বিশ্বকাপ তবে এসেই গেল!

রাশিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: এএফপি
রাশিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: এএফপি

রোনালদো হাজির! এক বালকের হাত ধরে রোনালদো মাঠে ঢুকতেই ক্যামেরা খুঁজে নিল রবি উইলিয়ামসকে। তাঁর হাতে বুম, বোঝাই যাচ্ছিল ‘ধর তক্তা, মার পেরেক’ পদ্ধতিতে গান দিয়েই শুরু হচ্ছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তো রাশিয়াতে ফুটবলের শ্রেষ্ঠ মঞ্চে সবাইকে কোন গান গেয়ে আহ্বান জানালেন রবি? সেটা বুঝতে একটু সময় লাগল।

বিবিসির ধারা বিবরণীতেও মজা করা হলো, কোন গান গাইছেন রবি উইলিয়ামস সেটা একটু জেনে নিচ্ছেন। ইংলিশ গায়ককে নিয়ে তাদেরই ওয়েবসাইটের এমন মন্তব্যের পর বিশ্বের বাকি দর্শকদের অবস্থা বুঝে নেওয়া যাচ্ছে। একটু পরেই জানা গেল গানের নাম ‘লেট মি এন্টারটেইন ইউ’! তবে বিনোদিত হওয়ার এমন আহ্বানেও অতটা বিনোদন পাওয়া গেল না।

রাশিয়ান শিল্পী আইদা গ্যারিফুল্লিনা এসে অপেরার সুর জাগিয়ে একটু জাগালেন বটে। তবে সেটা তাঁর গান দিয়ে নয়, ড্রাগন কিংবা প্রজাপতিসদৃশ এক বাহন দিয়ে! পরে জানা গেল ড্রাগন কিংবা প্রজাপতি নয়, সেটা এক আগুন পাখি।

আগুন পাখির এমন আবির্ভাবেই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণে। অনুষ্ঠান একটু প্রাণ পেল। দুজন মিলে অ্যাঞ্জেলস শুনিয়ে দর্শকদের মাথা দোলানোর সুযোগ দিলেন। সেটা কোমর দোলানোতে রূপ নিল, ডিজে দায়িত্ব বুঝে নিতেই। উইলিয়ামসের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আর ডিজের সুরে সবাই যখন গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠার তালে, ঠিক তখনই দুহাত তুলে ফেললেন রবি উইলিয়ামস। বুঝে নিতে হলো ১২ মিনিটের মধ্যেই সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে!

একটা বিরতি দিয়ে অবশ্য আবার শুরু হলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন এবারের বিশ্বকাপ, ‘আমাদের দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পেরে আমরা আসলেই আনন্দিত। এখানে সবাই ফুটবল ভালোবাসে। রাশিয়া একটি উন্মুক্ত, বন্ধুবৎসল দেশ। যার যে ঐতিহ্যই থাকুক, ফুটবল সবাইকে এক দলে নিয়ে আসে। এত চমৎকার ও রোমাঞ্চকর খেলার প্রতি আবেগই আমাদের একত্রিত করে। আমি সব দলের সাফল্য কামনা করছি। সমর্থকেরা যেন স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত পান, সে আশা করছি। রাশিয়ায় স্বাগতম সবাইকে।’

এরপরই সবাইকে ফুটবলের সেরা মঞ্চে স্বাগতম জানিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। ইনফান্তিনোর মুখে রাশান ও আরবি শোনাটাই ছিল এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সেরা চমক!

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলো একেবারে সাদামাটা। যতটুকু না হলেই নয়। ব্রাজিল বিশ্বকাপের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন এখনো চোখে লেগে থাকলে, বড় ফ্যাকাশে লেগেছে হয়তো। কিংবা কে জানে, রং ছড়ানোর জন্য মাঠের ফুটবলটাকেই মঞ্চ ছেড়ে দিতে চেয়েছে রাশিয়া!