'টাকার জন্য আইসিএল খেলতে যাইনি'

আইসিএল খেলার সময় আইসিএল বোর্ড চেয়ারম্যান কপিল দেবের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার নাফীস, অলক কাপালি, ধীমান ঘোষ ও হাবিবুল বাশার। এএফপি ফাইল ছবি
আইসিএল খেলার সময় আইসিএল বোর্ড চেয়ারম্যান কপিল দেবের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার নাফীস, অলক কাপালি, ধীমান ঘোষ ও হাবিবুল বাশার। এএফপি ফাইল ছবি

ঘটনাটায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। ২০০৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় দলে খেলা একঝাঁক ক্রিকেটার চলে গেলেন ভারতের আইসিএল খেলতে। এত দিন পর এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত বলেছেন ঢাকা ওয়ারিয়র্সের হয়ে টুর্নামেন্টটি খেলতে যাওয়া শাহরিয়ার নাফীস।

শাহরিয়ার তাঁর ফেসবুক পেজে তিন পর্বের ধারাবাহিকে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন আইসিএল খেলতে যাওয়ার কারণ। টাকার জন্যই খেলতে গিয়েছিলেন আইসিএল—ক্রিকেটাঙ্গনে এমন একটা কথা বেশ চালু। শাহরিয়ার অবশ্য একমত নন , ‘আমি আইসিএলের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। শুধুমাত্র টাকার জন্য যদি আইসিএল খেলতে যেতাম, তাহলে চুক্তিটা বাতিল করতাম না। আইসিএল কর্তৃপক্ষকে বলতাম, চুক্তি চালিয়ে যাব না, আমাকে টাকা দিয়ে দিন। এখানে তারা গড়িমসি করলে ভারতের আদালতে মামলা করা দেওয়া যেত। শুধু টাকা আয় করতে আইসিএলে খেলতে যাইনি।’

তাহলে কেন আইসিএলে খেলতে যাওয়া, সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শাহরিয়ার, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্থ ছিলাম, ভালো জায়গায় খেলতে চেয়েছিলাম যেন সেখানে ভালো পারফর্ম করতে পারি। মাত্র দেড় মাস খেলেছিলাম। দেড় মাসের চুক্তি অনুযায়ী যে টাকা পাওয়ার কথা সেটাই পেয়েছি। যেটি মোট চুক্তির ৫ শতাংশও নয়। টাকার লোভ থাকলে চুক্তি ধরে রাখতাম, ফিরে আসার জন্য বিসিবির কাছে আবেদন করতাম না।’

ঢাকা ওয়ারিয়র্সের হয়ে ২০০৮ সালে আইসিএলের একটা পুরো পর্ব খেলেছিলেন শাহরিয়াররা। আরেকটির অর্ধেক খেলতেই মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার কারণে থেমে যায় টুর্নামেন্টটি। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া খেলোয়াড়েরা তখন সিদ্ধান্ত নেন দেশের ক্রিকেটে ফিরে আসবেন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ওয়ারিয়র্সের খেলোয়াড়েরা আবেদন করেন বিসিবির কাছে। দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি শাহরিয়ার খোলাসা করেছেন এভাবে, ‘বিসিবির সঙ্গে কীভাবে দূরত্ব ঘোচানো যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেটে কীভাবে ফেরা যায়, ১০ বছরের যে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটা কীভাবে প্রত্যাহার করা যায়—আমরা সমঝোতার চেষ্টা করি। বিসিবি থেকে জানানো হয় আইসিএলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রমাণপত্র দিতে হবে আমাদের। আমরা সেটা দিই।’

১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও আইসিএল থেকে ফেরার পর ৬ মাস দেশের কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি শাহরিয়াররা। পরে অবশ্য সবাই ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরতে পেরেছেন। কেউ কেউ জাতীয় দলে খেলেছেন। খেলেছেন শাহরিয়ারও। ২৪ টেস্ট, ৭৫ ওয়ানডে আর ১ আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি খেলা ৩৫ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার তাই মনে করেন না আইসিএল তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলেছে, ‘২০০৭ সালের শেষ থেকে ২০০৮—খুব কঠিন সময় পার করেছি। সেই ক্ষোভ–দুঃখ থেকেই আইসিএলে যাওয়া। আইসিএল থেকে আসার পর দেশের মাঠে বিশ্বকাপ খেলেছি। আইসিএলের কারণে যে জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে প্রভাব পড়েছে, তা মনে করি না। হ্যাঁ, ২০১৩ সালের পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করেও জাতীয় দলে সুযোগ পাইনি, এটা নিয়ে হতাশা আছে।’