৪৭ বছর বয়সেও খেলে যাচ্ছেন, সাকিবের বিস্ময়

রূপচাঁদা-প্রথম আলো ক্রীড়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাকিব আল হাসান, আজহারুল ইসলাম ও মুশফিকুর রহিম। ছবি: শামসুল হক
রূপচাঁদা-প্রথম আলো ক্রীড়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাকিব আল হাসান, আজহারুল ইসলাম ও মুশফিকুর রহিম। ছবি: শামসুল হক
>আজহারুল ইসলামকে দেখে অবাক সাকিব আল হাসান। অবাক মুশফিকুর রহিমও। ১৯৯৭ সাল থেকে ডিসকাস থ্রোতে টানা জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এই ক্রীড়াবিদকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এই দুই তারকাও। রূপচাঁদা-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে যৌথভাবে বর্ষসেরা রানার্সআপ তিনি।

চাকতি নিক্ষেপ খেলাটা বাংলাদেশে খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। এই খেলার এক খেলোয়াড় যে গত ২১ বছর ধরে প্রতিটি জাতীয় আসরেই সোনা জিতে চলেছেন—এমন তথ্য খুব বেশি মানুষের জানার কথা নয়। চাকতি নিক্ষেপের ‘বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন’ আজহারুল ইসলামকে দেখে তাই অবাক সাকিব আল হাসান। রুপচাঁদা-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠানে তাই তাঁর অবাক প্রশ্ন—‘ভাই আপনার বয়স কত?’

সাকিব পঞ্চমবারের মতো হয়েছেন বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে যৌথভাবে রানার্সআপ হয়েছেন আজহার। পুরস্কারের মঞ্চেই সাকিব-মুশফিকের আগ্রহ চাকতি নিক্ষেপের এই ক্রীড়াবিদকে নিয়ে। আজহার নিজেই জানালেন, আরও পাঁচ বছর খেলা চালিয়ে যেতে চান শুনে সাকিব অবাক হয়ে বলেছেন, ‘আরে ভাই বলেন কি!’

আজহারের অর্জন কিন্তু অনন্যই। সাকিব-মুশফিকরা তো অবাক হবেনই। সেই ১৯৯৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চাকতি নিক্ষেপে প্রায় প্রতিটি আসরেই টানা সোনা জয় করে যাচ্ছেন আজহারুল। গত ডিসেম্বরে সর্বশেষ জাতীয় অ্যাথলেটিকসে গড়েছেন রেকর্ড। ২০০৬ সালে নিজেরই গড়া রেকর্ড ৪৪.০৬ মিটার ডিঙিয়ে গড়েছেন ৪৪.৩৭ মিটারের মাইলফলক।

নিজের অর্জনের দিনে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এসেছিলেন স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। নিজের অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত, ‘আমি জানতাম না এত বড় পুরস্কার আমি পাব। আমার জীবনের এটা সেরা পুরস্কার। সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমদের সঙ্গে এক মঞ্চে উঠে পুরস্কার নিলাম। আজ মনে হচ্ছে জীবনে কিছু একটা করেছি।’

কেবল মঞ্চেই নয়, দর্শকসারিতে গিয়েও আজহারকে ছাড়লেন না বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। আজহার বললেন, ‘আমার বয়স আর এই বয়সেও আমি খেলা চালিয়ে যাচ্ছি—এটাই সাকিবকে অবাক করেছে। তিনি বারবার জানতে চাচ্ছিলেন আমার ফিটনেসের রহস্য।’

জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা যাঁর কাছে ডালভাত। তিনি চান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে একটি সোনার পদক এনে দিতে। ২০১০ এসএ গেমসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। একটু চেষ্টা করলে সোনা জিততেও পারবেন। কিন্তু একটি জায়গায় তিনি জয়ী বিশাল ব্যবধানেই। বয়সকে তুচ্ছ করতে পেরেছেন খেলাটার প্রতি তীব্র আবেগকে সঙ্গী করে। যে আবেগ ছুঁয়ে গেছে সাকিব-মুশফিকদেরও।
আজহারুলকে সম্পর্কে আরও মজার গল্প জানতে