বিশ্বকাপের ফাইনালটা আরামেই দেখবেন সাকিবরা

মিরাজ-মুশফিকদের বিষাদগ্রস্ত মুখ। বোলিং কোচ ওয়ালশের মাথা হেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ দলের প্রতীকী ছবি। ছবি: এএফপি
মিরাজ-মুশফিকদের বিষাদগ্রস্ত মুখ। বোলিং কোচ ওয়ালশের মাথা হেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ দলের প্রতীকী ছবি। ছবি: এএফপি
>অ্যান্টিগা টেস্টের মতো কিংস্টনেও নিদারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়ের জন্য টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রসিক সমর্থকদের দাবি, বিশ্বকাপের ফাইনালটা আরামে দেখতেই কাল টেস্টের ফল এনে দিয়েছে বাংলাদেশ

বিশ্বকাপ ফুটবল চলছে বলেই কি এমনটা হচ্ছে? ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যে পারফরম্যান্স, তাতে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রসঙ্গ আসতেই পারে। অ্যান্টিগা, কিংস্টন—দুটি টেস্টেই ব্যাটসম্যানদের যাওয়া-আসার যে মিছিলটা হলো, সেটি বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচ আরাম করে দেখার জন্য কি না, সেই কানাঘুষা কিন্তু চলছে। আজ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলাটা যে সময়, তার সঙ্গে নিজেদের খেলার ‘সংঘর্ষ’ এড়াতেই বাংলাদেশ দল যেন তিন দিনের মধ্যেই হেরে গেল!

এ ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে? বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের আর কী ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে? বিশ্বাস না হলে আগের ঠিক একই রকম একটা ইঙ্গিত পেশ করা যায়। অ্যান্টিগা টেস্টের কথা স্মরণ করুন। সেই টেস্ট শেষ হয়েছে আড়াই দিনে। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে রসিকতার ছলেই বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ এল।

সেটি ছিল অনেকটা এমন, প্রযুক্তির এই যুগে কীভাবে ফিফার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করেই আইসিসি কীভাবে অ্যান্টিগা টেস্টের সময়সূচি ঠিক করল? নইলে টেস্ট শুরুর আর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল শুরুর সময়টা একই হয় কীভাবে? ক্রিকেটারদেরও তো পছন্দের দল আছে! তাঁদেরও তো প্রিয় দলের খেলা দেখতে ইচ্ছে করে!

শেষ আটে ব্রাজিলের ম্যাচটা টেস্টের তৃতীয় দিনে (বাংলাদেশ সময়) রাত ১২টায় শুরু হওয়ায় তা-ও একটু সুযোগ পেয়েছিলেন সাকিব-তামিমরা। কারণ, সেদিনের খেলা শুরুর সময় ছিল রাত ৮টা (বাংলাদেশ সময়)। আমাদের ‘ফুটবলপ্রেমী’ (অনুশীলনেও যেহেতু ফুটবল চলে) ক্রিকেটারেরা তাই ব্রাজিল ম্যাচ শুরুর আগে কীভাবে খেলাটা শেষ করা যায়, তার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন!

বেরসিক শুধু নুরুল হাসান সোহান। তিনি সম্ভবত আর্জেন্টিনার সমর্থক! নইলে, ব্রাজিল-বেলজিয়াম ম্যাচ শুরুর আগেই দলের সিনিয়ররা যখন উইকেট থেকে ফিরেছেন ড্রেসিং রুমে, সোহান তখনো বুক চিতিয়ে লড়েন কীভাবে! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঠিক এসব প্রশ্নই উঠেছে। কাল যেমন ছিল বিশ্বকাপ ফাইনালের আগেই কিংস্টন টেস্ট শেষ করার তোড়জোড়।

সমর্থকদের এই হিসাবটাও বেশ সহজ। জয়ের (!) জন্য ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। খেলাটা চতুর্থ দিনে গড়ালে কী ভজকটই না লেগে যেত। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফাইনাল মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। ঠিক একই সময়ে স্যাবাইনা পার্কে শুরু হতো চতুর্থ দিনের খেলা। টেস্ট লাঞ্চ পর্যন্ত গড়াতে গড়াতে ফাইনালের ‘খেলা ফাইনাল’ হয়ে যেত। সেই ঝুঁকিটা আর নিতে হলো না। স্যাবাইনা পার্কে টেস্ট-গল্পের ‘নটে গাছ’টা কাল তৃতীয় দিনেই মুড়িয়ে দিয়েছেন সাকিবরা।

সমর্থকদের কাছে তাই কিংস্টনেও সাকিবদের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের সমীকরণটা সহজ। বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখা যায় চার বছর পরপর। আর টেস্ট তো বছরে এমনিতেই চার-পাঁচটা খেলা যায়। দু-একটা ম্যাচের বয়সের গলা টিপে ধরলে কিচ্ছুটি যায় আসে না! বিশ্বকাপের ফাইনালটা তাই আরামেই দেখবেন সাকিবরা!