পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু, তাঁর প্রশ্ন 'এরপর কি আমি?'

জর্জ ফ্লয়েডের ঘাঁড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন সেই পুলিশ। ছবি: এএফপি
জর্জ ফ্লয়েডের ঘাঁড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন সেই পুলিশ। ছবি: এএফপি

পুরো আমেরিকা যেন তোলপাড় সেই ঘটনায়। নারকীয় সেই ঘটনা যে মানবাধিকারকেই বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। সাবেক বাস্কেটবল তারকা জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, সেই নিয়েই আন্দোলন চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ নারী টেনিস তারকা কোকো গফ। টুইটারে এক ভিডিওতে তাঁর প্রশ্ন, ‘এরপর কি আমি?’

গত ২৫ মে মিনেপোলিসের শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন জর্জ ফ্লয়েডের মাথায় হাঁটু চেপে ধরে তাঁকে মেরে ফেলেন। শভিনের বিরুদ্ধে আনা চার্জে লেখা, ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ওভাবে ফ্লয়েডের মাথায় হাঁটু চেপে রেখেছিলেন শভিন, এর মধ্যে ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড ছিল ফ্লয়েড নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পর! ফ্লয়েডের হাতে তখনই হ্যান্ডকাফ পরা ছিল, পুলিশের নির্দেশনা মেনে মাথা মাটির দিকে রেখে মাটিতে শুয়েই ছিলেন তিনি। তবু শভিনের ওভাবে হাঁটু দিয়ে মাথা চেপে ধরা। ঘটনার সময়ে আশপাশের মানুষের ধারণ করা ভিডিওতে প্রকাশ পায়, ফ্লয়েড বারবার বলছিলেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’
পুলিশের কথা, ফ্লয়েডের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাশের এক রেস্টুরেন্টের সারভেইলেন্স ভিডিওতে দেখা যায়, ফ্লয়েডকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দুবার পড়ে গিয়েছিলেন।

কোকো গফের টুইটারে ভিডিও। ছবি: টুইটার
কোকো গফের টুইটারে ভিডিও। ছবি: টুইটার

এ ঘটনার ভিডিও স্থানীয় এক টিভিতে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতেই ফুঁসে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারবিরোধী কাজের অভিযোগ তো সব সময়ই থাকে। সেটি এখন যেন চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। কোকো গফও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁর মতো করে।
১৬ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ টেনিসকন্যা ভিডিও সম্প্রচারমাধ্যম টিকটকে একটি ভিডিও করে সেটি শেয়ার করেছেন নিজের টুইটারেও। ভিডিওতে এর আগে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বা অন্যদের হাতে নিহত হওয়া আরও অনেক কৃষ্ণাঙ্গদের ছবি দিয়েছেন গফ। এঁদের মধ্যে আছেন আরবেরি – ২৫ বছর বয়সী যে আফ্রিকান-আমেরিকান গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জর্জিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে খুন হয়েছেন। আছেন টেলর, যিনি বাড়িতে ঢুকে পড়া পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। আছেন হাই স্কুল ছাত্র মার্টিনের ছবি, যিনি ২০১২ সালে খুন হয়েছেন। এই মার্টিনের মৃত্যুই ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ নামের আন্দোলনের সূচনা করে সে সময়।
বিভিন্ন সময়ে প্রাণ হারানো এই কৃষ্ণাঙ্গদের ছবি দিয়ে পরে ভিডিওতে লেখা উঠেছে, ‘এরপর কি আমি?’ সে সময় আত্মসমর্পনের ভঙ্গিতে হাত উঁচিয়ে ধরেন গত বছর উইম্বলডনে নিজের আদর্শ ভেনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে আলোচনায় আসা কোকো গফ।