এর পরেও তামিমকে নিয়ে সমালোচনা!

তামিম সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু সেটি কিছুটা শ্লথ গতিতে করাতেই সমালোচনার মুখে তিনি। ছবি: এএফপি
তামিম সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু সেটি কিছুটা শ্লথ গতিতে করাতেই সমালোচনার মুখে তিনি। ছবি: এএফপি
ফিফটি করতে খেলেছেন ৮৭ বল, সেটি সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছেন ১৪৬ বলে। তামিম কেন ধীর গতিতে এগিয়েছেন, সেটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে অনেক প্রশ্ন। দল জেতানো সেঞ্চুরি কিংবা ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েও তামিমের যেন নিস্তার নেই এ প্রশ্ন থেকে। ম্যাচে শেষে তিনি ব্যাখ্যা দিলেন কেন ধীরে এগিয়েছেন


সেঞ্চুরি করেছেন, দল জিতেছে। যে অস্বস্তি ঘিরে ধরেছিল এ জয়ে সেটি কেটেছে। গুমট যে হাওয়া বইছিল ড্রেসিংরুমে সেটা চলে গেছে। মাথার ওপর কালো যে মেঘ জমেছিল, সরে গেছে। এবার ক্যারিবীয় সৌন্দর্য বাংলাদেশ যদি একটু উপভোগ করতে পারেন! কিন্তু জয়ের পরেও তামিম ইকবালের মুখটা যেন একটু গোমড়া দেখাল!

এই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসানও, অসাধারণ বোলিং করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কার তামিমের হাতেই উঠেছে। ম্যাচের নায়ক হলেও ব্যাটিংয়ের সময় তাঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কম সমালোচনা হয়নি।
তামিম ফিফটি করতে খেলেছেন ৮৭ বল, সেটি সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছেন ১৪৬ বলে। শুধু তামিমের কেন, ওয়ানডেতে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে মন্থর সেঞ্চুরি। ‘সেঞ্চুরির জন্য ধীরে খেলেছেন’—এভাবেও অভিযুক্ত করা হয়েছে বাঁ হাতি ওপেনারকে। ম্যাচের আগে ফোন জমা দিয়ে দিতে হয়। ম্যাচের মাঝে এসব দেখার সুযোগ নেই তামিমের । এত আলোচনা-সমালোচনা চোখে পড়লে নির্ঘাত নিজের খেলাটাই ভুলে যেতেন বাংলাদেশ ওপেনার!
কিন্তু কেন ধীর-লয়ে এগিয়েছেন সেটিই ম্যাচের পর নিজেই খোলাসা করলেন তামিম, ‘দ্রুত না কি মন্থর খেলেছি, এসব ভাবনায় ছিল না। প্রথম ১০-১৫ ওভার আমাদের হাতে কিছু ছিল না। টিকে থাকাটাই তখন জরুরি ছিল। ভালো দিক যে, আমরা (তিনি ও সাকিব) আউট হইনি। আমি, সাকিব যখন যেভাবে খেলার দরকার ছিল সেভাবে খেলেছি। এই উইকেটে ২৮০ অনেক ভালো স্কোর। আমার কাছে মন্থর-দ্রুত এসব মাথায় ছিল না। শুধু লম্বা সময় ব্যাটিং করতে চেয়েছি। একবার যখন ভালো শুরু পেয়ে গেয়েছিলাম, চেয়েছি লম্বা সময় থাকতে। আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি।’
মন্থর গতিতে ব্যাটিং করার ‘অপরাধে’ তামিমকে যদি কাঠগড়ায় তোলা হয়, ক্রিস গেইল তো মহা অপরাধ করেছেন! জ্যামাইকার বিস্ফোরক ওপেনার খেলেছেন আরও শ্লথ গতিতে। ৬০ বলে ৪০, স্ট্রাইকরেট ৬৬.৬৬। ক্যারিবীয় ওপেনারের এই ত্রাহি দশা দেখে প্রেস বক্সে গায়ানিজ সাংবাদিকদের অবশ্য বিচলিত হতে দেখা গেল না। উইকেটের যে চরিত্র গেইলের হাঁসফাঁস করারই কথা।
গায়ানার উইকেট কতটা কঠিন ছিল তামিমের কাছেই শুনুন, ‘আজ (কাল) যখন আমরা ব্যাটিংয়ে নামি কাজটা সহজ ছিল না। সাকিব ও আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে ভালো অবস্থানে যেতে। প্রথম ২৫ ওভার খুব কঠিন ছিল। বল ঘুরছিল। আমাদের এটাই পরিকল্পনা ছিল, যতক্ষণ খেলতে পারি। যত এগিয়ে নিতে পারি। আমরা সেটা করতেও পেরেছি। আমরা যে লক্ষ্যটা ঠিক করেছিলাম সেটা পরে আমি আর মুশফিক পার করতে পেরেছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজে আসার আগে দেশে ব্যাটিং নিয়ে বাড়তি কাজ করেছিলেন তামিম। রোজার ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামে পর্যন্ত যাননি। টেস্ট সিরিজে সেটির ফল আসেনি। তবে ওয়ানডে সিরিজের শুরুতেই এসেছে। তামিম এখানে থামতে চান না। ক্যারিবীয়দের সঙ্গে আরও হিসাব যে বাকি!