সাগরপারে অন্য রকম সার্ফিং

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এসে সেলফি তুলেই তা এখন দেওয়া যাবে অনলাইনে l ছবি: প্রথম আলো
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এসে সেলফি তুলেই তা এখন দেওয়া যাবে অনলাইনে l ছবি: প্রথম আলো

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এ সময়টা দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়ে সরগরম। ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সৈকতের লাবণি পয়েন্টে নেমে দেখা গেল অন্য চিত্র। বেড়াতে আসা পর্যটক, স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বালিয়াড়িতে বসে, কেউ পানির কাছে বসানো কিটকট চেয়ারে (পর্যটকদের বসার ছাতাসহ চেয়ার) বসে স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে পার করছেন ব্যস্ত সময়। তাঁরা সেলফি তুলে ছেড়ে দিচ্ছেন ইন্টারনেটে, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে।

.
.

এ দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে বিনা মূল্যে তারহীন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুবিধা থাকার কারণে। ফলে কক্সবাজারে সমুদ্রের ঢেউয়ে চড়ে সার্ফিংয়ের পাশাপাশি ইন্টারনেট সার্ফিংও এখন করা যাচ্ছে।
লাবণি পয়েন্টের বালিয়াড়িতে বসে ফেসবুকে নিজেদের ছবি দিচ্ছিলেন কক্সবাজারের কলেজপড়ুয়া চার শিক্ষার্থী মুন্নি, রোকসানা, সোহেল ও নজরুল। মুন্নি বলেন, কয়েক দিন ধরে সৈকতে চালু হয়েছে ওয়াই-ফাই। সৈকতে নামলে অনেক সময় মুঠোফোনে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। তবে ১৫০ জনের কম ব্যবহারকারী হলে গতি ভালো পাওয়া যায়। বেশি হলে স্পিড স্লো বা ধীরগতি হয়।
১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে লাবণি পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিনা মূল্যের এই ওয়াই-ফাই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ। তিনি এ সময় বলেছিলেন, ডিজিটাল বিপণনের মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটনকে তুলে ধরার জন্যই ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সৈকতসহ পুরো পর্যটন শহরকে বিনা মূল্যের ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

 এর আগে প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা সৈকতের লাবণি ও কলাতলী পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে পৃথক দুটি এবং হিমছড়ি-সংলগ্ন সালসাবিচ পয়েন্টে স্থাপন করা হয় আরেকটি ওয়াই-ফাই রাউটার। এই ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক স্থাপনের কারিগরি কাজটা করেছে ‘আমরা কোম্পানিজ লিমিটেড’।

আমরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফারহাদ আহমেদ বলেন, ‘১০০ এমবিপিএস গতির প্রতিটি রাউডারে একসঙ্গে এক হাজার মানুষ যুক্ত হতে পারবেন। একসঙ্গে ১৫০ জন পর্যটক ব্যবহার করলে গতি ভালো পাবেন। তিনটি পয়েন্টে অন্তত ৪৫০ জন পর্যটক ভালো গতিই পাবেন। সৈকতের অন্যান্য স্থানেও বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই রাউটার বসানোর কাজ চলছে।’

কলাতলী সৈকতের একটি হোটেলের সামনে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলেন ঢাকা থেকে আসা একদল তরুণ। সমুদ্রসৈকতকে পেছনে রেখে তাঁরা একাধিক সেলফি তোলেন। তারপর সেই সেলফি দিয়ে দেন ফেসবুকে। তারপর ভিডিও কলের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে দিচ্ছিলেন আড্ডা। তরুণদের একজন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম আজাদ বলেন, ‘সৈকতে ফ্রি ওয়াই-ফাই চালু করায় পর্যটকেরা লাভবান হচ্ছেন বেশি। সৈকতের পাশের হোটেল-মোটেলগুলোতেও এই নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। তবে মাঝেমধ্যে গতি কমে যায়। তখন ভিডিও বা ছবি অনলাইনে দিতে সমস্যা হয়।