ঘরে বাঘ, বাইরে বিড়াল তাঁরা

এমন শীর্ষস্থান কার ভালো লাগে? ফাইল ছবি
এমন শীর্ষস্থান কার ভালো লাগে? ফাইল ছবি

এক সময় কথাটা ভারত দলের সঙ্গে বেশ ভালোভাবে জুড়ে গিয়েছিল। ঘরের মাঠে স্পিন দিয়ে দাপট দেখানো দলটি সফরে গেলেই পেস আর বাউন্সের সামনে সিটিয়ে যেত। সে সব দিন পেরিয়ে দাপট দেখানো এক পেস আক্রমণ পেয়েছে ভারত। কিন্তু দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সে মানসিকতা বোধ হয় এখনো রয়ে গেছে।

টেস্ট ক্রিকেটে ঘরে ও প্রতিপক্ষের মাঠে অন্তত দশ ইনিংস খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের তালিকায় এক দিক থেকে শীর্ষে আছেন রোহিত শর্মা। না, এ শীর্ষস্থান তাঁকে স্বস্তি দেবে না। তালিকাটা যে ঘরের মাঠে 'বাঘ', আর পরের মাঠে 'বিড়াল'দের!
ঘরের মাঠে ১৪ টেস্ট খেলে রোহিতের গড় এখন ৮৮.৩৩। আর প্রতিপক্ষের আতিথ্য নিয়ে ১৮ টেস্টে সেটা ২৬.৩৩। অর্থাৎ ৬২.০১ রানের পার্থক্য। টেস্ট ক্রিকেটে এমন 'বাঘ-বিড়াল' সম্পর্ক আর কারও নেই। ইদানিং অবশ্য শুধু ভারত নয়, সব দেশের ব্যাটসম্যানই অপরিচিত কন্ডিশনে ভুগছেন । সে কারণেই হয়তো, এমন বৈপরীত্যের তালিকার দুয়ে আছেন এক অস্ট্রেলিয়ান।

এবারের অ্যাশেজের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ মারনাস লাবুশেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা লাবুশেনের ঘরের মাঠে গড় দাঁড়িয়েছে ৮৫.৪২-এ। কিন্তু সফরে তাঁর গড় ৩৯.৪৫। অর্থাৎ ভিন্ন পরিস্থিতিতে গড়ের পার্থক্য ৪৫.৯৬। এ বৈপরীত্য যদি তাড়াতাড়ি কমিয়ে আনতে পারেন তাহলে ভালো, না হলে বেশ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন ডগলাস জার্ডিন।

বডিলাইন সিরিজের জন্য কুখ্যাত এই ইংলিশ অধিনায়ক ইংল্যান্ডে ৮১.৬৭ গড়ে রান তুলতেন। কিন্তু জাহাজে চেপে অন্য কোথাও (অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড) ঘুরতে বের হলেই রান করার খুব একটা আগ্রহ দেখা যেত না তাঁর মাঝে। ৩৮.৩৮ গড়ে সফরে রান করা জার্ডিনের ক্ষেত্রে তাই ব্যবধানটা ৪৩.২৯।

আর যদি ১০ ইনিংসকে মাপকাঠি না বানিয়ে ঘরে-বাইরে দুই জায়গাতেই অন্তত ১০০০ রানকে মাপকাঠি বানানো হয়, সেখানে অবশ্য স্বস্তি পাবেন রোহিত। না, তাঁর কোনো কৃতিত্ব নেই। ঘরের বাইরে এখন পর্যন্ত ৮১৬ রান করায় এ তালিকায় আসার যোগ্যতাই হয়নি তাঁর। এক্ষেত্রে এই 'বাঘ-বিড়ালের' শ্রেষ্ঠত্ম বব কাউপারের। সত্তরের দশকে অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা করে নেওয়া এই অলরাউন্ডার ঘরের মাঠে ৭৫.৭৯ গড়ে রান তুলতেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে সেটা নেমে আসত ৩৩.৩৩-এ। ফলে ৪২.৪৫ পার্থক্য নিয়ে মুকুটটা ৫২ বছর ধরেই তাঁর মাথায়।