়াল রক্ষণ। বলের খোঁজে মার্সেলো যখন বায়ার্নের ডান কর্নারের কাছে, ততক্ষণে আক্রমণে উঠে গেছে বায়ার্ন। হামেসের পায়ে বল দেখে রামোস ও কাসেমিরো দুজনই এগিয়ে গেলেন। সেই ফাঁকে বেরিয়ে গেলেন ফুলব্যাক জশুয়া কিমিখ। ডান প্রান্ত দিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটলেন কিমিখ। তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রবার্ট লেভানডফস্কি। রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও ভাবলেন লেভাকে বল দেবেন কিমিখ। কিন্তু ফুলব্যাক নিজেই শট নিলেন। ভারসাম্য হারানো নাভাস ঠেকাতে পারলেন না শট (১-০)।

গোল খাওয়ার দায়টা মার্সেলোর ঘাড়ে দেয়নি কেউ। কিন্তু তাঁর প্রান্ত দিয়েই তো গোল হয়েছে। তাই সে দায়টা মেটালেন প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে। রিয়ালের আরেকটি আক্রমণ ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল। এই সময় ডান প্রান্তে বল পেয়ে হেড করলেন কারভাহাল। সে বল দেখে বাইসাইকেল কিক নেওয়ার চিন্তা করেও বাদ দেন রোনালদো। সে বল এসে পড়ে বক্সের বাইরে থাকা মার্সেলোর সামনে। আড়াআড়ি দুর্দান্ত সে শট ঠেকানো সম্ভব ছিল না উলরাইখের (১-১)। প্রথমার্ধেই চোটের কারণে রোবেন ও বোয়েটাংকে হারিয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে বায়ার্ন।

রিয়ালের বুকে প্রথম ছুরি চালান বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার জশুয়া কিমিখ। ছবি: এএফপি
রিয়ালের বুকে প্রথম ছুরি চালান বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার জশুয়া কিমিখ। ছবি: এএফপি

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইসকোকে বসিয়ে অ্যাসেনসিওকে নামান জিদান। সিদ্ধান্তটা সঠিক প্রমাণ করতে মাত্র ১২ মিনিট লেগেছে এই মিডফিল্ডারের। দারুণ এক পাল্টা–আক্রমণে ডান প্রান্তে বল নিয়ে ছুটে গেছেন ভাসকেজ। বাঁ প্রান্তে অ্যাসেনসিওকে কভার করেননি কেউ। একদম শেষ মুহূর্তে পাস পেলেন অ্যাসেনসিও। সবাইকে চমকে দিয়ে এগিয়ে গেল রিয়াল (২-১)।

৫৯ মিনিটে রিবেরির শট নাভাস ঠেকিয়ে না দিলে তখনই সমতায় ফিরতে পারত বায়ার্ন। ৬৭ মিনিটে আরও একবার চমক দেখালেন জিদান। কারভাহালকে তুলে মাঠে নামালেন বেনজেমাকে। প্রতিপক্ষের মাঠে ২-১ এ এগিয়ে থাকা অবস্থায় ডিফেন্ডারের বদলে স্ট্রাইকার! রাইট উইং থেকে নিচে নেমে আসতে হলো ভাসকেজকে। পরের মিনিটেই আরও একবার একটুর জন্য সমতায় ফিরতে পারেনি স্বাগতিক দল।
৭০ মিনিটে জালে বল পাঠিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু হ্যান্ডবলের কারণে সে গোল বাতিল হয়। উল্টো দিকে বারবার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন রিবেরি। কিন্তু কোনোটাই গোলে পরিণত হয়নি। ৮৮ মিনিটে সহজ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন লেভানডফস্কি।