রাহুলের রাতে নায়ক বুমরা

উইকেট শিকারের পর বুমরাকে অধিনায়ক রোহিত শর্মার অভিনন্দন। ছবি: এএফপি
উইকেট শিকারের পর বুমরাকে অধিনায়ক রোহিত শর্মার অভিনন্দন। ছবি: এএফপি

রোহিত শর্মার মুখে যখন চওড়া হাসি, লোকেশ রাহুল তখন হতাশায় মুখ লুকাচ্ছেন। ‘এ কী করলাম আমি’, এমন অনুশোচনায় যে দগ্ধ হচ্ছেন, ক্লোজআপে রাহুলের যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ দেখেই সেটি বোঝা যাচ্ছে। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের এ ওপেনার শুধু সেঞ্চুরি ফেলে আসেননি, ফেলে এসেছেন ম্যাচটিও। ওয়াংখেড়ে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাঞ্জাবকে ৩ রানে হারিয়ে শেষ চারের আশা টিকিয়ে রেখেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।

১২ বলে পাঞ্জাবের দরকার ছিল ২৩ রান। উইকেটে ৯৩ রানে অপরাজিত রাহুল। বুমরার তৃতীয় বলটাই যেন বদলে দিল ম্যাচের রং। অফ স্টাম্পের বাইরে ওভারপিচড বলটা লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে রাহুল ধরা পড়লেন বেন কাটিংয়ের হাতে। ৯৪ রানে ফেরার কষ্টের চেয়ে বেশি তাঁর কষ্ট তখন ম্যাচটা শেষ না করে আসতে পারা। রাহুলকে তো ফিরিয়েছেনই, ১৯তম ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ম্যাচটা নিজেদের টেনেও এনেছেন বুমরা। স্নায়ু আর স্কিলের পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ১৭ রান আর তুলতে পারেনি পাঞ্জাব। জয়ের হাসি হেসেছে মুম্বাই।

ম্যাচটা হারলেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত মুম্বাইয়ের। স্বাগতিক দলের বিদায়ের ঘণ্টা যেন ওয়াংখেড়ের দর্শকেরা শুনতে পারছিল নবম ওভারেই, যখন ৭১ রান তুলতে ৪ উইকেট নেই মুম্বাইয়ের। পঞ্চম উইকেটে ৩৬ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়ে মুম্বাইকে টেনে তুলেছেন কাইরন পোলার্ড-হার্দিক পান্ডিয়া। ২১৭.৩৯ স্ট্রাইকরেটে ২৩ বলে পোলার্ডের ৫০ রানের ঝোড়ো ইনিংসটা পাঞ্জাবের কাছে শেল হয়ে বিঁধলেও মুম্বাইয়ের কাছে ছিল সেটি আশার সলতে। পান্ডিয়ার ২৩ বলে ৩২ রানের ইনিংসটা খুব বড় না মনে হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় অবশ্যই মহামূল্যবান। পোলার্ড-পান্ডিয়ার অসাধারণ ব্যাটিং ৮ উইকেটে ১৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দিয়েছে মুম্বাইকে।

এই চ্যালেঞ্জিং স্কোরটাই কিনা মামুলি মনে হচ্ছিল পাঞ্জাবের কাছে, যখন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রাহুল-অ্যারন ফিঞ্চ ৭৪ বলে ১১১ রানের লম্বা এক জুটি গড়লেন। ৪৬ রানে ফিঞ্চ ফিরলেও রাহুল এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে, এগোচ্ছিলেন দলকে জয়ের প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে।

সব এলোমেলো হয়ে গেল বুমরার ওই ওভারে। টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেও যে কখনো কখনো নায়ক হওয়া যায় না, ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রাহুলকে সেটিই বোঝালেন বুমরা!