মন জিতে নিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের আক্রমণের দৃশ্য। ছবি: বাফুফে
বাংলাদেশের আক্রমণের দৃশ্য। ছবি: বাফুফে
বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্বে ফিলিস্তিনির কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ।

হার তো হারই! তবে কখনো কখনো হারের মধ্যেও থাকে বীরত্ব। পরাজয়ের মধ্যেও থাকে লড়াইয়ের উচ্ছ্বাস। এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্বে শক্তিশালী ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটা দেখে থাকলে দুর্দান্ত এক ফুটবল ম্যাচের স্বাদ পাওয়ারই কথা। ১-০ গোলে হারলেও মন জয় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই হারে বাছাইপর্বের বাধা পার হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার স্বপ্ন ভেঙে গেল বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের ফুটবলের প্রেক্ষাপটে  চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার স্বপ্নকে বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ দল দেখিয়ে দিয়েছে কেন জেমি ডে সে স্বপ্ন দেখার সাহস দেখিয়েছেন। আজকের ম্যাচটাকে দুই অর্ধে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমার্ধে একমাত্র গোলটি হজম করলেও লড়াইয়ে ছিল প্রায় সমতা। আর দ্বিতীয়ার্ধে মাসুক মিয়া জনি, সুশান্ত্র ত্রিপুরাদের দাপট। প্রতি–আক্রমণে গোলের একটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসা গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ফাঁকা পোস্ট পেয়েছিলেন মতিন, কিন্তু তাঁর দুর্বল শট গোললাইন পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই ক্লিয়ার করেন ফিলিস্তিন ডিফেন্ডার। অন্যদিকে বাংলাদেশের পোস্টে বলার মতো দুইটি বল রাখতে পেরেছে ফিলিস্তিন। এর মধ্যে একটিতে গোল। তবে বাংলাদেশের নিয়মিত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু পোস্টের নিচে থাকলে গোলটা হজম করতে হতো কি না, এই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। চোটের কারণে আজ মাঠে নামা হয়নি আগের ম্যাচে বাহরাইনের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলা জিকুর। তাঁর স্থলে মাঠে নেমেছিলেন পাপ্পু হোসেন।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১৯২) চেয়ে ১০০ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিন পরিষ্কারভাবে ছিল ফেবারিট। সে তুলনায় ধুন্ধুমার লড়াই উপহার দিয়েছে জনি বাহিনী। বাংলাদেশ কোচ জেমি ডের ফরমেশনও ছিল ঘর সামলে প্রতি–আক্রমণে যাওয়ার। ৫-৪-১ ফরমেশনে রহমত-সুশান্ত-রাফি-বাদশা ও বিশ্বনাথকে নিয়ে রক্ষণভাগ ছিল নিরেট জমাট। তাঁদের ওপর ছায়া দিয়েছেন ডাবল পিভট দুই হোল্ডিং মিডফিল্ডার জনি ও আলামিন। ফলে প্রতিপক্ষ উইং প্লে বা মিডল করিডর দিয়ে ওয়ান টু ওয়ানে অ্যাটাকিং থার্ড পর্যন্ত আসতে পারলেও বাংলাদেশের রক্ষণ সীমানায় ঢুকেই ফেরত যেতে হয়েছে।

শ্রীলঙ্কাকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার সুখস্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ফিলিস্তিন। সুতরাং বাংলাদেশের তুলনায় তাদের শক্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু ফিলিস্তিনির বিপক্ষে বাংলাদেশ ড্র করলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। ২২ মিনিটে হজম করা গোলের জন্য গোলরক্ষক পাপ্পুর ওপর কিছুটা দায় দেওয়া যায়। অনেক দূর থেকে নেওয়া শটে বলের লাইনে যেতে পারেননি। এর পরে বাংলাদেশকে আর নাড়া দিতে পারেনি ফিলিস্তিন। উল্টো ৭০ মিনিটে বদলি মতিন সহজ সুযোগ মিস না করলে ফলাফলটা অন্য রকমও হতে পারত।

টানা দুই ম্যাচ হেরে বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়া বাংলাদেশ আগামী পরশু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে শেষ ম্যাচ।