ঢাকা আবাহনীর বিদায়

শেষ পর্যন্ত শেখ কামাল টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ই নিতে হলো ঢাকা আবাহনীকে। ছবি: শামসুল হক
শেষ পর্যন্ত শেখ কামাল টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ই নিতে হলো ঢাকা আবাহনীকে। ছবি: শামসুল হক

প্রাণপণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ! শেষ পর্যন্ত শেখ কামাল টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ই নিতে হলো ঢাকা আবাহনীকে। সেমিফাইনালে উঠতে ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে প্রয়োজন ছিল অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে জয়। কিন্তু গোটা ম্যাচে একতরফা খেলেও গোলই করতে পারেনি অমলেশ সেনের দল। গোলশূন্য এই ম্যাচ ‘বি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়নই করে দিল তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট পাওয়া ইস্টবেঙ্গলকে। ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী।

ইষ্ট বেঙ্গলকে এক পয়েন্ট এনে দিতে অনেকটা কৃতিত্ব তাদের গোলরক্ষক দিব্যেন্দু সরকারের। আবাহনীর আক্রমণের সামনে বাধার দেয়াল তুলে অন্তত চারটি নিশ্চিত সুযোগ বাঁচিয়ে দিলেন। ম্যাচ সেরাও হলেন এই গোলরক্ষক। ম্যাচ যত এগিয়েছে, ততই ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ের ওপর চেপে বসা আবাহনী ওই একজনের সামনে গিয়েই থমকে গেছে—দিব্যেন্দু।
ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য দরাজ প্রশংসা করলেন তাঁর খেলোয়াড়দের, ‘নবীন দল নিয়ে আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি, এটা অবশ্যই ছেলেদের পরিশ্রমের ফসল। দিব্যেন্দু অসাধারণ খেলল। তবে ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে না পারার জন্য আমি খানিকটা দুঃখিত। আমরা আজ মাঠে নেমেছিলাম গোল খাব না এই পণ করে।’
হতাশ আবাহনী কোচ অমলেশ সেন গোল নষ্টকেই দায়ী করলেন, ‘এত এত গোলের সুযোগ নষ্ট করলে জেতা যায় না। স্ট্রাইকারদের উচিত ছিল গোল করা, সেটা তারা করতে পারেনি বলেই টুর্নামেন্ট থেকে আমাদের বিদায় নিতে হলো।’
যদিও সত্তর ভাগের বেশি বল পজেশন ছিল আবাহনীরই। কিন্তু আক্রমণভাগের ব্যর্থতাই সব ‘শেষ’ করে দিয়েছে। চোটগ্রস্ত ফরোয়ার্ড কেস্টার আকন মাঠের বাইরে বসে থাকলেন। তাঁর জায়গায় ওয়াহেদ প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। গোটা দু-এক সুযোগ নষ্ট করে গোলের জন্য দলের হাহাকার বাড়িয়েছেন শুধু।
আকাশি-নীলেরা গোলের প্রথম সুযোগ পেয়েছে ১২ মিনিটে। ডান দিক থেকে তপু বর্মনের লম্বা থ্রো থেকে ওয়াহেদের হেড লাগল পোস্টে। পরপরই পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল প্রায় খেয়েই যাচ্ছিল আবাহনী। ত্রাতা হয়ে এলেন স্টপার সামাদ ইউসুফ। গোললাইন থেকে বলটা বের করে দলকে বাঁচালেন এই ঘানাইয়ান।
ওই বিপর্যয় সামলে আবার ইস্টবেঙ্গলের গোলমুখে আতঙ্ক ছড়াতে থাকল আবাহনী। ডান প্রান্ত দিয়ে ওভারল্যাপ করে ওঠা উইং ব্যাক নাসিরুলের দারুণ একটা শট পোস্টে থাকলে গোল হতে পারত, কিন্তু সেটি গেল বাইরে। পরপর নাসিরের ক্রসে সানডে বলে পায়ে সংযোগ ঘটাতে পারলেন না। পাশে দাঁড়ানো ওয়াহেদও ব্যর্থ।
আক্রমণের ধারায় তপুর লম্বা থ্রো থেকে অধিনায়ক প্রাণতোষের হেড গেল বাইরে। আবাহনী তখন এমনভাবে চেপে ধরল ইস্টবেঙ্গলকে, কলকাতার দলটির রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা! টানা চারটি কর্নার তুলে নিয়েও আবাহনী কাঙ্ক্ষিত গোল পায়নি। ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক দিব্যেন্দু স্যামন ইলিয়াসুর একটা শট দুর্দান্তভাবে পাঞ্চ করলেন।
বিরতির পরপরই সানডের ফ্রি-কিকের সামনে উঠে দাঁড়াল দিব্যেন্দু-দেয়াল! একের পর এক আক্রমণের পসরা সাজিয়ে গোল আর বের করতে পারল না আবাহনী। আশাভঙ্গের বেদনা নিয়েই চারবারের পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়নদের ফিরতে হচ্ছে ঢাকায়।