তবুও জয়ের কথাই বলতে চান মাশরাফি

>

নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম দুটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছে বাজেভাবে। ডানেডিনের শেষ ওয়ানডের আগে জয়ের কথা বলার সাহস কি মাশরাফির আছে? বাংলাদেশ দলপতি কিন্তু জয়ের আশাই করছেন।

মানুষ আশায় বাঁচে। নিউজিল্যান্ড সফরে নেপিয়ার আর ক্রাইস্টচার্চে প্রথম দুই ওয়ানডেতে বাজভাবে হারার পরেও মাশরাফি বিন মুর্তজার কণ্ঠে আশা। ডানেডিনের শেষ ম্যাচে ‘ভালো কিছু করা’র আশা। সেটি নির্দিষ্ট করে জয়, নাকি ভালো খেলা, লড়াই করা, সেটি মুখ ফুটে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক বলেননি। তবে তাঁর কথায় যে ‘সুর’, তাতে অভাবনীয় কিছুরই স্বপ্ন দেখেন তিনি। হ্যাঁ, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা ১২ ম্যাচ হারার পর জয়ের স্বপ্ন দেখাটা অভাবনীয় কিছুর আশাই। মাশরাফি এ জন্য অতীতের স্মৃতিতেই আশ্রয় নিতে চান।

অতীতের স্মৃতি বলতে ২০১৭ সালের আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি সিরিজ। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত একটা জয় দিয়েই আয়ারল্যান্ড সফর শেষ করেছিল মাশরাফি-বাহিনী। ডানেডিনে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামার আগে সে ম্যাচের স্মৃতিই মনে করলেন তিনি, ‘গত বছর আয়ারল্যান্ডে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলাম। আমরা কিন্তু ম্যাচটা জিতেছি। আবার আয়ারল্যান্ড থেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গিয়েও আমরা নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। অনুভূতিটা অসাধারণ ছিল। আমরা আবারও এটাই করতে চাই। কিন্তু সব সময়ই যেটি বলি, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোটা সব সময়ই কঠিন। তবে ভালো লাগছে যে উইকেট কিন্তু বেশ ভালো। আশা করছি, কাল আমরা এখানে ভালো খেলব।’

ডানেডিনে জিততে চান মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো
ডানেডিনে জিততে চান মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো

কিন্তু কাজটা খুব কঠিন। এবারের নিউজিল্যান্ড সফরে এখন পর্যন্ত ব্যাটিংটা খুব ভালো হয়নি। দুই ম্যাচে যিনি রান করেছেন, সেই মোহাম্মদ মিঠুন ডানেডিনে খেলতে পারবেন না হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে। তামিম ইকবাল দুই ম্যাচেই ব্যর্থ। বোলাররা এবারের সিরিজে এখনো পর্যন্ত যে বোলিং করেছেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত নির্বিষ বোলিং বাংলাদেশি বোলারদের কাছ থেকে আর দেখা যায়নি। মাশরাফি এক কিছুর পরেও কীভাবে ‘ভালো কিছু’র স্বপ্ন দেখেন, সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘আমি অবশ্যই জয়ের কথা বলব। ২০১৭ সালে আমরা আয়ারল্যান্ডে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। আসলে সব সময় যেটি আশা করা হয়, সেটি কিন্তু হয় না। এ দেশের মাটিতে ম্যাচ জেতাটা অনেক কঠিন হয়তো, সেটি আমরা জানি। তারপরও আমরা জিততে চাই।’

নিউজিল্যান্ড সফরে কি সবকিছুই নেতিবাচক? মাশরাফি তা মনে করেন না। বরং বিশ্বকাপের ১০০ দিনের মতো বাকি থাকতে অনেক নেতিবাচক ব্যাপারই তাঁর কাছে দীর্ঘ পরিসরে ইতিবাচক মনে হচ্ছে, ‘এই সিরিজে আমরা যেভাবে খেলতে চেয়েছিলাম। সেটি খেলতে পারিনি। অনেক পরিকল্পনাই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এর মানে এই না যে সামনে এগোনোর সুযোগ নেই। এই সফরে অনেক দুর্বল দিকগুলো বেরিয়ে এসেছে। বিশ্বকাপের ১০০ দিন বাকি আছে। এই দুর্বল দিকগুলো নিয়ে তো কাজ করার অনেক সুযোগ থাকছে।’

ডানেডিনের শেষ ম্যাচে মুমিনুল হককে ডাকা হয়েছে। মিঠুন তো চোটের কারণে খেলতেই পারবেন না। মুশফিকুর রহিমেরও চোট আছে। ব্যাপার অনেকটা এমন যে ঠিকমতো একাদশই দাঁড়ায় না। টেস্ট স্কোয়াড থেকে মুমিনুলকে ডাকার মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য তৈরি দলটাই কি প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল না? মিঠুনের চোটের পরপরই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দলে ব্যাটসম্যানের অভাব। মাশরাফি পুরো ব্যাপারটিরই ব্যাখ্যা দিলেন। তবে তিনি একটা ব্যাপারে নিজের ব্যক্তিগত অভিমত দিতে ভোলেননি—এ ধরনের সফরে দল অবশ্যই ১৬ জনের হওয়া উচিত। ১৫ জনের দল দিলেও সাকিবের চোট বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১৪-তে নামিয়ে এনেছে, ‘দলে অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান থাকলে ভালো হতো। সাকিবকে ধরলে কিন্তু অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান ছিল। মিঠুন ছিল, সাব্বির ছিল। সাকিবের চোটের পর অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান আনা হয়নি। দ্বিধায় ছিলাম একজন বাঁহাতি স্পিনার আনা হবে কি না, সে শেষ মুহূর্তে চোটে পড়ায় বদলি আনা সম্ভব হয়নি। ১৪ জনের স্কোয়াড নিয়েই আছি।’