মেসির হাতে ৬ ম্যাচ, রোনালদোর আছে ১০

মেসি-রোনালদোর রাজত্ব শেষ হচ্ছে এবার? ফাইল ছবি
মেসি-রোনালদোর রাজত্ব শেষ হচ্ছে এবার? ফাইল ছবি

সোনালি জুতা যে অন্য কারও হাতে মানায়, সেটা ভুলেও যেতে পারেন ফুটবল দর্শকেরা। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু যে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেনে মেসি-রোনালদো। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদোর দাপটের এই দশকে একমাত্র লুইস সুয়ারেজই পেরেছিলেন একবার সবচেয়ে বেশি গোল দেওয়ার কীর্তি গড়তে।

ফুটবলের ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত দ্বৈরথে এবার একটু ভাটার টান। গত তিন মৌসুম ধরে ইউরোপের সব লিগ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি প্রথম দুই মাস খেলতে না পেরে পিছিয়ে পড়েছিলেন। আর জুভেন্টাসে গিয়ে রোনালদোও গুছিয়ে নিতে সময় নিচ্ছিলেন। ফলে এবার ইউরোপের শীর্ষ লিগে স্ট্রাইকাররা প্রায় ভুলে যাওয়া এক স্বাদের পেছনে ছুটতে পেরেছেন প্রবল উৎসাহে। আর সে দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেবান্ডফস্কি।

জার্মান লিগে ম্যাচ সংখ্যা এমনিতেই কম। এর মাঝেও তিন ম্যাচ মাঠে নামেননি এই পোলিশ। তবু ৩১ ম্যাচেই ৩৪ গোল এই পারফেক্ট নাইনের। ওদিকে আরবি লাইপজিগের হয়ে ২৮ গোল করে তাঁর পেছনেই আছেন টিমো ভেরনার। এবার জার্মান লিগ নতুন আরেক স্ট্রাইকারের উত্থান দেখেছে, আরলিং হরলান্ড। এ মৌসুমে লিগের ২৯ ম্যাচে ২৯ গোল করেছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই তরুণ। তবে এই ১৯ বছর বয়সী প্রথম ১৬ গোল অস্ট্রিয়ান লিগে সালজবুর্গের পক্ষে করায় সোনালি জুতার দৌড়ে ভেরনারের চেয়েও পিছিয়ে আছেন। কারণ শীর্ষ পাঁচ লিগের প্রতি গোলের জন্য ২ পয়েন্ট করে পেলেও অস্ট্রিয়ান লিগের গোলগুলোর জন্য ১.৫ পয়েন্ট পেয়েছেন হরলান্ড।

লিগে অবিশ্বাস্য ফর্মে ছিলেন লেবানডফস্কি। ছবি: টুইটার
লিগে অবিশ্বাস্য ফর্মে ছিলেন লেবানডফস্কি। ছবি: টুইটার

এরপরই আছেন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। লিগে পাঁচটি ম্যাচে নামতে না পারা মেসি ২৭ ম্যাচে করেছেন ২১ গোল। সঙ্গে ১৭টি গোল বানিয়ে দিয়েছেন সতীর্থদের জন্য। কিন্তু গোল্ডেন শুর প্রতিযোগিতায় সেটা তো আর গোনায় ধরা হচ্ছে না। আর এদিক থেকে এগিয়ে আছেন রোনালদো। ২৪ ম্যাচেই ২৩ গোল করেছেন জুভেন্টাস তারকা।

মেসির চেয়ে আরেকটি দিকেও এগিয়ে আছেন রোনালদো। লিগে মেসির হাতে আছে আর মাত্র ছয়টি ম্যাচ। ওদিকে রোনালদোর হাতে আছে আরও ১০টি ম্যাচ। সাধারণত মৌসুমের এ পর্যায়ে এসেই গোল ক্ষুধা বাড়ে রোনালদোর। ফলে ১০ ম্যাচে ১২ গোল করে লেবান্ডফস্কিকে টপকে যাওয়া খুব করেই সম্ভব রোনালদোর পক্ষে। অন্যদিকে মেসিকে সে কাজ করতে হলে ৬ ম্যাচে করতে হবে ১৪ গোল! কাজটা প্রায় অসম্ভব বলে স্বীকার করে নেওয়াই ভালো। কারণ, এর মাঝে তিনটি ম্যাচ প্রতিপক্ষের মাঠে। এ মৌসুমে ঘরের বাইরে বার্সেলোনার পারফরম্যান্স মেসির পক্ষে কথা বলছে না।

ইমমোবিলের পক্ষে সম্ভব লেবানডফস্কিকে টপকানো। ছবি: টুইটার
ইমমোবিলের পক্ষে সম্ভব লেবানডফস্কিকে টপকানো। ছবি: টুইটার

তবে শুধু লেবানডফস্কির কথা মাথায় রাখলেই চলছে না রোনালদো-মেসিদের। ইতালিয়ান লিগে জুভেন্টাসের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে লাৎসিও। ১০ ম্যাচ হাতে রেখে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা। আর গোল করার ক্ষেত্রে রোনালদোকেও টপকে গেছেন চিরো ইমমোবিলে। লাৎসিওর ৩০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার জীবনের সেরা ফর্মে আছেন। ইতালিয়ান ২৮ ম্যাচ খেলে করেছেন ২৮ গোল। ফলে লেবানডফস্কিকে টপকানোর দৌড়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন ইমমোবিলে। আর তাহলেই ১৩ বছর পর কোনো ইতালিয়ানের কাছে যাবে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু'র ট্রফি।