ব্যাটিং বোলিং যা-ই করি চাই ভালো শুরু, বললেন সাকিব

>
দ্বিতীয় টেস্টের আগে ব্যাটিং অনুশীলনে সাকিব। ছবি: এএফপি
দ্বিতীয় টেস্টের আগে ব্যাটিং অনুশীলনে সাকিব। ছবি: এএফপি

স্যাবাইনা পার্কে আজ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ নিয়ে দলের কাছে নিজের প্রত্যাশা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান

অ্যান্টিগা টেস্টে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ভয়াবহ। ধ্বংসস্তূপ বললেও যেন কম বলা হয়! ৪৩ রানেই অলআউট। শুরুটা এমন হলে যেকোনো দলই লড়াইয়ে যোজন–যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরের ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর কাজটা তাই অনেক কঠিন হয়ে যায়। বাংলাদেশ যে দ্বিতীয় ইনিংসে সেই কাজটি করেছে তা নয়। আসলে প্রথম ইনিংসের ওই মড়ক থেকে ব্যাটসম্যানরা বেরিয়ে আসতে পারেননি। কিংস্টনে দ্বিতীয় টেস্টের তাই ভালো শুরুতে ভীষণ গুরুত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। সাকিবদের জন্য এই ম্যাচ যতটা সিরিজ বাঁচানোর লড়াই, নিজেদের ফিরে পাওয়ার লড়াই তার চেয়েও বেশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা যে প্রথম টেস্টে তামিম-সাকিব-মুশফিকদের নিয়ে স্রেফ ছেলেখেলা করেছে! সেটি ফিরিয়ে দেওয়া না হোক অন্তত নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে তাঁদের। সে জন্য প্রথম দিনে আগে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যা–ই হোক না কেন, ভালো শুরুতে গুরুত্ব দিচ্ছেন সাকিব।

কিংস্টনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কীভাবে শুরু করি, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে ব্যাটিং করি আর বোলিং করা সেটি বিষয় না, খুব ভালো শুরু করাটা ভীষণ প্রয়োজনীয়। এরপর সেই ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে হবে। যেহেতু পাঁচ দিনের ম্যাচ, তাই বেশির ভাগ সেশন জয়ের চেষ্টাটা নিশ্চিত করতে হবে।’

অ্যান্টিগা টেস্টের আড়াই দিনে বাংলাদেশ কোনো সেশনেই স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। প্রথম ইনিংসে তো ২০ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করেছে ১৩৭.৩ ওভার। এরপর আবারও ব্যাটিংয়ে নেমে ‘যেই লাউ সেই কদু’—৫০ রান তুলতেই নেই ৬ উইকেট। এখান থেকে স্কোরটা যে ১০০ পার হয়েছে, সেটিও প্রথম ইনিংস বিচারে কম প্রাপ্তি নয়!

প্রথম টেস্টে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সাকিব ভীষণ হতাশ। সোজাসাপটা স্বীকার করেছেন, দলের কেউ নিজের সামর্থ্য কিংবা মানদণ্ড অনুযায়ী খেলতে পারেনি, ‘অবশ্যই ভীষণ হতাশ। আমরা জানতাম, ম্যাচটা কঠিন হবে। কিন্তু আমরা যেভাবে খেলেছি, সেটা আসলে গড়পড়তাও নয়। স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে পারিনি। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’ সেই লক্ষ্যে সাকিব কিন্তু আশার বাণীও শুনিয়েছেন। প্রথম টেস্টে জঘন্য খেললেও দলের সবাই ‘এখন আত্মবিশ্বাসী। এটা নতুন একটা ম্যাচ। সবাই ভালো করতে মুখিয়ে আছে।’

স্যাবাইনা পার্কের উইকেট এমনিতেই পেসবান্ধব। এখানকার বাইশ গজ নিয়ে অধিনায়কের কথা শুনলে দলের ব্যাটসম্যানদের শঙ্কা বাড়তে পারে। অ্যান্টিগার তুলনায় স্যাবাইনা পার্কে বেশি পেস আর বাউন্স আশা করছেন সাকিব। তাঁর নিজের ভাবনামতে, স্যাবাইনা পার্কে ধারাবাহিক উচ্চতা ও পেসে ব্যাটে আসবে বল। ‘ট্রু উইকেট’ বলতে যা বোঝায় আরকি। সাকিবের ভাষ্য, ‘এই উইকেটে নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে সাফল্য আসবেই। আগে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যা–ই করি না কেন, যত দ্রুত সম্ভব উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’

সেটি করতে পারলেই ভালো। নইলে স্যাবাইনা পার্কে ফিরে আসতে পারে অ্যান্টিগা? কে জানে! প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ যেমন খেলেছে, তাতে সমর্থকদের মনে ভয়টা ঢুকে যাওয়া অমূলক কিছু নয়।