নয় হবে না পাঁচ হবে ক্রোয়েশিয়া?

>
ফাইনালে ওঠার পর ক্রোয়াট খেলোয়াড়দের উল্লাস। তাঁদের সামনে এবার ট্রফি জয়ের চ্যালেঞ্জ। ছবি: এএফপি
ফাইনালে ওঠার পর ক্রোয়াট খেলোয়াড়দের উল্লাস। তাঁদের সামনে এবার ট্রফি জয়ের চ্যালেঞ্জ। ছবি: এএফপি

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। ট্রফি জিতলে তাঁরা নবম দল হিসেবে নাম লেখাবে বিশ্বকাপজয়ী দেশগুলোর কাতারে। আর জিততে না পারলে? পঞ্চম দল হিসেবে তাঁরা যোগ দেবে আগের চারটি দেশের দীর্ঘশ্বাসের কাতারে

হাঙ্গেরি, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র ও হল্যান্ড। ক্রোয়েশিয়া কি পঞ্চম দল হিসেবে যোগ দেবে এই চার দীর্ঘশ্বাসের কাতারে? নাকি নতুন পাতা জুড়বে আগের আট দলের আনন্দ কাব্যে? জবাবটা জানতে হলে অপেক্ষা করুন রোববার পর্যন্ত, সেদিন যে বিশ্বকাপের ফাইনাল!

দীর্ঘশ্বাস? তা বটে। ১৯৩৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল সাবেক চেকোস্লোভাকিয়া (বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্র)। কিন্তু ইতালির কাছে হেরে বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়ে দেখা হয়নি মধ্য ইউরোপের দেশটির। ২৮ বছর পর আরেকবার ফাইনালে উঠেও পারেনি তারা। হারতে হয়েছিল গারিঞ্চা-ভাভাদের ব্রাজিলের কাছে। হাঙ্গেরির খেরোখাতায়ও একই পোড়া দাগ। ১৯৩৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালির কাছে হারের ১৬ বছর ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল নিয়ে ফাইনালে উঠেছিল হাঙ্গেরি। সেই যে ফেরেঙ্ক পুসকাস, ন্যান্দর হিদেকুটি আর স্যান্দর ককসিসরা। কিন্তু হাঙ্গেরির ভাগ্য পাল্টায়নি। তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি (বর্তমানে শুধু জার্মানি) তা হতে দেয়নি।

একই কথা খাটে হল্যান্ডের ক্ষেত্রেও। ডাচরা এবার বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে না থাকলেও তাদের খাটো চোখে দেখার উপায় নেই। বিশ্বকাপের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা একটি দল উপহার দিয়েছে ‘টোটাল ফুটবল’-এর জনকেরা। সেটা ১৯৭৪ বিশ্বকাপে ; ইয়োহান ক্রুয়েফ, অঁরি হান, নেসকেন্সরা ফাইনালে উঠলেও হারতে হয় পশ্চিম জার্মানির কাছে। পরের টুর্নামেন্টেও ফাইনালে উঠেছিল ডাচরা। কিন্তু ভাগ্যে শিকে ছেড়েনি। ৩২ বছর পর ২০১০ টুর্নামেন্টে রোবেন-স্নেইডারেরা আবারও ফাইনালে উঠলেও বদলায়নি ডাচদের ভাগ্য। যেমনটা পারেনি সুইডেনও। ঘরের মাঠে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে তাদের হারতে হয়েছে পেলে-গারিঞ্চাদের কাছে।

রোববারের ফাইনালে তাহলে কী হবে? ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে না পারা এই চার দলের সঙ্গে কি ক্রোয়েশিয়ার নামও যোগ হবে? প্রতিপক্ষ যেহেতু ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী দল। তাই সম্ভাবনা থাকলেও শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত তা বলা কঠিন। আবার উল্টোটাও ঘটতে পারে।

বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে এ পর্যন্ত ট্রফির দেখা পেয়েছে এই ব্যর্থ ‘চতুষ্টয়’-এর দ্বিগুণসংখ্যক দল, মানে আটটি দল—ব্রাজিল, জার্মানি, ইতালি, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, ফ্রান্স, স্পেন ও ইংল্যান্ড। নবম দল হিসেবে এই তালিকায় নাম লেখাতে ফাইনালে মদরিচ-রাকিতিচদের কিন্তু নিজেকে নিংড়ে দিতে হবে। তাঁরা যে সে কাজটি করতে প্রস্তুত, তা বলাই বাহুল্য। বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ তো আর সব সময় আসে না!