ক্রিকেটে 'পাগল' 'পাগল' ঘটনাগুলো
ক্রিকেটে কখনো কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যা বিস্মিত করে সবাইকে। ক্রিকেটের সৌন্দর্য বোধহয় এগুলোই
ক্রিকেট খেলাটাই তো এমন। আজ কোনো ব্যাটসম্যান ট্রিপল সেঞ্চুরি করলেন, তো পরের ১০ ম্যাচে তাঁর ব্যাটে রান নেই। কোনো অখ্যাত বোলার হয়তো করে বসলেন পরপর দুটি হ্যাটট্রিক; ব্যাট হাতে হয়তো কোনো পার্শ্বচরিত্র বীরত্ব দেখিয়ে হয়ে গেলেন নায়ক।
নিশ্চিত হারতে বসা কোনো ম্যাচ হয়তো একক কৃতিত্বে বের করে নিয়ে গেলেন কোনো ক্রিকেটার। কোনো ক্রিকেটার হয়তো এমন কিছু কীর্তির জন্য বিখ্যাত হয়ে গেলেন, যেটি তাঁর করারই কথা নয়। ক্রিকেটের দীর্ঘ ইতিহাস এ ধরনের অনেক ঘটনারই সাক্ষী। ২০০৬ সালে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন অস্ট্রেলীয় পেসার জেসন গিলেস্পি। ব্যাপারটা চমকে দিয়েছিল সবাইকেই। অতীত ইতিহাসে 'হওয়ার নয়, অথচ হয়েছে' এমন ৫টি ঘটনা বিস্ময়ে বিমূঢ় করবে পাঠককে।
ওয়ার্নের চেয়ে টেন্ডুলকারের '৫ উইকেট' বেশি
শেন ওয়ার্নকে ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার বলা হয়। টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর উইকেট সংখ্যা ৭০৮, ওয়ানডেতে ২৯৩। টেস্টে ওয়ার্ন ৩৭ বার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেও ৫০ ওভারের ম্যাচে সেটি মাত্র একবার। সবাই অবাক হতে পারেন, অনিয়মিত বোলার শচীন টেন্ডুলকারও ওয়ানডেতে ওয়ার্নের চেয়ে বেশিবার ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। ওয়ার্ন ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজের একমাত্র ৫ উইকেটটি পেয়েছিলেন। টেন্ডুলকার পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একবার করে, মোট দুইবার ৫ উইকেট নেন।
সবচেয়ে বেশি 'বোল্ড' রাহুল দ্রাবিড়!
'দ্য ওয়াল' হিসেবে তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন নিখুঁত ব্যাটিং টেকনিকের কারণে। রাহুল দ্রাবিড় তাঁর প্রজন্মের পরিশুদ্ধতম ক্রিকেটারদের একজন। কিন্তু হলে কি হবে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার (৫৫) বোল্ড আউট হওয়ার দুঃখও তাঁর। বোল্ড আউট হওয়াকে সাধারণত একজন ব্যাটসম্যানের টেকনিকের ত্রুটি হিসেবেই ধরা হয়। কী আশ্চর্য, এভাবেই সবচেয়ে বেশিবার টেস্টে আউট হয়েছেন দ্রাবিড়। ক্যারিয়ারে ১৬৪টি টেস্ট খেলেছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। ২৮৬ ইনিংসে তাঁর বোল্ড আউট হওয়ার হার ১৯.২৩ শতাংশ।
৩৭–১–২৬০–০
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে বোলিং পরিসংখ্যান এটি। দক্ষিণ আফ্রিকার পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত লেগ স্পিনার ইমরান তাহির ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাডিলেড টেস্টে ৩৭ ওভার বোলিং করে ২৬০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। আগে এই রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের খান মোহাম্মদের। ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লাহোর টেস্টে ৫৪ ওভার বল করে ২৫৯ রান দিয়ে উইকেট–শূন্য ছিলেন তিনি।
লর্ডসে আগারকারের আছে, টেন্ডুলকারের নেই
ক্রিকেটের জীবন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার টেস্ট খেলেছেন ২০০টি। এর মধ্যে সেঞ্চুরি ৫১টি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৪৮। মজার ব্যাপার হচ্ছে ক্রিকেটের 'ঘর' হিসেবে পরিচিত লর্ডসের অনার্স বোর্ডে তাঁর নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাঁর কারণ, এ ঐতিহাসিক মাঠে যে তাঁর সেঞ্চুরি নেই! সেঞ্চুরি করলেই না অনার্স বোর্ডে নাম ওঠে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে ২০০২ সালে লর্ডসেই এক টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ভারতীয় পেসার অজিত আগারকার। টেন্ডুলকার বোধহয় কোনো দিনই নিজের এ অপ্রাপ্তি ভুলতে পারবেন না।
দশে নেমে অভিষেকেই সেঞ্চুরি
২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট বাংলাদেশের। সে ম্যাচে অভিষেক হলো এক ডান হাতি মিডিয়াম পেসারের। বোলার হিসেবে অভিষিক্ত আবুল সেদিন এক কাণ্ড ঘটালেন। ব্যাট হাতে করে ফেললেন সেঞ্চুরি!
এরপর আর মাত্র দুটি টেস্ট (সাকল্যে ৩টি) খেলেছেন এই পেসার। কিন্তু তাতেই তাঁর নামের পাশে বিরল এক কীর্তি। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে ১০ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। অভিষিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে আবুল কেবল দ্বিতীয়, প্রথম জন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার রেগি ডাফ, সেটিও ১৯০২ সালে!