বলুন তো সেই তরুণের বয়স কত?

গণিতের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর চট করে বলে দেওয়া যায়, যদি আমরা একটু মাথা খেলাতে পারি। যেমন ধরুন একটি সহজ প্রশ্ন। বলুন তো ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯—এই ১০টি অঙ্কের কোনোটি দুবার ব্যবহার না করে গঠিত ৫ অঙ্কের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা দুটির যোগফল কত? খুব সহজ, তাই না? বৃহত্তম সংখ্যাটি তো অবশ্যই ৯৮৭৬৫। কিন্তু ক্ষুদ্রতম সংখ্যাটি বের করার সময় মনে রাখতে হবে, সংখ্যাটির প্রথমে ০ ব্যবহার করা যাবে না। তাই ক্ষুদ্রতম সংখ্যাটি হবে ১০২৩৪। এবার এ দুটি সংখ্যার যোগফল বের করা খুব সহজ। সংখ্যা দুটির ওপর হালকা নজর বুলিয়ে নেওয়াই যথেষ্ট। যোগফল ১০৮৯৯৯।
এ রকম আরেকটি মজার ধাঁধা দেখুন। ৬, ৮, ১২, ২৪—এই চারটি সংখ্যার মধ্যে কী কী মিল আছে, বলুন তো? একটু চিন্তা করলেই কিছু সাধারণ মিল বলা যায়। যেমন এদের প্রত্যেকটিই জোড় সংখ্যা এবং ২ দিয়ে বিভাজ্য। শুধু তা-ই নয়, এদের প্রতিটি ২৪-এর একটি উৎপাদক। মানে সংখ্যাগুলোকে ২৪ দিয়ে ভাগ করলে নিঃশেষে বিভাজ্য।
তবে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এদের প্রতিটি থেকে ১ বিয়োগ করলে একটি মৌলিক সংখ্যা (প্রাইম নম্বর) পাওয়া যায়। যেমন (৬ - ১) = ৫, একটি মৌলিক সংখ্যা। একইভাবে (৮ - ১) = ৭, (১২ - ১) = ১১, (২৪ - ১ ) = ২৩। এগুলো সব মৌলিক সংখ্যা।
আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো সংখ্যাগুলোকে উল্টিয়ে লিখলে (রেসিপ্রোকাল), সেগুলো একটি হারমোনিক প্রোগ্রেশন (বিশেষ ধরনের গাণিতিক ধারা) সৃষ্টি করে। যেমন: ৬-এর রেসিপ্রোকাল = ১/৬, ৮-এর রেসিপ্রোকাল = ১/৮, ১২-এর রেসিপ্রোকাল = ১/১২, ২৪-এর রেসিপ্রোকাল = ১/২৪।
এই চারটি সংখ্যাকে আমরা এভাবে লিখতে পারি: ৪/২৪, ৩/২৪, ২/২৪ ও ১/২৪। লক্ষ করুন, সংখ্যাগুলোর লব ৪, ৩, ২, ১। এটি এমন একটি ধারা, যাকে বিপরীতক্রমে দেখলে (১, ২, ৩, ৪) একটি যোগোত্তর ধারা (অ্যারিথমেটিক প্রোগ্রেশন) পাওয়া যায়।
আজকের প্রশ্ন
একজন তরুণের বয়সের ৩ গুণের সঙ্গে ২০ যোগ করলে তাঁর বয়সের ৪ গুণ হয়। বলুন তো, সেই তরুণের বয়স কত?

গত রোববারের ধাঁধার উত্তর
প্রশ্নটি ছিল এ রকম: তিন অঙ্কের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছোট কোন দুটি সংখ্যা ৫ ও ৭ উভয় সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য?
উত্তর: ৯৮০ ও ১০৫
এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রায় সবাই দিয়েছেন। সবাইকে ধন্যবাদ।
কীভাবে উত্তরটি পেলাম
এর উত্তর বের করার জন্য আমরা প্রথমে ৫ ও ৭-এর ল.সা.গু. বের করি। যেহেতু ৫ ও ৭ দুটিই মৌলিক সংখ্যা (প্রাইম নম্বর), তাই এদের গুণফলই হবে সংখ্যা দুটির ল.সা.গু., সুতরাং ল.সা.গু. = ৫*৭ = ৩৫। ১০১ থেকে ৯৯৯ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোই তিন অঙ্কের। প্রথমে ৯৯৯–কে ৩৫ দিয়ে ভাগ করি। অবশিষ্ট ১৯। সুতরাং সবচেয়ে বড় সংখ্যাটি = (৯৯৯ - ১৯) = ৯৮০। এবং ১০০–কে ৩৫ দিয়ে ভাগ করলে যেহেতু অবশিষ্ট থাকে ৩০, তাই ১০০-এর সঙ্গে আর মাত্র ৫ যোগ করলেই তা ৩৫ দিয়ে বিভাজ্য ক্ষুদ্রতম সংখ্যাটি হবে। (১০০ + ৫) = ১০৫ হলো নির্ণেয় ক্ষুদ্রতম সংখ্যা।