বলুন তো এটি মৌলিক সংখ্যা কি না?

মূল ধাঁধায় যাওয়ার আগে আসুন গণিতের দুটি সহজ সমস্যার সমাধানের পদ্ধতি দেখে নিই। 

ধরুন কেউ প্রশ্ন করলেন, ৩.১ বড় নাকি ৩.০৯ বড়? এর উত্তর কী হবে? খুব কঠিন। কারণ আমরা জানি দ্বিতীয় রাশিটির যদি দশমিকের পর এক ঘর পর্যন্ত আসন্ন মান ধরি, তাহলে ৩.০৯ = ৩.১। তাহলে তো দুটোই সমান। কিন্তু আবার যদি এভাবে হিসাব করি যে দুটি সংখ্যার প্রথম অঙ্ক দুটি ৩, দুটোই সমান। এখন পরীক্ষা করে দেখি দশমিকের পর কী আছে। সেখানে প্রথম ঘরে প্রথম সংখ্যায় আছে ১, আর দ্বিতীয় সংখ্যায় ০। যেহেতু ১ বড়, তাই বলতে হয় প্রথম সংখ্যাটি দ্বিতীয়টির চেয়ে বড়! সেই একই ধরনের হিসাবে আমরা কি বলতে পারি যে, ১>০.৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯......৯? এক অর্থে সেটা বলা যায়। কিন্তু গণিতে লিমিট বলে একটা কথা আছে। যেহেতু ডান পাশের অঙ্কটির দশমিকের পর অসীম সংখ্যক ৯ আছে, তাই যখন ৯-এর সংখ্যা অসীম, তখন এর লিমিট মান বা আসন্ন মান হবে ১। সেই অর্থে গণিতের মান নির্ণয়ে আমরা বলতে পারি ০.৯৯৯৯৯৯...৯ = ১ (প্রায়)।

আচ্ছা, এবার বলুন তো তিন দ্বারা বিভাজ্য চার অঙ্কের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছোট সংখ্যা দুটির বিয়োগফল কত? এখানে আমরা বলতে পারি ৩ দ্বারা বিভাজ্য চার অঙ্কের বৃহত্তম সংখ্যা ৯৯৯৯, কারণ এর অঙ্কগুলোর যোগফল, (৯ + ৯ + ৯ + ৯) = ৩৬, এবং (৩ + ৬) = ৯, যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য। এখন চার অঙ্কের ক্ষুদ্রতম সংখ্যা ১০০০, যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য নয়, কারণ এর অঙ্কগুলোর যোগফল ৩ দিয়ে বিভাজ্য নয়। একে ৩ দিয়ে ভাগ করলে ১ অবশিষ্ট থাকে। তাই এর সঙ্গে ২ যোগ করলে পাই ১০০২, যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য। কারণ এর অঙ্কগুলোর যোগফল, (১ + ০ + ০ + ২) = ৩, যা অবশ্যই ৩ দ্বারা বিভাজ্য। সুতরাং এটাই চার অঙ্কের ক্ষুদ্রতম সংখ্যা, যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য। এই দুই সংখ্যার বিয়োগফল, (৯৯৯৯ - ১০০২) = ৮৯৯৭

এ সপ্তাহের ধাঁধা
মৌলিক সংখ্যার ছক না দেখে, শুধু কাগজে কলমে হিসাব-নিকাশ করে বলুন তো, ১০৯ মৌলিক সংখ্যা কি না? 
কাগজ কলম নিয়ে বসে যান। খুব সহজেই এ ধাঁধার উত্তর বের করা যায়। চেষ্টা করুন। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই-মেইলে উত্তর পাঠিয়ে দিন।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: (১ + ২ + ৩ + ..... + ক) = ৩৭৮ হলে ক-এর মান কত?
উত্তর
ক = ২৭
অনেকেই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
আমরা সমান্তর ধারার যোগফল বের করার পদ্ধতিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেই একই সূত্র ব্যবহার করে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর বের করতে পারি। এখানে প্রথম পদ, প্রতি পদের ব্যবধান ও যোগফল জানি। যেহেতু প্রতি পদের মধ্যে পার্থক্য ১, অর্থাৎ ধারাটি ক্রমিক সংখ্যার যোগফল, তাই পদসংখ্যাটিও জানা হয়ে গেল। সেটি নিশ্চয়ই ‘ক’। এখন ক-এর মান বের করতে হবে। যেহেতু যোগফল দেওয়া আছে, তাই আমরা বলতে পারি, (১ + ক)Xক/২ = ৩৭৮, অথবা, (১ + ক)Xক = ৩৭৮X২ = ৭৫৬। এখন আমরা যদি ৭৫৬ কে এমন দুটি ক্রমিক সংখ্যার উত্পাদকে ভাগ করতে পারি যাদের মধ্যে পার্থক্য ১, তাহলেই আমাদের উত্তর বের করা সহজ হয়। এখানে ৭৫৬ = ২X২X৩X৩X৩X৭ = (২X২X৭)(৩X৩X৩) = ২৮X২৭। সুতরাং আমরা বলতে পারি, (১ + ক)Xক = ২৮X২৭। অথবা ক = ২৭।
অবশ্য বীজগণিতের নিয়ম ব্যবহার করেও আমরা উত্তর বের করতে পারি। সেটা হয়তো একটু জটিল হবে।
আমরা দেখছি (১ + ক)Xক/২ = ৩৭৮। অথবা (১ + ক)Xক = ৭৫৬
অথবা ক২ + ক - ৭৫৬ = ০। এখন এই সমীকরণ থেকে ক-এর মান বের করা যায়।

আব্দুল কাইয়ুম: সম্পাদক, মাসিক বিজ্ঞান ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা