জিয়ানের যে রেকর্ড আর কারও নেই

২০১০ বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের পর হতাশ জিয়ান। ছবি: রয়টার্স
২০১০ বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের পর হতাশ জিয়ান। ছবি: রয়টার্স
>বিশ্বকাপ, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের পর্দা ওঠার আর মাত্র ২ দিন বাকি। দুরু দুরু বুকে ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছেন নিশ্চয়ই। শুরু হয়েছে প্রথম আলো অনলাইনেরও ‘কাউন্টডাউন’। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে ক্ষণগণনা নিয়ে একটি বিশেষ রচনা থাকছে। আজ থাকছে ‘২’ সংখ্যাটি নিয়ে

বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার জন্য অনেকেই অনেক কিছু করে। লক্ষ্য থাকে বিশ্ব মঞ্চে ভালোকিছু করে দেখানোর। সেদিক থেকে সৌদি আরবকে একটু বেশি উদ্যোগী মনে হতেই পারে। বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হওয়ার পরেও তারা দুবার কোচকে ছাড়পত্র ধরিয়ে দিয়েছে।

কোচের কথা উঠলে চলে আসে ভিক্টোরিও পোজ্জোর কথা। তিরিশের দশকে দুবার ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে ইতালিকে বিশ্বজয়ী করেছিলেন ভিক্টোরিও পোজ্জো। জুলে রিমে ট্রফি ইতালির উঁচিয়ে ধরার পেছনের কারিগর ছিলেন এই ইতালিয়ান। ১৯৩৪ বিশ্বজয়ী দলের সদস্য ছিলেন লুই মন্টি। তিনি এক অনন্য রেকর্ডের ভাগীদার। বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলা যেখানে অনেকের স্বপ্ন মন্টি সেখানে ১৯৩০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ১৯৩৪ বিশ্বকাপ ইতালির হয়ে খেলেছেন। আলাদা দুই দেশের হয়ে টানা দুটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা একমাত্র খেলোয়াড় এই মন্টি।

ইতালি ছাড়াও টানা দুবার বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড আছে ব্রাজিলের। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ টানা দুই বিশ্বকাপে জয় করেছিল ব্রাজিল। টানা দুই বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ এবার আছে জার্মানিরও। ভিক্টোরিও পোজ্জোর রেকর্ডে ভাগ বসানোর সুযোগ পাচ্ছেন জোয়াকিম লো। জার্মানি অবশ্য আরেক রেকর্ডের ভাগীদার। টানা দুবার ২০০৬ ও ২০১০ সালে তৃতীয় স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছে জার্মানি।

১৯৯০ বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ পেনাল্টিতে জয় করেছিল আর্জেন্টিনা। পেনাল্টির কথা এলে আসামোয়াহ জিয়ানের কথা আসতেই হবে। ২০১০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে সুয়ারেজের সেই ‘হ্যান্ডবল’ মনে আছে? সেই অপরাধে পেনাল্টি হজম করেছিল উরুগুয়ে। কিন্তু ঘানার হয়ে সেই পেনাল্টি মিস করেছিলেন জিয়ান। তিনি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ দুটি পেনাল্টি মিস করেছেন। ২০০৬ বিশ্বকাপে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষেও পেনাল্টি মিস এই স্ট্রাইকার। জিয়ানের এই রেকর্ড কারও নেই। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ দুই পেনাল্টি ‘সেভ’ করার নজির আছে জ্যান টমাসোজস্কি ও ব্র্যাড ফিডেলের। পোল্যান্ডের টমাসোজস্কি ১৯৭৪ বিশ্বকাপে, আর ব্র্যাড ফিডেল ২০০২ বিশ্বকাপে।

বিশ্বকাপের মঞ্চে হ্যাটট্রিক করা অনেক বড় ঘটনা। সেখানে টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড আছে ১৯৫৪ বিশ্বকাপে ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’ খ্যাত হাঙ্গেরির ফরোয়ার্ড স্যান্দর ককসিচ ও ১৯৭০ বিশ্বকাপে জার্মানির গার্ড মুলারের। বিশ্বমঞ্চে লাল কার্ডের ঘটনাও খুব একটা পুরোনো নয়। দুই বিশ্বকাপে লাল কার্ড পাওয়ার ঘটনা রয়েছে রিগোবার্ট সং ও জিনেদিন জিদানের। ক্যামেরুনের সং ১৯৯৪ ও ১৯৯৮, পরপর দুই বিশ্বকাপে লাল কার্ড দেখলেও জিদান দেখেছেন ১৯৯৮ ও ২০০৬ বিশ্বকাপে। ফাইনাল ম্যাচে এক দলের সর্বোচ্চ লাল কার্ড পাওয়ার ঘটনা আর্জেন্টিনার। ১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার দুই খেলোয়াড় পেদ্রো মোঞ্জ ও গুস্তাভো দেজোত্তি লাল কার্ড দেখেছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনালে।

‘আক্রমণ জেতায় ম্যাচ, আর রক্ষণ জেতায় কাপ’—কথাটা সর্বকালের অন্যতম সেরা কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের। এই নীতি মেনেই বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম গোল খেয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্স, ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালি ও ২০১০ বিশ্বকাপে স্পেন। তিনটি দলই দুটি করে গোল হজম করেছে।

আর সবাই তো জানেই, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সেরা দুটি দল দুটি করে বিশ্বকাপ জিতেছে—আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে।