ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস, না অন্য কিছু?

ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস
ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস

মোবাইলে এখন অনেকেই গেম খেলতে পছন্দ করেন। ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানসের তো বিশ্বজুড়ে ভক্তও অনেক। বাংলাদেশেও গেমটি দারুণ জনপ্রিয়। কিন্তু সব গেম তো আর ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানসের মতো জনপ্রিয় হয় না। তাই হাবিজাবি গেম তৈরি করে লাভ কী? ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানসের নির্মাতা সুপারসেল বিষয়টি খুব ভালো করে বুঝেছে। তাই গুটিকয়েক গেম নিয়ে সামনে এগোনোর পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। সুপারসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলকা পানানেন গত শুক্রবার বলেন, বিশ্বের সেরা ১০টি গেমের মধ্যে যেগুলো ঢুকতে পারবে না, তা আর চালাবে না সুপারসেল।

গত বছরে অ্যাপলের আইওএস ও গুগলের প্লেস্টোর থেকে সর্বোচ্চ আয় করা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গেম প্রকাশক হিসেবে উঠে এসেছিল ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে আছে শুধু চীনের টেনসেন্ট।

সুপারসেলের তৈরি জনপ্রিয় চারটি গেম হচ্ছে ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস, ক্ল্যাশ রয়্যাল, বুম বিচ ও হে ডে। সব কটি মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে সুপারসেলের। টেনসেন্টের প্রধান নির্বাহী মার্টিন লাউ পর্যন্ত বলেছেন, রিয়েল টাইম মাল্টিপ্লেয়ার গেম ক্ল্যাশ রয়্যালের ভক্ত তিনি।

সম্প্রতি ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্ল্যাশ টেক স্টার্টআপ সম্মেলনে পানানেন বলেন, ‘সুপারসেল ১০টি গেম তৈরি করলেও এর মধ্যে একটি ছেড়েছে। এভাবেই চলবে। খুব বেশি গেম ছাড়া হবে না। বিশ্বের সেরা ১০টি গেমের মধ্যে যে গেম যেতে পারবে না, তা আমরা ছাড়তে চাই না।’

২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সুপারসেল। ২০১৬ সালে এর মূল্য দাঁড়ায় এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার। গত বছরে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করে সুপারসেল, যার মধ্যে মুনাফা দাঁড়ায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি।

২০১২ সালে ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস নামের অ্যাপ্লিকেশন বা মোবাইল গেমটি চালুর পর থেকেই এটি শীর্ষ আয়ের খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ গেমটিতে গেমারকে ক্ল্যান বা একটি দলের সদস্য হয়ে অন্য ক্ল্যানের সঙ্গে মধ্যযুগীয় কায়দায় কাল্পনিক একটি জায়গায় লড়াই করতে হয়।

টেনসেন্টের প্রধান নির্বাহী মার্টিন লাউ বলেন, সুপারসেলে বিনিয়োগের সুযোগ হাতছাড়া করে আফসোস করছেন তিনি। ২০১২ সালে সুপারসেলের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনতে চেয়েছিল টেনসেন্ট। তবে সুপারসেল আরও বেশি শেয়ার বেচতে আগ্রহী ছিল। ওই সুযোগ নেননি তিনি। প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের ভুল করেছেন!

২০১৩ সালে জাপানের সফটব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে সুপারসেল। গত বছর অবশ্য সফটব্যাংকের শেয়ার কিনেছে টেনসেন্ট।

টেনসেন্ট হচ্ছে চীনের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। গত মাসে বাজারমূল্যের দিক থেকে ফেসবুককে ছাড়িয়ে গেছে টেনসেন্ট। প্রথম এশীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বাজারমূল্য ছাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। টেনসেন্টের মালিকানায় রয়েছে চীনের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ উইচ্যাট। প্রতি মাসে প্রায় ১০০ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে উইচ্যাটের। এ ছাড়া লিগ অব লিজেন্ডস ও অনার্স অব কিংসের মতো জনপ্রিয় গেম প্রতিষ্ঠানটির দখলে রয়েছে। পাশাপাশি টেনসেন্টের আছে স্ন্যাপ ইনকরপোরেটেড এবং অ্যাপভিত্তিক পরিবহনসেবা প্রতিষ্ঠান লিফট। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলাতেও বিনিয়োগ রয়েছে টেনসেন্টের।

প্যানানেন বলেন, ‘চীনের বাজারে ঢুকতে পারে আমাদের জন্য বড় সুবিধা।’

লাউ ক্ল্যাশ রয়্যালের ভক্ত হিসেবে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ খেলোয়াড়ের তালিকায় ঢুকে পড়েছিলেন। তথ্যসূত্র: রয়টার্স।