মেসির ইশারাতেই চলেছে আর্জেন্টিনা?

বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে কেন সাফল্য পান না, সেই গল্পটা খুব শ্রুতিমধুর নয়। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে কেন সাফল্য পান না, সেই গল্পটা খুব শ্রুতিমধুর নয়। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বকাপের আগেই এবার আর্জেন্টিনা হেরে গেছে—এমনটা বললে খুব বেশি কি বলা হবে? সেরা খেলোয়াড়দের সাইড বেঞ্চে রেখে, একই ভুলের পুনরাবৃত্তিই যে করতে যাচ্ছেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি, সেটি জানাই ছিল ফুটবল-ভক্তদের। তবে দলের এমন উদ্ভট সিদ্ধান্তে সব দোষ যে কোচের নয়, সেই ধারণা ভাঙতে শুরু করেছে


কোনো এলাকার সব নিয়ন্ত্রণ একজনের হাতে কিন্তু এর লিখিত বা চাক্ষুষ কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ তাঁর আঙুলের ইশারায় নির্ধারিত হয় কী হবে না হবে। আর্জেন্টিনা দলেও এমন একজন আছেন। দলের কোচের ওপরও তাঁর কথা অনেক সময় গুরুত্ব পায়। নাম না বললেও হয়তো ধরতে পারছেন, তিনি কে!

রাশিয়া বিশ্বকাপটা বেশ অস্থির গেছে আর্জেন্টিনার। দল গোছাতে কোচ সাম্পাওলির ব্যর্থতা, দল নির্বাচনে ভুল—সব মিলিয়ে খুব বেশি কারণ প্রয়োজন হয়নি দলকে ডোবাতে। আলবিসেলেস্তেদের ভরাডুবিতে কোচকেই দায়ী করেছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞ ও ভক্তরা। তবে আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে দলের একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিনায়ক লিওনেল মেসি প্রভাব খাটিয়েছেন। ডিফেন্ডার ফেদেরিকো ফাসিও আর মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসোকে দলে না রাখতে কোচকে সরাসরি বারণ করেছেন মেসি!

স্পেনের সঙ্গে ৬-১-এ হারার পর দলে এমনকি কোচিং স্টাফদের ওপরও প্রভাব বিস্তার করেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। ইতালি ও ফ্রান্সের ম্যাচ সামনে রেখে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে অনুশীলন করে আর্জেন্টিনা। সে সময় কোচ সাম্পাওলির সহকারী একজন কোচ সেবাস্তিয়ান ব্যাচ্চাচেচে মেসিকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। মেসির অনুশীলনে করা ভুল শোধরানোর পরামর্শ দিচ্ছিলেন ব্যাচ্চাচেচে। বিষয়টি পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসির খুব একটা ভালো লাগেনি। কোচ সাম্পাওলিকে জানান, তাঁর সঙ্গে যেন এমন কিছু আর না হয়।

শুধু তা-ই নয়, গত মৌসুমে রোমা আর পিএসজির হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফাসিও আর সেলসোকে একাদশে রাখতে কোচকে নিষেধ করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। অনুশীলনে নাকি ‘ফুটবল টেনিসে’ সেলসো হারিয়ে দিয়েছিলেন মেসিকে। আর্জেন্টিনার একটি গণমাধ্যম দাবি তুলেছে, বিব্রত হওয়ার বিষয়টি ভুলতে পারেননি অধিনায়ক।

শেষ ষোলোতে ফ্রান্সের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে ফাসিও নেমেছিলেন মাঠে। সেলসোর কপালে বিশ্বকাপের এক মিনিটও জোটেনি। এবারের বিশ্বকাপে মাউরো ইকার্দির আর্জেন্টিনা দলে না থাকার পেছনে মেসির দিকেই ইঙ্গিত তোলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, মেসির সঙ্গে বন্ধুত্ব ততটা গাঢ় না হওয়ায় দলে জায়গা হয়নি ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকারের।

সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হতে হয়েছে পাওলো দিবালাকে। মেসির আর দিবালার খেলার ধরন একই হওয়ায় একাদশে জায়গা হয়নি তাঁর। আর্জেন্টিনা গণমাধ্যমের কথা যদি সত্যি হয়, দলকে ডোবাতে কোচ সাম্পাওলির সঙ্গে মেসির অবদানও কম নয়, এমনটা তো ভাবা যেতেই পারে।