লড়াইয়ের ঝাঁজ মুখে আনলেন না মাশরাফি-রোহিতরা

সংবাদ সম্মেলনে ছয় দলের অধিনায়ক। ছবি: এএফপি
সংবাদ সম্মেলনে ছয় দলের অধিনায়ক। ছবি: এএফপি
>

এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে আজ। তার আগে কাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্যের কথা বললেন অংশ নেওয়া ছয়টি দলের অধিনায়ক।

মাইক্রোফোনটা রোহিত শর্মার হাত থেকে একে একে ঘুরতে লাগল অন্য অধিনায়কদের হাতে। ভারত অধিনায়কের বলা কথাগুলোও কি নয়!

দুবাইয়ে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ। তার আগে কাল সন্ধ্যায় দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এশিয়া কাপে নিজেদের লক্ষ্যের কথাই মূলত বললেন অধিনায়কেরা। দেখা যাচ্ছে, শিরোপায় চোখ রেখে টুর্নামেন্ট শুরু করছেন না কেউই। অথবা মনে থাকলেও সেটি মুখে আনতে চাননি। রোহিত বললেন ম্যাচ ধরে ধরে এগোনোর লক্ষ্যের কথা। সরফরাজ আহমেদ, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, মাশরাফি বিন মুর্তজা, আসগর আফগান, অংশুমান রাঠ—সবাই সেটিই আওড়ে গেলেন এরপর।

‘বেশি দূর চিন্তা না করে আমরা ম্যাচ ধরে ধরেই এগোতে চাই। সব দলের লক্ষ্য নিশ্চয়ই এক—শিরোপা জয়। কাজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক টুর্নামেন্টই হবে আশা করি। দল হিসেবে আমরা দারুণ রোমাঞ্চিত’—রোহিত শর্মা এ কথা বলার পর বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি যেন তাঁর কাছ থেকেই ব্যাটনটা নিলেন, ‘এশিয়া কাপ সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জন্যও তা-ই। আমরা আমাদের প্রস্তুতি পর্বটা ভালোভাবে সেরেছি। আশা করি, মাঠে সেভাবেই খেলতে পারব।’

রোহিত আর মাশরাফির ঠিক মাঝখানে বসেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। তাঁরও প্রত্যাশা, ‘এশিয়া কাপে ভালো ক্রিকেট হবে।’ এশিয়ার সব দলের জন্যই লড়াই করে নিজেদের প্রমাণের ভালো সুযোগ দেখছেন তিনি এখানে।

আফগানিস্তান ও হংকংয়ের জন্য সুযোগ সামর্থ্যের প্রমাণ দেখানোর। হংকংয়ের অধিনায়ক অংশুমান তো জানিয়েও দিলেন লক্ষ্য পূরণে কতটা ক্ষুধার্ত তাঁর দল, ‘এখানে আসতে পেরে আমাদের দলের সবাই খুব রোমাঞ্চিত। আমরা ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। ভালো কিছু করার জন্য সবাই প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত।’ আফগান অধিনায়ক আসগর তাঁর সব কথাই বললেন পশতুতে। দোভাষীর অনুবাদে জানা গেল, এশিয়া কাপে চমক দেখাতে চায় আফগানিস্তানও।

ভারত বড় দল, সংবাদমাধ্যমের বহরটাও নিশ্চিতভাবেই বড় তাদের। সংবাদ সম্মেলনে সে কারণেই কিনা ‘কমন’ প্রশ্নের বাইরেও দু-একটি প্রশ্ন পেলেন রোহিত শর্মা। সেসবের উত্তরেই অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য তুলে ধরতে চাইলেন, ‘আমরা জানি আমাদের কী করতে হবে। ভারতের বাইরে আমরা অনেক সিরিজ জিতেছি। বিশ্বকাপের আগে এটা নিজেদের প্রমাণ করার আরেকটা ভালো সুযোগ।’

এশিয়া কাপ মানেই ভারত-পাকিস্তানের মহারণ। যেটি নিয়ে রোহিত বললেন, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ সব সময়ই রোমাঞ্চকর। তবে সব দলই চাইবে শিরোপা জিততে। কাজেই সব ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

২০১৯ বিশ্বকাপের আগে এশিয়ার দলগুলোর জন্য দল গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগও এই টুর্নামেন্ট। যদিও রোহিত ও সরফরাজ হাতের কাজ নিয়েই ভাবতে চান, এত আগেই বিশ্বকাপের কথা ভাবার কোনো কারণ দেখছেন না তাঁরা। সরফরাজ তো বিশ্বকাপে আগে পাকিস্তানের যত সিরিজ আছে, সবগুলোর বিস্তারিত শুনিয়ে দিলেন। মাশরাফির চিন্তাতেও আপাতত শুধুই এশিয়া কাপ, ‘বিশ্বকাপ এখনো অনেক দূরে। এখনো ১০-১২ মাস আছে। সবাই এখন এই টুর্নামেন্ট নিয়েই ভাবছে।’

সব দলের জন্য আরেকটি ব্যাপারও অভিন্ন এবং সেটি অস্বস্তির। তা হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাতের গরম। অদৃশ্য এই প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইটাও বড় ভূমিকা রাখতে পারে এই এশিয়া কাপে।