স্পেন বেঁচে রইল কস্তায়

কাজানে দুই দল মাঠে নেমেছে একই ছক কষে, ৪-১-৪-১। স্পেন ঠিক আছে। ইরানের বেলায় সেটি শুধু কাগজে-কলমেই রইল। কার্লোস কুইরোজের পরিকল্পনায় যে শুধু অতিরক্ষণাত্মক কৌশল ছিল, সেটি তো বোঝাই গেল। ইরানের রক্ষণ সামলানোর দায়িত্বে থাকলেন নয়জন! জার্সির রং লাল হওয়ায় ইরানের ডি-বক্স কখনো কখনো মনে হলো ‘লাল দুর্গ’! এই দুর্গ ভাঙলেন ডিয়েগো কস্তা। তাঁর গোলটাই শেষ পর্যন্ত ১–০ গোলে জিতিয়েছে স্পেনকে।

ম্যাচ ড্র করতে পারলে ইরানের পয়েন্ট হতো ৪, স্পেনের ২। ইরানের তখন দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার আশা অনেকটাই উজ্জ্বল হতো। বিপরীত দশা হতো স্পেনের। স্প্যানিশদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক খেলে পারা যাবে না। আর ড্র করলেই যেখানে সমীকরণটা সহজ হয়ে যায়, সেখানে ইরানের রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নেওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। তাতে কাজও হচ্ছিল। প্রথমার্ধে ভালোভাবে আটকে রাখা গেল স্পেনকে। স্পেন যত আক্রমণই রচনা করুক, সেগুলো কোনোটিই ইরানের রক্ষণভাগ ভাঙতে পারেনি।

৫৪ মিনিটে ভাঙল ইরানের প্রাচীর। স্পেনের প্রয়োজনে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার ছোঁয়া না থাকলে যেন হয় না! আজও ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালের নায়ককে লাগল। ইনিয়েস্তার পাসে কস্তার ফিনিশিং। টুর্নামেন্টে এটি তাঁর তৃতীয় গোল। অবশ্য স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ভাগ্যের ছোঁয়াও পেলেন। ইরানের ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন। সেটি তো হয়নি, উল্টো কস্তার পায়ে বল লেগে ঢুকে পড়ল জালে। এগিয়ে যায় স্পেন। এই অগ্রগামিতা স্পেন ধরে রাখল ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। 

কস্তার গোলে জিতেছে স্পেন। ছবি: রয়টার্স
কস্তার গোলে জিতেছে স্পেন। ছবি: রয়টার্স

স্পেন যদি ভাগ্যের ছোঁয়া পেয়ে থাকে, বিপরীত ছবি ইরান দলে। স্পেনের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত ইরান দারুণ এক সুযোগ পেল ৪৯ মিনিটে। ইরানি ফরোয়ার্ড করিম আনসারিফার্দের জোরালো শটটা হলো ‘সাইড নেটিং’। ম্যাচে ইরানের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটা (হতাশার মুহূর্তও কি নয়?) এল ৬২ মিনিটে। স্পেনের জালে বল পাঠিয়ে ইরান যখন আনন্দে মত্ত, রেফারি তখন শরণ নিয়েছেন ভিএআরের। অফসাইড! ছোট্ট একটা নাটকের মঞ্চায়ন তখন। ভিএআরে দেখা গেল, সাইদ এজতোলাহি অফসাইড! পুরো আনন্দ মুহূর্তেই মাটি! হৃদয়ভাঙা এই দৃশ্যের পর ইরান প্রাণপণ চেষ্টা করল গোল শোধে। গোলটা হজমের পরই যেন একটু জেগে উঠল ইরান। স্পেনের রক্ষণ কাঁপিয়ে তুলল বেশ কবার। ৭৫ ও ৮৮ মিনিটে দুবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি কুইরোজের দল।

এই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে স্পেন উঠে গেল গ্রুপের শীর্ষে। সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রোনালদোর পর্তুগাল।