এমন কিং পদবি নুরুল নিশ্চয়ই চাননি!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ইনিংসে গোল্ডেন ডাকে ফেরার অভিজ্ঞতা হলো নুরুলের। ছবি: এএফপি
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ইনিংসে গোল্ডেন ডাকে ফেরার অভিজ্ঞতা হলো নুরুলের। ছবি: এএফপি
জ্যামাইকা টেস্টে পর পর দুই ইনিংসে ‘গোল্ডেন ডাকে’ ফিরে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলে ফেলেছেন নুরুল হাসান। টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পেলেন ‘কিং পেয়ার’। প্রথমবারের পেয়েছিলেন জাভেদ ওমর


একই দৃশ্য দেখা গেল দুবার। প্রথম ইনিংসে কিমো পলের লাইন মিস করে প্রথম বলেই এলবিডব্লু । দ্বিতীয় ইনিংসেও একই পরিণতি। শুধু বোলার ভিন্ন—পলের জায়গায় হোল্ডার। জ্যামাইকা টেস্টে পর পর দুই ইনিংসে ‘গোল্ডেন ডাকে’ ফিরে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলে ফেলেছেন নুরুল হাসান। টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পেলেন ‘কিং পেয়ার’।

প্রথম বলেই টেস্টের দুই ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার পর এই ‘কিং’ উপাধি কোনো ব্যাটসম্যানই পেতে চান না। না চাইলেও টেস্ট ইতিহাসে ১৯ ব্যাটসম্যানের এ অভিজ্ঞতা হয়েছে, যে তালিকার সর্বশেষ সংযোজন নুরুল। পরপর দুই ইনিংসে এমন ব্যর্থতায় যেন ঢাকা পড়ছে অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ৬৪ রানের সাহসী ইনিংসটা। বাংলাদেশের তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান অবশ্য অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারেন অ্যাডাম গিলক্রিস্টের কাছে। অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তিতুল্য উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানেরও ‘কিং পেয়ার’ পাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। ২০০১ সালের মার্চে লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের মহাকাব্যিক দুই ইনিংসে আলোকিত কলকাতা টেস্টে ‘গিলি’ দুই ইনিংসে প্রথম বলে এলবিডব্লু  হয়েছিলেন। শুধু গিলক্রিস্ট কেন, এ তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে বীরেন্দর শেবাগেরও।

শুরুতে যে বলা হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে নুরুল কিং পেয়ার পেয়েছেন। প্রথম ব্যাটসম্যানটা কে? জাভেদ ওমর। ২০০৭ সালের মে মাসে ঢাকা টেস্টে ভারতের বিপক্ষে কিং পেয়ার পেয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এ ওপেনার। এক টেস্টে দু্ই ইনিংসেই এমন ব্যর্থ হলে একজন ব্যাটসম্যানের কেমন লাগে জাভেদের ভালোই জানা, ‘অবশ্যই খারাপ লাগে। এটা নির্ভর করে ব্যাটসম্যান আগে-পরের ম্যাচে কেমন খেলছে। আমি কিং পেয়ার পাওয়ার আগে ও পরের টেস্টে ফিফটি পেয়েছিলাম। পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। পেশাদার কিংবা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এটা স্বাভাবিকভাবেই দেখে। খুব বড় কোনো বিষয় নয়। আপনি যদি ছন্দ খুঁজে না পান, তবে মানুষের কাছে বড় কিছু মনে হতে পারে। আর যদি ছন্দে থাকেন, ব্যাটসম্যানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। সে ভাবে, পরের ম্যাচে আবার রান পাব।’

জাভেদের অবশ্য ওই টেস্টে তাঁর একটা আউট নিয়ে প্রশ্ন আছে। সাবেক বাংলাদেশ ওপেনারের দাবি, দ্বিতীয় আউটটি হয়েছিলেন আম্পায়ারের ভুলে। পরে ভিডিও দেখে ওই টেস্টের আম্পায়ার ড্যারিল হারপার নাকি জাভেদের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাতে তো আর রেকর্ড বই থেকে নাম মুছে যাবে না। আউট আউটই। ১১ বছর পর এই রেকর্ডে স্বদেশি নুরুলকে সঙ্গী হিসেবে পেলেন জাভেদ।

জাভেদ তাই ভালোভাবেই অনুভব করছেন নুরুলের ব্যথাটা, ‘নুরুল কিংবা যে–ই হোক, এখান থেকে বের হতে একটু বাড়তি অনুশীলন দরকার। আমার ওই সময় তেমন খারাপ লাগেনি, এখন একটু খারাপ লাগে। অনেক ব্যাটসম্যানের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। যখন ছন্দ থাকবেন না, তখন বেশ মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নুরুলকে মনে করতে হবে, এটা হতেই পারে, ব্যাপার না। পরের সিরিজে আবার রান করে এটা পুষিয়ে দিতে হবে।’

সেই পরের সিরিজটা নুরুল কবে পান কে জানে! এরই মধ্যে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁকে।