অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশি রান করেও হারল ভারত

>শেষ ওভার লাগত ১৩ রান, ভারতের হাতে ৫ উইকেট। আইপিএলে এমন শেষ ওভার অনেকবারই পার করে দিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। কিন্তু এবার...
কোহলি আর তার দলের আজ জয়ের হাসি হাসা হলো না। ছবি: এএফপি
কোহলি আর তার দলের আজ জয়ের হাসি হাসা হলো না। ছবি: এএফপি

হার দিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু করল ভারত। ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে ডিএল পদ্ধতিতে ৪ রানে হেরেছে তারা। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ১৫৮ রানের জবাবে ১৭ ওভার ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৭৪। ৭ উইকেট হারিয়ে তারা সংগ্রহ করে ১৬৯।

বৃষ্টির কারণে ওভার কমে পরিণত হয়েছিল ১৭ ওভারের ম্যাচে। শেষ ওভার পর্যন্তও বোঝা যাচ্ছিল না জিততে যাচ্ছে ভারত না অস্ট্রেলিয়া। শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান, হাতে ৫ উইকেট। সহজ নয়, আবার খুব কঠিন কিছুও নয়। মার্কাস স্টয়নিসের শেষ ওভারে রান উঠল মাত্র ৮। খুব কাছে এসেও তাই জয় পাওয়া হলো না ভারতের। শেষ ওভারের প্রথম চার বল থেকে ভারত তুলতেই পেরেছে মাত্র ২ রান, হারিয়েছে ২ উইকেট। ওখানে ম্যাচটা হেরে গেছে তারা। শেষ দুই বলে ৬ রান তুলেও তাই লাভ হয়নি।

শুরুর দিকটা বেশ ভালোই ছিল বিরাট কোহলির দলের। ১০ ওভার শেষে তাঁদের রান ছিল ২ উইকেটে ৯৩। অর্থাৎ শেষ সাত ওভারে প্রয়োজন ৮ উইকেটে ৮১। শেষের দিকেও লড়াইয়ে টিকে থাকল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠল না।

ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মাকে নিয়ে ২৫ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন ধাওয়ান। রোহিত ৮ বলে ৭ রান করে আউট হলেও ধাওয়ান চালিয়ে গিয়েছেন। লোকেশ রাহুল ফেরেন ১২ বলে ১৩ রানে। ৮ বল খেলে বিরাট কোহলির সংগ্রহ মাত্র ৪ রান। ১ উইকেটে ৮৪ রানে থাকা ভারত ১০৫ রানে স্কোরটাকে নিয়ে যেতে না যেতেই খুইয়ে বসে ৪ উইকেট।

৪২ বলে ১০ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৭৬ রান করে আউট হন ধাওয়ান। এর পরও আশা ছিল। পঞ্চম উইকেটে দিনেশ কার্তিক আর ঋষভ পন্ত মিলে দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। শেষ ৪ ওভারে ৬ উইকেটে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৬০। ১৪তম ওভারে তাণ্ডব চালিয়ে কার্তিক-পন্ত তুলে আনেন ২৫ রান। ম্যাচের চাকা তখন ভারতেরই দিকে। শেষ তিন ওভারে প্রয়োজন ৩৫। সেটাই শেষ ওভারে গিয়ে দাঁড়ায় ১৩তে। ডুবিয়েছেন আসলে পান্ডিয়া ভাইদের অন্যজন। প্রথম তিন বল একরকম নষ্ট করে আউট হন তিনি। চতুর্থ বলে কার্তিকও (১৩ বলে ৩০ রান) ফিরে গেলে শেষ আশাও শেষ হয়ে যায় ভারতের।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা আর মার্কাস স্টয়নিস। জাম্পাই হয়েছেন ম্যাচসেরা, ৪ ওভারে ২২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। তবে কেবল শেষ ওভারের প্রথম ৪টি বলের জন্যও ম্যাচসেরার পুরস্কার পেতে পারতেন স্টয়নিস। ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ওই শেষ ওভারে পরপর ২ বলে ২ উইকেট নিয়েছেন। স্টয়নিস ব্যাট হাতেও ভূমিকা রেখেছিলেন ১৯ বলে ৩৩ রান করেছেন।

ব্যাটিংয়ে মূল ঝড়টা অবশ্য তুলেছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৪ বলে ৪ ছক্কায় ৪৬ রান করেন তিনি। ক্রিস লিন ২০ বলে করেন ৩৭। এর সঙ্গে স্টয়নিসের ঝোড়ো ক্যামিও বড় ভূমিকা রাখে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মাঝপথেই বৃষ্টি নামা ম্যাচে। অস্ট্রেলিয়া বৃষ্টি শেষে আর ৫টি বলই খেলতে পারে। মাঝখানের বিরতিতে ম্যাচ ১৭ ওভারে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশি রান তুলেও হেরে গেল ভারত। ম্যাচের ফল নির্ধারক হয়ে গেল ডাকওয়ার্থ লুইস।

বৃষ্টি হতে পারে, এমন ভাবনা অস্ট্রেলিয়ার রণকৌশলে অবশ্য ছিল। ডাকওয়ার্থ লুইস এই ম্যাচের প্রভাবক হবে, এটা মাথায় রেখে ব্যাট চালিয়েছে তারা। বৃষ্টিতে ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে তাদের লাভটা হয়েছে, যা রান তারা তুলেছে, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ১৫ রান। ৪ রানে হেরে যাওয়া ম্যাচে ভারতের সমর্থকেরা তাই ডিএলের শাপশাপান্ত করতেই পারেন!