'ভারত সুবিধা পাচ্ছে বলে চেঁচামেচি বন্ধ করুন'

মাঠে ও মাঠের বাইরে দাপট দেখাচ্ছে ভারত। ফাইল ছবি
মাঠে ও মাঠের বাইরে দাপট দেখাচ্ছে ভারত। ফাইল ছবি
>ভারত বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেখানে আরব আমিরাতের প্রচণ্ড উত্তাপে দলগুলোকে আবুধাবি-দুবাই যাতায়াত করতে হচ্ছে, ভারত দলকে কখনো এ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। তাদের সব ম্যাচ এক শহরেই

এশিয়া কাপের সূচি নিয়ে তর্কাতর্কি চলছে এখনো। আইসিসির সূচিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ছিল। সে অনুযায়ী দুই গ্রুপের রানার্সআপ ও চ্যাম্পিয়নদের মধ্যকার ম্যাচের ভেন্যুও পরিবর্তিত হতো। কিন্তু এসিসির সূচিতে দেখা গেছে, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ বলে কিছু নেই। বরং এ ওয়ান, এ টু এবং বি ওয়ান, বি টু নামের চারটি বিশেষণ ব্যবহার করা হয়েছে। এবং এ ওয়ান দলের সব ম্যাচই দুবাইয়ে রাখা হয়েছে। এ ওয়ান দল হিসেবে তাই ভারত তাদের সব ম্যাচই খেলছে দুবাইয়ে।

মঙ্গলবার রাতে এ সূচি হাতে পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। ভারত বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেখানে আরব আমিরাতের প্রচণ্ড উত্তাপে সব দলগুলোকে আবুধাবি যেতে হচ্ছে, সেখানে ভারত দলকে কখনো এ ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবে বিসিসিআইয়ের দাবি, এ সূচির কথা আগেই জানানো হয়েছিল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মুম্বাই মিররে বলা হয়েছে, এ সূচি এক রাতে বানানো হয়নি। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আগেই সম্মতি নেওয়া হয়েছে, যা অধিনায়কেরা জানতেন না। অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন, এবারের এশিয়া কাপ ভারতে হওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তানের কারণেই দুবাইয়ে খেলা হচ্ছে। সবাইকেই কিছুটা ছাড় দিতে হচ্ছে।

এবারের এশিয়া কাপ ভারতে হওয়ার কথা ছিল মন্তব্যটি করে ওই কর্মকর্তা হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন, সব স্বাগতিক যেকোনো টুর্নামেন্টে একটু বাড়তি সুবিধা পায়। তা না হলে আর স্বাগতিক হয়ে লাভ কি। কিন্তু স্বাগতিক না হলেও ভারত অনেক সময় বাড়তি সুবিধা পায়। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দুই ভিন্ন দেশে হওয়া গত বিশ্বকাপেও এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল, ভারতকে সবচেয়ে কম বিমান ভ্রমণের ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে। ভারত ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্য বলেই হয়তো এই ব্যাপারগুলো বেশি করে চোখে লাগে।

তবে বিসিসিআইয়ের ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন, শুধু নিজেদের সুবিধার কথা ভেবে নয়, সবকিছু বিবেচনা করেই ভারতের ম্যাচগুলো হচ্ছে একই শহরে। যেখানে ভারতের ম্যাচ থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করা সম্ভব, সেখানেই ম্যাচগুলো রাখা হয়েছে। আর এই আয় করা অর্থ তো এসিসি এশিয়ার উঠতি ক্রিকেট শক্তিগুলোর পেছনেই খরচ করে।

আবুধাবিতে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটা প্রায় দর্শকশূন্য ছিল। আবার দুবাইয়ে পাকিস্তান ও হংকং ম্যাচেও দর্শক ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। তাই দুবাইয়ে ভারতের ম্যাচ দিয়ে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রি ও সর্বোচ্চ আয় নিশ্চিত করতে চাচ্ছে ভারত। বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তার দাবি, আফগানিস্তান ও হংকংয়ের মতো দলের উন্নয়নের জন্য এসিসির অর্থ প্রয়োজন। আর সেটা নিশ্চিত করার জন্যই ভারতের ম্যাচকে দুবাইয়ে রাখা হচ্ছে, ‘এটা তো বোঝাই যায় দুবাইয়েই সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি হয়। আর ভারতের ম্যাচেই সবচেয়ে বেশি আয় করা যায়। এখানে ২৪টি করপোরেট বক্স আছে। মানুষ যা–ই ভাবুক না কেন, টাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তান ও হংকংয়ের মতো দেশের উন্নয়নে না হলে এসিসি কোথায় তহবিল পাবে?’

এসব বক্তব্য তুলে ধরে মুম্বাই মিররের প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে ‘ভারত সুবিধা পাচ্ছে’ বলে যে শোরগোল উঠে দুদিন পরপর, সেটা এবার বন্ধ হওয়া উচিত। অবশ্য এখন পর্যন্ত দর্শক উপস্থিতির যে হার, তাতে টিকিট বিক্রি যদি টুর্নামেন্টে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার শর্ত হয়ে থাকে, বাংলাদেশই এর বড় দাবিদার। বাংলাদেশের দুটি ম্যাচই যে হাউসফুল!