ইমরুলের ডাক নাম কেন 'পটু'

বাবা হওয়ার উদ্‌যাপন দুর্দান্ত এক ইনিংসে করলেন ইমরুল। ছবি: শামসুল হক
বাবা হওয়ার উদ্‌যাপন দুর্দান্ত এক ইনিংসে করলেন ইমরুল। ছবি: শামসুল হক

খেলোয়াড়দের অদ্ভুত কিংবা মজার সব ডাক নাম থাকে। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের কারও কারও আছে। ইমরুল কায়েস যেমন ক্রিকেটাঙ্গনে পরিচিত ‘পটু’ বা ‘পটু ভাই’ নামে। জাতীয় দল থেকে অনেকবার বাদ পড়েছেন, অনেক বার ফিরেছেন। অনেকবার দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ঘুরে দাঁড়াতে পটু বলেই কি তাঁর এমন নাম? আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনেই এক সাংবাদিক প্রশ্নটা করলেন ইমরুলকে।

প্রশ্নের উত্তর দেবেন কী, ইমরুল তো হেসেই বাঁচেন না! হাসিটা ছোঁয়াচে হয়ে ছড়িয়ে পড়ে পুরো সংবাদ সম্মেলন কক্ষেই। হাসি থামিয়ে ইমরুল খোলাসা করেন নামের ইতিবৃত্ত। আসলে ‘পটু’ নামটা ভিক্টোরিয়া ক্লাবের এক অফিশিয়ালের। জাতীয় দলে আসার আগে ইমরুল খেলতেন ভিক্টোরিয়ায়। ক্লাব কর্মকর্তার নাম নিয়ে বেশির ভাগ সময় ইমরুল মজা করতেন সতীর্থ লেগ স্পিনার হ‌ুমায়ূন কবীরের সঙ্গে। একটা সময়ে কীভাবে যে ‘পটু’ নামটা কীভাবে তাঁর পাশে সেঁটে গেছে নিজেও জানেন না, ‘আমি এক খেলোয়াড়কে ডাকতাম এই নামে। পরে এটাই আমার ডাক নাম হয়ে গেছে কীভাবে বুঝলাম না!’

রসিকতা করতে করতে কখন পটু নামটা যোগ হয়েছে তাঁর সঙ্গে, সেটা জানেন না। তবে ইমরুল জানেন, পরিশ্রম করলে সেটি বৃথা যায় না। দুঃসময়ে ধৈর্য ধরতে আর পরিশ্রম করতে পটু বলেই বাংলাদেশ দলে খেলছেন গত ১০টা বছর। কঠোর পরিশ্রম করতে ইমরুল সব সময়ই আদর্শ হিসেবে মানেন তাঁর সতীর্থ মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে, ‘কেউ যদি পরিশ্রম করে আমি বিশ্বাস করি সাফল্য অবশ্যই আসবে। মুশফিককে দেখে অনেক কিছু শিখি। সে কষ্ট করে বলেই আজকের মুশফিকুর রহিম হয়েছে। আমি এটা বিশ্বাস করি পরিশ্রম করলে সেটার ফল পাওয়া যায়।’

কিন্তু বারবার বাদ পড়লে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করা সব সময়ই কঠিন। ইমরুল কোনো মন্ত্রে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করেন সেটিও বললেন, ‘আমার সঙ্গে অনেক খেলোয়াড়ের অভিষেক হয়েছে, যারা এখন দৃশ্যে নেই। লক্ষ্য ঠিক রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করি আমার ক্যারিয়ার এত দ্রুত শেষ হতে পারে না। নিজেকে সে কারণে সব সময় তৈরি রাখি। যেদিন আর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ থাকবে না, নিজেই বলব, ধন্যবাদ।’

আপাতত ইমরুলকে একটা ধন্যবাদ দিতে পারে বাংলাদেশ, আজ ব্যাটিং বিপর্যয়ে দুর্দান্ত একটা সেঞ্চুরি করেছেন। ক্যারিয়ারসেরা ১৪৪ করেছেন। সেঞ্চুরিটা উদ্‌যাপনও করেছেন একটু অন্যভাবে। ব্যাট দোলানোর ভঙ্গিতেই বোঝা গেছে কদিন আগে ঘর আলো করে আসা নতুন অতিথির উদ্দেশে করেছেন এমন উদ্‌যাপন। পরে সংবাদ সম্মেলনেও জানালেন, শিশুপুত্র সোয়াইব বিন কায়েসকে উৎসর্গ করেছেন সেঞ্চুরিটা।

এশিয়া কাপে চাপের মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৭২ রানের পর আজও চাপের মধ্যে সেঞ্চুরি, ইমরুল এবার তাহলে দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলতে পটু হয়ে উঠুন।