ওষুধ বানাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা!

গ্রিক উপকথায় সেন্টরকে দেখানো হয়েছে এক জাদুকরী প্রাণী হিসেবে, যার অর্ধেক শরীর মানুষের, বাকি অর্ধেক ঘোড়ার। অধ্যাপক হপকিন্সের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিজ্ঞানকে সেন্টরদের মতো শক্তিশালী করবে।
গ্রিক উপকথায় সেন্টরকে দেখানো হয়েছে এক জাদুকরী প্রাণী হিসেবে, যার অর্ধেক শরীর মানুষের, বাকি অর্ধেক ঘোড়ার। অধ্যাপক হপকিন্সের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিজ্ঞানকে সেন্টরদের মতো শক্তিশালী করবে।

ওষুধ তৈরি এখন বেশ বড় শিল্প। মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়, গবেষণা থেকে অনুমিত ফল না পেলে ক্ষতির পরিমাণটাও বড়ই হয়। স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ হয়ে পড়ে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্যই বিজ্ঞানীরা চাইছেন দ্রুততম সময়ে কার্যকর ওষুধ তৈরি করতে। 

এ লক্ষ্যে কোমর বেঁধে নেমেছে গ্ল্যাক্সো-স্মিথক্লাইন (জিএসকে), জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো বড় কোম্পানিগুলো। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে ওষুধ তৈরি করতে চাইছে তারা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ওষুধ আবিষ্কারক কোম্পানি এক্সাইনশিয়ার প্রধান, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু হপকিন্স সম্প্রতি জিএসকের সঙ্গে ৩৩ মিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তিনি মনে করেন, এই ‘যৌথ প্রচেষ্টা’র মাধ্যমে এক-চতুর্থাংশ সময়ে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব।
মানুষ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যৌথ প্রচেষ্টার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেন্টর দল’। গ্রিক উপকথায় সেন্টরকে দেখানো হয়েছে এক জাদুকরী প্রাণী হিসেবে, যার অর্ধেক শরীর মানুষের, বাকি অর্ধেক ঘোড়ার। অধ্যাপক হপকিন্সের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিজ্ঞানকে সেন্টরদের মতো শক্তিশালী করবে।

ওষুধ আবিষ্কারের খরচ অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।
ওষুধ আবিষ্কারের খরচ অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।

বিজ্ঞানীরা প্রায়ই রোগকে ‘টার্গেট’ এবং অণু-পরমাণুকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে সম্বোধন করেন। একেকটি টার্গেটে বেশ কিছু সম্ভাবনাময় অস্ত্রের ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ওষুধ তৈরি করা হতো। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগত বেশি, সাফল্যের হারও ভালো ছিল না।
পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের কর্মকর্তা পামেলা স্পেন্স মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ‘এই প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজলভ্য করা যাবে। কোনটি কাজ করতে পারে আর কোনটি করবে না, তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুপারকম্পিউটারের মাধ্যমে জানা যাবে। একবার সম্ভাবনাময় পরমাণুগুলো খুঁজে পাওয়া গেলে গবেষণার খরচ ও অপচয় কমিয়ে আনা সম্ভব। সেগুলো নিয়ে তখন নিবিড় গবেষণা চালানো যাবে। এভাবে সাফল্যের হারও বাড়বে কয়েক গুণ।’
প্রফেসর হপকিন্স বলেন, ‘আমরা অনিশ্চয়তাটিকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছি না, কিন্তু এটা খুবই বড় এবং ঝামেলাপূর্ণ কাজ...একেকটি ওষুধ তৈরি করতে হয়তো প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েক পয়সা খরচ হয়। কিন্তু সেই ওষুধ আবিষ্কার করাটা ভীষণ খরচের ব্যাপার।’

প্রফেসর অ্যান্ড্রু হপকিন্স
প্রফেসর অ্যান্ড্রু হপকিন্স

এই আবিষ্কারের ক্ষেত্রটায় কাজ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আশা করা হচ্ছে, ‘টার্গেট’ থেকে ওষুধ তৈরি পর্যন্ত মাঝের প্রক্রিয়াটায় প্রায় ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়, সময় লাগে প্রায় ৫ বছর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করলে খরচটা ৩৩ শতাংশে নামিয়ে আনা যাবে। সময়ও লাগবে এক বছর। সূত্র: বিবিসি।