পেলের জাদু আর বিশ্বকাপের 'দাদু'

১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপে অভিষেকেই আলো ছড়ান পেলে। ছবি: এএফপি
১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপে অভিষেকেই আলো ছড়ান পেলে। ছবি: এএফপি
>

বিশ্বকাপ, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের পর্দা ওঠার আর মাত্র ২৪ দিন বাকি। দুরু দুরু বুকে ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছেন নিশ্চয়। শুরু হয়েছে প্রথম আলো অনলাইনেরও ‘কাউন্ট ডাউন’। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে ক্ষণগণনা নিয়ে একটি বিশেষ রচনা থাকছে। আজ থাকছে ‘২৪’ সংখ্যাটি নিয়ে

হুয়ান গারদেয়াজাবাল। নামটা কখনো শুনেছেন? একটা সূত্র দেওয়া যায়। মাঠে বাঁশি বাজানোই তাঁর কাজ। ঠিকই ধরেছেন, ইনি একজন রেফারি। পিয়েরে লুই কলিনা কিংবা হাওয়ার্ড ওয়েবের মতো তারকা গোছের কেউ নন। কিন্তু গারদেয়াজাবালের যে কীর্তি রয়েছে, তা আর কোনো রেফারির নেই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ রেফারি এই গারদেয়াজাবাল। ২৪ বছর বয়সে এই স্প্যানিশ রেফারি বাঁশি হাতে নেমেছিলেন ১৯৫৮ বিশ্বকাপের মাঠে।
সর্বকনিষ্ঠ রেফারি থেকে এবার খেলোয়াড়দের দিকে তাকানো যাক। বিশ্বকাপে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডটা একজন আইরিশের। ১৯৮২ বিশ্বকাপে উত্তর আয়ারল্যান্ডের হয়ে ১৭ বছর ৪১ দিন বয়সে মাঠে নেমে পেলের রেকর্ড ভাঙেন নরম্যান হোয়াইটসাইড। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় কে? জবাবটা অনেকেই জানেন—কলম্বিয়ার সাবেক গোলরক্ষক ফারাদ মনড্রাগন। ২০১৪ বিশ্বকাপে জাপানের বিপক্ষে মাঠে নেমে তিনি এই রেকর্ডটা গড়েন। সেদিন ছিল ২৪ জুন।

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ড মনড্রাগনের। ছবি: এএফপি
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ড মনড্রাগনের। ছবি: এএফপি

খেলোয়াড়দের বয়স নিয়ে মজার তথ্য-উপাত্ত ফুটবলে কম নেই। ক্যামেরুনের কথাই ধরুন, ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ৪২ বছর ৩৫ দিন বয়সে মাঠে নেমে রেকর্ড গড়েছিলেন রজার মিলা। পরে এই রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছেন মনড্রাগন। কিন্তু ক্যামেরুনের সেই দলে খেলোয়াড়দের মধ্যে বয়সের ফারাক ছিল সবচেয়ে বেশি। ’৯৪ বিশ্বকাপের সেই ক্যামেরুন দলে ছিলেন দেশটির আরেক তারকা খেলোয়াড় রিগোবার্ট সং। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ৩৫৮ দিন। মিলা এবং সংয়ের মাঝে বয়সের ফারাক ছিল ২৪ বছরের কিছু বেশি! বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ বয়সের ফারাক।
ফিরে আসি পেলের প্রসঙ্গে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে মাঠে নেমে রেকর্ড গড়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। হোয়াইটসাইড বিশ্বকাপের মাঠে নামার আগ পর্যন্ত পেলেই ছিলেন এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়। সেই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ‘ও রেই’ খ্যাত পেলে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটাই সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড। সেই দিনটিকে আর কেউ মনে না রাখলেও পেলে নিশ্চয়ই মনে রেখেছেন—২৪ জুন, ১৯৫৮।
চব্বিশের এই খেরোখাতায় চাইলে আরও দুটি উপাত্ত যোগ করে নিতে পারেন। বিশ্বকাপের এ পর্যন্ত এক কুড়ি টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে খেলা দলের সংখ্যা মোট ২৪। শিরোপা জয়ের পরিসংখ্যানেও আছে চব্বিশের ঝলক। এখন পর্যন্ত চার বা এর বেশি বিশ্বকাপ জিতেছে তিনটি দেশ—ব্রাজিল, ইতালি ও জার্মানি। তিনটি দলই চতুর্থ শিরোপা জিতেছে ২৪ বছর অপেক্ষার পর!