শেষ ষোলোয় ব্রাজিল-জার্মানি মুখোমুখি?

ওজিলকে কুর্নিশ নয়, ৭-১ গোলে হারের ব্যথায় কাতর লুইজ। গত বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনাল। ছবি: টুইটার
ওজিলকে কুর্নিশ নয়, ৭-১ গোলে হারের ব্যথায় কাতর লুইজ। গত বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনাল। ছবি: টুইটার
>

‘ই’ ও ‘এফ’ গ্রুপের লড়াই যে পথে এগোচ্ছে, তাতে শেষ ষোলোয় দেখা হয়ে যেতে পারে জার্মানি ও ব্রাজিলের।

এখনো কিছুই নিশ্চিত নয়। কিন্তু ব্রাজিল ও জার্মানির পথ ও সমীকরণ বলছে শেষ ষোলোয় তাঁরা মিলবে একই বিন্দুতে।

তবে সেই বিন্দুটা মোটেও মিল-মহব্বতের নয়। বরং ভীষণ কঠিন এক লড়াইয়ের মঞ্চ। যেখানে ব্রাজিল পাবে গত বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে দুঃসহ সেই হারের স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ। আর জার্মানি? ব্রাজিলিয়ানদের ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’ দেওয়ার চেষ্টাই থাকবে জোয়াকিম লোর শিষ্যদের। যদিও এখনো কোনো কিছু ঠিক নয়। কিন্তু বিশ্বকাপ-পথের ইঙ্গিতটা সেরকমই—শেষ ষোলোতেই দেখা যেতে পারে সেই চিরায়ত লড়াই। ব্রাজিলের মুখোমুখি জার্মানি!

কীভাবে? সেই অঙ্ক কষার আগে এটা বলে নেওয়া ভালো শেষ ষোলোয় ব্রাজিল-জার্মানি লড়াইয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে এই সমীকরণ—‘ই’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলের মুখোমুখি হবে ‘এফ’ গ্রুপের রানার্সআপ দল।

২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে জার্মানি এখন ‘এফ’ গ্রুপে দ্বিতীয়। তাঁদের সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মেক্সিকো। শেষ ম্যাচে জার্মানির প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া এবং ধরেই নেওয়া যায় এই ম্যাচটা জিতবে লোর শিষ্যরাই। অন্তত দুই দলের শক্তির বিচারে ধারণাটুকু করাই যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জার্মানদের জয় আর মেক্সিকো তাঁদের শেষ ম্যাচে যদি সুইডেনকে হারাতে পারে, তাহলেই ‘এফ’গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে মেক্সিকো আর রানার্স আপ জার্মানি। সে ক্ষেত্রে সুইডিশদের সঙ্গে মেক্সিকোর ড্র করলেও চলবে। কারণ তখন মেক্সিকোর পয়েন্ট হবে ৭ আর জার্মানির ৬ (দ.কোরিয়ার বিপক্ষে জয় ধরে নিয়ে)।

এবার আসা যাক ‘ই’ গ্রুপের সমীকরণে। যেখানে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ব্রাজিল। সুইজারল্যান্ডের সংগ্রহও তাঁদের সমান ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট। সুইসদের (‍+১) সঙ্গে ব্রাজিল (‍+২) এগিয়ে গোল ব্যবধানে। এই গ্রুপের শেষ দুটি ম্যাচে ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে সার্বিয়া ও কোস্টারিকা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে ব্রাজিলকে তাঁদের শেষ ম্যাচটা জিততে হবে। ঝামেলা হলো, সুইসরাও তাঁদের শেষ ম্যাচটা জিতলে ব্রাজিল ও তাঁদের পয়েন্ট সমান হবে। সে ক্ষেত্রে ব্রাজিল গোলব্যবধানে সুইসদের চেয়ে এগিয়ে থাকলে তাঁরাই হবে ‘ই’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।

ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড তাঁদের শেষ ম্যাচে ড্র করলেও সমীকরণটা মিলবে। সে ক্ষেত্রে গোলব্যবধানে সুইসদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে তিতের শিষ্যদের। তখন কিন্তু ব্রাজিলিয়ানদের মনে জেগে উঠবে সেই ক্ষত—‘মিনেইরাজো’ বিপর্যয়। অবশ্য জেগে ওঠা কেন? ব্রাজিলিয়ানদের মনে ক্ষতটা তো জীবন্ত। জার্মানির কাছে সেমিতে ৭-১ গোলের হার তো ভুলে যাওয়ার স্কোরলাইন নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তিতের ব্রাজিল এতসব সমীকরণ মিলিয়ে কি শেষ ষোলোয় প্রতিশোধের মঞ্চ বানাতে পারবে?

সার্বিয়ার কিন্তু কোস্টারিকা নয়। সুইজারল্যান্ডের মতো কিংবা তাঁদের চেয়েও শক্ত দল।