পাঞ্জাবের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় সানরাইজার্সের

আগাওয়ালকে ফিরিয়ে সাকিবের উল্লাস। ছবি: এএফপি
আগাওয়ালকে ফিরিয়ে সাকিবের উল্লাস। ছবি: এএফপি
>
  • আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৩২ রান তুলেছিল সানরাইজার্স
  •  তাড়া করতে নেমে ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব
  •  সানরাইজার্সের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন সাকিব, রশিদ ও সন্দ্বীপ শর্মা

সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ক্রিস গেইল। দলটিকে আজ আর গেইল-ঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়নি। উল্টো কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সাদামাটা স্কোরকে জয়ের জন্য যথেষ্ট করে তুলেছেন সানরাইজার্স বোলারেরা। এই জয়ে ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠে এল সাকিব-রশিদদের দলটি।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৩২ রান তুলেছিল সানরাইজার্স। তাড়া করতে নেমে ১২ ওভার শেষেও পাঞ্জাবের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৭৭ রান। অর্থাৎ শেষ ৪৮ বলে ৫৬ রান দরকার ছিল দলটির। ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই মৈনাক আগাওয়ালকে (১২) ফিরিয়ে পাশার দান উল্টে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব। পরের ওভারে করুন নায়ারকেও তুলে নেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ (৪-০-১৯-৩)। তখনই বোঝা গিয়েছিল, লো-স্কোরিং এই ম্যাচে নাটকীয় কিছুই ঘটতে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ঘটেছেও ঠিক তাই। সাদামাটা এই স্কোর তাড়া করতে নেমে পাঞ্জাব (১১৯) হেরেছে ১৩ রানে।
১৫তম ওভারে বিপজ্জনক অ্যারন ফিঞ্চকে (৮) দ্রুত ফিরিয়ে জয়ের পাল্লা সানরাইজার্সের দিকে ভারী করে তুলেছিলেন সাকিব। বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডার আজ দারুণ বোলিং করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলকে এনে দিয়েছেন উইকেট। মৈনাককে ফিরিয়ে আইপিএলে নিজের ৫০তম ম্যাচে উইকেটের ‘ফিফটি’-ও তুলে নেন সাকিব। এই ম্যাচে তাঁর বোলিং ফিগার ৩-০-১৮-২।
জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৪২ রান দরকার ছিল পাঞ্জাবের। হাতে ছিল ৫ উইকেট। এই অবস্থায় ১৬তম ওভারে পাঞ্জাবের মনোজ তিওয়ারি ও অ্যান্ড্রু টাইকে ফেরান সানরাইজার্স পেসার সন্দ্বীপ শর্মা (৪-০-১৭-২)। পাঞ্জাবের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ৯৬। অর্থাৎ, দলীয় ৫৫ রানে লোকেশ রাহুল আউট হওয়ার পর ৪১ রান তুলতেই পাঞ্জাবের ৭ উইকেট নেই!
১৮তম ওভারে পাঞ্জাব অধিনায়ক রবিচন্দ্র অশ্বিনকেও ফিরিয়ে সানরাইজার্সের জয়কে স্রেফ সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন রশিদ। কারণ হাতে ১ উইকেট নিয়ে পাঞ্জাব তখন ১৬ বলে ৩২ রানের দূরত্বে। সেটা শেষ ওভারে নেমে আসে ৬ বলে ১৫ রানের সমীকরণে। সানরাইজার্সের পেসার বাসিল থাম্পি দ্বিতীয় বলেই অঙ্কিত রাজপুতকে ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন। তার আগে এই থাম্পিই নবম ওভারে ফিরিয়েছেন গেইলকে। ২২ বলে ২৩ রান করা এই ক্যারিবিয়ান পাঞ্জাবকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিতে পারেননি।
বোলার সাকিবকে দেখা গেলেও এবারের আইপিএলে ব্যাটসম্যান সাকিবকে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে ফেললেও কোনো ফিফটি নেই। এমনকি ত্রিশোর্দ্ধ রানের কোনো ইনিংসও নেই! আজ অবশ্য খেদটা মেটাতে পারতেন। পঞ্চম ওভারে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন সানরাইজার্স তখন ৩ উইকেটে ২৭ রান নিয়ে ধুঁকছে। এখান থেকে সাকিব তাঁর দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দিতে পারতেন। কিন্তু ২৯ বলে ২৮ রান করেই ধৈর্যহারা!
পাঞ্জাবের স্পিনার মুজিব উর রহমানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড উইকেট সহজ ক্যাচ দেন সাকিব। ১৩.৪ ওভারে সানরাইজার্সের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৭৯ রান। সাকিবকে এবার স্পিনারদের বিপক্ষে বেশ নড়বড়ে দেখা যাচ্ছে। এই ম্যাচ এবং সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসের মধ্যে চারবারই স্পিনারদের উইকেট দিলেন সাকিব।
সানরাইজার্সের হয়ে মণীশ পাণ্ডে ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানেরা বেশিক্ষণ উইকেট থাকতে পারেননি। ৫১ বলে ৫৪ রান করা মণীশ এই পথে তুলে নিয়েছেন এবারের আইপিএলে মন্থরতম (৪৮ বল) ফিফটি। পাঞ্জাবের হয়ে আইপিএলে ক্যারিয়ার বোলিং করেছেন পেসার অঙ্কিত রাজপুত (৪-০-১৪-৫)।