নিজে ঠিক থাকলেই হলো, বলছেন মোস্তাফিজ

>ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কাল ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের রানের চাকাকে আটকে দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসারই। দল জেতার পর আশ্চর্য নির্লিপ্তই থাকলেন বাংলাদেশের এই গতি তারকা।

আইসিসির স্বেচ্ছাসেবী যখন জানিয়ে গেলেন মিক্সড জোনে লিটন দাসের সঙ্গে থাকবেন মোস্তাফিজুর রহমান, শুনে সবাই একটু অবাকই হলো! মোস্তাফিজ রাজি হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে আসতে? লিটনের কথা শেষে যখন তাঁর দিকে তাকানো হলো, ‘অনেক কথা তো শুনলেনই। আমার কথা আর কী শুনবেন’ বলে কোনোভাবে এড়িয়ে যেতে চাইলেন।

কিন্তু চাইলেই কি আর এড়ানো যায়! এমনই দিনে তো কথা বলতে হয় মনের দুয়ার খুলে। অবশ্য মোস্তাফিজের মনের দুয়ারটা সংবাদমাধ্যম দেখলে কেন যেন বন্ধ হয়ে যায়! কাল বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম বোলার তিনি। বিশেষ করে ৪০তম ওভারে ৩ বলের মধ্যে শিমরন হেটমায়ার আর আন্দ্রে রাসেলকে যদি না ফেরাতে পারতেন, ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা স্কোরটা যে কোথায় নিয়ে যেতেন! যখন স্লগ ওভারের আগ মুহূর্তে বোলিংয়ে এলেন, তখন কী পরিকল্পনা ছিল, সেটি বলতে গিয়ে কূটনৈতিক হওয়ার ধার ধারলেন না। দুই বাক্যে অকপট বিশ্লেষণ, ‘ওই সময় ওরা ঘাঁড়ানো (মার) শুরু করেছিল! আমাকে তখন আক্রমণে এনেছে, আমি চেষ্টা করেছি।’

মোস্তাফিজের সরল বিশ্লেষণ শুনে হাসির রোল উঠল। হাসি থামিয়ে আবার গুরুগম্ভীর প্রশ্ন—রাসেলকে ফেরানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? ‘শুধু এ ম্যাচেই নয়, আগেও তাকে অনেকবার আউট করেছি। ও আমাকে দেখলে একটু অস্বস্তিতে থাকে, আমি সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি’—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে মোস্তাফিজ আগের মতোই। দু-চার কথায় ঝটপট উত্তর।

নিজে কথা কম বলেন সমস্যা নেই। কিন্তু পারফরম্যান্সে একটু ঘাটতি হলেই যে কথা ওঠে চারদিকে। ‘মোস্তাফিজের ধার আর আগের মতো নেই’—এ ধরনের কথা ওঠে এখন নিয়মিতই। অথচ এই দলে তিনিই সেরা উইকেটশিকারি বোলার। বাংলাদেশ গত দুই মাসে বাংলাদেশ যে ছয়টি ওয়ানডে জিতেছে, তিনটিতেই দলের সবচেয়ে সফল বোলার। একটু খারাপ খেললেই যে চারদিকে গেল গেল রব ওঠে, ইতিবাচক দিক হচ্ছে মোস্তাফিজ এসব নিয়ে মোটেও বিচলিত হন না, ‘কে কী বলে দেখার দরকার নেই। নিজে ঠিক থাকলে হয়।’

নিজে ঠিক থাকাটা জরুরি তো অবশ্যই। বাংলাদেশের লক্ষ্যটা কি ঠিক থাকবে ক্রিকেট বিশ্বকাপে? পারবে সেমিফাইনালে যেতে? মোস্তাফিজের এক উত্তর, ‘ভালো খেললে যাব।’ ভালো খেললে সব ম্যাচ জিতবেন, আর সব ম্যাচ জিতলে তৈরি হবে শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা—ফিজের সহজ হিসাব।