'ছোট ভুলেই শেষ হয়ে যেতে পারে সাব্বিরের ক্যারিয়ার'

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও সাব্বির রহমান। ছবি: প্রথম আলো
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও সাব্বির রহমান। ছবি: প্রথম আলো
>সাব্বিরের নিষেধাজ্ঞা ঠিক কী কারণে কমে এল, কোন পারফরম্যান্স দিয়ে তিনি নিউজিল্যান্ড সফরে সুযোগ পেলেন, অনেক প্রশ্নই উঠেছে গত কদিনে। প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর বিসিবির কারও কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা-রংপুর ম্যাচ দেখতে চট্টগ্রামে এসেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। ম্যাচ দেখার ফাঁকে কথা বললেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। ব্যাখ্যা দিলেন সাব্বির রহমানের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে।

আচরণবিধি ভঙ্গের অপরাধে গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল সাব্বিরকে, যেটি শেষ হওয়ার কথা আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে। কিন্তু তার আগেই নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে তাঁকে ফেরানো হয়েছে বাংলাদেশ দলে। সাব্বিরের নিষেধাজ্ঞা কমল কীভাবে, কোন বিবেচনায় তিনি জাতীয় দলে এলেন, এসব প্রশ্নে নানা ব্যাখ্যাই শোনা গেছে গত কদিনে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন যেমন সব দায়ভার চাপিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ওপর। মাশরাফি আবার দাবি করেছেন, সাব্বিরের ব্যাপারে নিজের মতামত দিয়েছেন, অন্য কিছু নয়। বিসিবির কর্তারাও কেউ পরিষ্কার বলতে পারেননি কোন বিবেচনায় সাব্বিরের নিষেধাজ্ঞা হুট করে কমে গেল।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান আজ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের যে ব্যাখ্যাটা দিলেন তাতে তিনিও কোনো দায়ভার নিতে চাইলেন না, ‘আমি প্রতিটা বিষয়ে যেভাবে জড়িয়ে থাকি, বিশেষ করে দলের ব্যাপারে, স্কোয়াড নিয়ে। গত তিন মাস ধরে এসবের বাইরে আছি। একেবারেই হস্তক্ষেপ করছি না, এখন ওরাই সব করছে। সাব্বিরের ব্যাপারটা হচ্ছে, হতে পারে অধিনায়ক-কোচ হয়তো চেয়েছে। আগ থেকেই চাইছিল। ওকে চাইছিল বিশ্বকাপের জন্য। ওরা বলছিল যদি সে ভালো করে (নিউজিল্যান্ড সিরিজে) তাহলে বিশ্বকাপে একটা সুযোগ থাকবে। হতে পারে এই সিরিজে ওকে নাও খেলাতে পারে। দলের সঙ্গে নিয়ে গেলে হয়তো ওর মানসিকতা ঠিক হলো। কন্ডিশনিংয়ের বিষয়টিও ভাবনায় রেখেছে। তা না হলে ১৫-২০ দিন (নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার) আগে ওকে নেওয়ার কারণই দেখি না। ১৫-২০ দিন পর এটা (নিষেধাজ্ঞা) এমনি শেষ হয়ে যেত। অবশ্যই পারফরম্যান্সও একটা বিষয়। বিপিএলে যে ম্যাচে সে ৮৫ করেছিল, সেটা দেখে আরও উৎসাহিত হয়েছে। মনে করেছে ও ছন্দ ফিরে পাবে।’

নাজমুল হাসান আরেকটি চমকে যাওয়া তথ্য দিলেন। তাঁর কাছে যখন নিউজিল্যান্ড সফরের দল পাঠানো হয়, তখন তিনি নাকি জিজ্ঞেস করেছিলেন, সাব্বিরের শাস্তি শেষ হচ্ছে কবে? উত্তরে তাঁকে বলা হয়েছে, ‘শাস্তি শেষ’! বিসিবি সভাপতি এ–ও জানালেন, সাব্বিরকে হুট করে নয়, দলে নেওয়ার ব্যাপারটা আলোচনা হচ্ছে অনেক আগ থেকেই।

এ ছাড়া সাব্বিরকে দলে নেওয়ার অনুরোধ আগেও অনেকবার এসেছিল বিসিবি সভাপতির কাছে, ‘ওকে যখন বাদ দেওয়া হয় তারপর অনেকবার অনুরোধ এসেছে দলে নেওয়ার। আমরা সাধারণত এভাবে নিতে চাই না বা নিই না। কিন্তু অনেকেই মনে করে সে (সাব্বির) অনেক বদলেছে। এটাই ওর শেষ সুযোগ। ১৫-২০ দিন তো বড় কথা না (নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়া)। এরপর যদি আবারও একই ভুল করে জীবনে সে আর খেলতে পারবে না।’

তবে বিসিবি সভাপতি মনে করেন, সাব্বির যদি আরও সময় নিয়ে দলে ফিরতেন সেটি আরও ভালো হতো। কেন এ কথা বললেন নাজমুল, সেটির মর্মার্থ সাব্বির নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারবেন, ‘ওর জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল। একটা ছোট ভুলেই এখন ওর ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে!’