মেসি কী বলেছিলেন সাম্পাওলিকে?

নাইজেরিয়া ম্যাচে মেসি ও সাম্পাওলি। দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে এ ম্যাচের আগেই। ছবি: রয়টার্স
নাইজেরিয়া ম্যাচে মেসি ও সাম্পাওলি। দুজনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে এ ম্যাচের আগেই। ছবি: রয়টার্স

আর্জেন্টিনার হোর্হে সাম্পাওলি যুগ শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বকাপের পর একটু দোনোমনা করেও পরে কোপা আমেরিকাজয়ী এই কোচের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে আর্জেন্টিনার ফুটবল ফেডারেশন। তবে সাম্পাওলি যে খুব বেশি দিন আর্জেন্টিনার কোচ থাকতে পারবেন না, সেটা বিশ্বকাপের সময়ই বোঝা গিয়েছিল। দলের মূল তারকা লিওনেল মেসি ও হাভিয়ের মাচেরানোর সঙ্গে যে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে গ্রুপ পর্বেই।

গ্রুপ পর্বে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি আর্জেন্টিনার জন্য বাঁচা–মরার ম্যাচ হয়ে উঠেছিল। সে ম্যাচের আগেই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল, মেসিরা সবাই বিদ্রোহ করেছেন। সাম্পাওলির অধীনে আর খেলবেন না তাঁরা। তখন এমন খবরকে উড়িয়ে দিয়েছিল এএফএ। কিন্তু আর্জেন্টিনার এক সাংবাদিক আরিয়েল সেনোসিয়াইন বলছেন, এমন সব ঘটনার সবই সত্য!

টিওয়াইসি স্পোর্টসের এই সাংবাদিক ও ওলে পত্রিকার কলামিস্ট সেনোসিয়াইন নতুন এক বই প্রকাশ করেছেন। মুন্দিয়াল এস হিস্তোরিয়াস নামের সে বইয়েই বিশ্বকাপের সে টালমাটাল সময়ের কথা উঠে এসেছে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারের পরই মেসি ও মাচেরানো নাকি সাম্পাওলি ও তাঁর স্টাফদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন।

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সে হারে বিশ্বকাপ–স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা খেলোয়াড়েরা সাম্পাওলি ও তাঁর দুই সহকারী সেবাস্তিয়ান বেচ্চাচেচে ও লিওনেল স্কেলোনিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। মিটিংয়ের উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার, সাম্পাওলিকে জানিয়ে দেওয়া, তাঁর ওপর দল আস্থা হারিয়েছে। সাম্পাওলিকে সরাসরি বলা হয়েছিল, ‘আমরা বুঝছি না তুমি কী বলো, তোমার ওপর আমরা আর বিশ্বাস রাখতে পারছি না এবং আমাদেরও কিছু মত আছে।’ বিস্মিত সাম্পাওলি জানতে চেয়েছিলেন, কোন ব্যাপারে মত জানাতে চায় স্কোয়াড। তখন নাকি খেলোয়াড়েরা জানিয়েছেন, সবকিছুতেই!

এরপরই মেসি নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। মাঠে নাকি সাম্পাওলি বারবার মেসির কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছেন, ‘তুমি আমাকে দশবার জিজ্ঞেস করেছ, কোন খেলোয়াড়কে আমি মাঠে দেখতে চাই এবং কাকে দেখতে চাই না। আমি কখনোই তোমাকে নাম বলিনি।’ আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ক্লদিও তাপিয়াও এ মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এবং সাম্পাওলিকে পরামর্শ দেন খেলোয়াড়দের দাবি মেনে নিতে।

এমন ঘটনার পর বেচ্চাচেচে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সাম্পাওলিই এতে বাধা দিয়েছেন। মজার ব্যাপার, পরামর্শ চাওয়ায় মেসি খেপেছিলেন ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে। তবু নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সাম্পাওলি একপর্যায়ে মেসিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘কুনকে (আগুয়েরো) নামাব?’