মাঠে ঢোকা যাবে না, খেলা দেখতে তাই অভিনব উপায়

হোটেল থেকে চাইনিজ সুপার লিগের ম্যাচ এভাবেই দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা। ছবি: এএফপি
হোটেল থেকে চাইনিজ সুপার লিগের ম্যাচ এভাবেই দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা। ছবি: এএফপি

মাঠে দর্শক থাকতে পারবে না। করোনাকালে খেলার মাঠে এটাই নিয়ম। লাতিন থেকে ইউরোপ, এশিয়াতেও চলছে এক নিয়ম। চাইনিজ ফুটবলেও খেলা গড়াচ্ছে দর্শকহীন মাঠে। কিন্তু সেখানকার ফুটবলপ্রেমীরা এক কাঠি সরেস। মাঠে যেতে দেবে না তো কী হয়েছে, সমস্যা থাকলে সমাধানও আছে। চীনের কিছু ফুটবলপ্রেমী তেমনই এক সমাধান বের করেছেন। সেটি যেমন অদ্ভুতুড়ে তেমন মজার।

স্টেডিয়ামের পাশে হোটেল ভাড়া করে ম্যাচ দেখছেন তারা। মানে স্টেডিয়াম লাগোয়া হোটেলে উঠে তারা দূর থেকে ম্যাচ দেখছেন। তবে দূরত্ব যে বেশি না সেটি বোঝা গেছে চাইনিজ সুপার লিগে সাংহাই এসআইপিজি ও তিয়ানজিন তেদার মধ্যে ম্যাচে। কুনশানে একটি স্পোর্টস ইন্টারন্যাশনালে হোটেলে উঠে এসআইপিজির ৩-১ গোলের জয় দেখেছেন দুই দলের সমর্থকেরা। হোটেলে তাদের হই-হুল্লোড় মাঠ থেকে পরিষ্কার শুনতে পেয়েছেন খেলোয়াড়রা। কুনশান স্টেডিয়ামের পাশেই এই হোটেল।

সোঝু ও ডালিয়ান অঞ্চলের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলা হচ্ছে লিগের ম্যাচগুলো। করোনা মহামারির কারণে প্রায় পাঁচ মাস খেলা বন্ধ থাকার পর আবার মাঠে গড়িয়েছে লিগ। দর্শকহীন মাঠ এবং নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ম্যাচগুলো খেলানো হচ্ছে। তিয়ানজিয়ান সমর্থকগোষ্ঠী ‘টাইগার উইং’-এর স্যাম ওয়াং সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, দুই দলের প্রায় শ খানেক সমর্থক হোটেলে ভাড়া দিয়ে করে ম্যাচ দেখেছে। কেউ কেউ আবার খেলা ভালোভাবে দেখতে জানালা খুলে দিয়েছে। অফিশিয়ালরা শুরুতে জানালাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সমর্থকদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। পরে হাল ছেড়ে দেওয়ায় হই-হুল্লোড় করেই ম্যাচ দেখেছেন তারা। এসআইপিজির এক সমর্থককে জানালা দিয়ে ড্রাম পেটাতেও দেখা গেছে।

স্যাম ওয়াং বলেন, ‘খেলোয়াড়েরা অবশ্যই আমাদের চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছে। খেলা শেষে তারা আমাদের কুর্নিশ জানাত, কিন্তু রেফারি বাধা দেওয়ায় তা আর হয়নি।’ ওয়াং জানান, হোটেলটিতে দামি কামরার ভাড়া সাধারণত ৬৫ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৪৯৬ টাকা)। কিন্তু ম্যাচের দিন কামরার ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১১৪ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৬৩৯ টাকা)। রোববার এসআইপিজির ম্যাচ আছে। ব্রাজিলের তারকা অস্কার ও হাল্ক খেলেন এ দলে। সেদিন হোটেলে কোনো কামরা খালি নেই। ম্যাচের দিন এলেই এমন হয়। জয় সব কামরা ভাড়া হয়ে যায় নয়তো খালি থাকে না। কিন্তু ম্যাচের দিন ছাড়া অন্য সময়ে হোটেলের কামরা ভাড়া করতে কোনো অসুবিধা হয় না। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন করার পর চাইনিজ ফুটবল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে তারা ব্যবস্থা নেবেন।