তামিমের 'সঙ্গী' কেন পাওয়া যাচ্ছে না?

তামিম ছুটছেন, কিন্তু ওপেনিং জুটিতে তাঁর সঙ্গী কি পারছেন তাঁর মতো ছুটতে? ছবি: এএফপি
তামিম ছুটছেন, কিন্তু ওপেনিং জুটিতে তাঁর সঙ্গী কি পারছেন তাঁর মতো ছুটতে? ছবি: এএফপি
>আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ বছর পার করে দেওয়া তামিম ক্রিকেটের তিন সংস্করণে উদ্বোধনী জুটিতে সঙ্গী পেয়েছেন ১৮ জন। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই তাঁর অপর প্রান্তে তিন ‘সঙ্গী’। তামিমের অন্য প্রান্তে এক সফরেই তিন ওপেনার দেখে বোঝা যাচ্ছে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের সেই পুরোনো সমস্যা থেকেই গেছে।

এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের উদাহরণটাই আগে দেওয়া যেতে পারে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে তামিম ইকবাল ওপেন করেছেন তিনজনের সঙ্গে। টেস্ট সিরিজে ওপেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী ছিলেন লিটন দাস, ওয়ানডেতে এনামুল হক। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সৌম্য সরকার আবার শেষ দুটিতে লিটন। এক সফরে তামিমের তিন সঙ্গী দেখেই বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের উদ্বোধনী জুটিতে পুরোনো সমস্যাটা থেকেই গেছে।

২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় দলে অভিষেক তামিমের। আন্তর্জাতিক আঙিনায় যত সময় গড়িয়েছে, নিজের জায়গাটা ততই পোক্ত হয়েছে তাঁর। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। এক প্রান্তে তামিমের ভিত্তি যত শক্ত হয়েছে, তাঁর অপর প্রান্ত ততটাই যেন নড়বড়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ বছর পার করে দেওয়া তামিম ক্রিকেটের তিন সংস্করণে উদ্বোধনী জুটিতে সঙ্গী পেয়েছেন ১৮ জন।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সঙ্গে সৌম্যকে থিতু করতে অনেক চেষ্টাই করা হয়েছে। দুজনের রসায়ন দীর্ঘায়িত হয়নি। তামিমের জমেনি লিটন বা এনামুলের সঙ্গেও। কেন জমেনি, সেটির একটা ব্যাখ্যা আছে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের, ‘বাম-ডানহাতি সমন্বয়টা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সে কত ভালো খেলে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। বাঁহাতি ওপেনার যদি যোগ্য হয় দলে জায়গা পেতে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। দেখতে হবে কে ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। আমাদের জুনিয়ররা খেলছে, কিন্তু ঠিক ধারাবাহিক নয়। ওরা যদি ধারাবাহিক ভালো করতে পারে, তাহলে দলটা অনেক শক্তিশালী হবে। দল এখন সিনিয়রদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। সৌম্য (আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে) রানে ফিরেছে, অনেক দিন পর। সৌম্য-লিটন-বিজয় (এনামুল) যদি ছন্দে ফেরে, সেটি দলের অনেক ভালো হবে।’

দীর্ঘ সময়ে ওপেনিং জুটিতে আরেকজন ‘তামিম’ না পাওয়াটা নিশ্চয়ই হতাশার। এ ব্যর্থতায় আকরাম ঘুরেফিরে তরুণ খেলোয়াড়দেরই কাঠগড়ায় তুললেন, ‘মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) জাতীয় দলে দীর্ঘদিন খেলে যাচ্ছে, এটা অনেক বড় ব্যাপার। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট থেকে তামিম-সাকিবদের যেভাবে দেখেছি, বর্তমান যুব দলের ক্রিকেটারদেরও একই ভাবে দেখছি। সাকিবরা অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের পর যেভাবে উন্নতি করেছে, ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে এগিয়ে গেছে, সেভাবে আমাদের বর্তমান তরুণ খেলোয়াড়েরা এগোচ্ছে না। সাকিব-তামিমদের মানসিকতা যদি তরুণদের মধ্যে চলে আসে, তাহলে দ্রুত আরও ভালো খেলোয়াড় পেয়ে যাব।’

আসন্ন এশিয়া কাপে ভালো করতে আকরাম তাই তরুণ খেলোয়াড়দের জ্বলে ওঠার বিকল্প দেখেন না, ‘তরুণেরা মাঝেমধ্যে ভালো করছে, যেটি দলের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সিনিয়রদের সঙ্গে যদি তরুণেরাও আলো ছড়াতে পারে, তাহলে দল হিসেবে বাংলাদেশ শক্তিশালী হয়ে উঠবে, এশিয়া কাপে ভালো করবে।’