শিশুদের খেলনা হিসেবে মুঠোফোন নয়

শিশুদের হাতে মুঠোফোন নয়
শিশুদের হাতে মুঠোফোন নয়

খেলনা হিসেবে শিশুদের হাতে মুঠোফোন তুলে দেওয়ার পক্ষে নন মার্কিন মনোবিদেরা। তাঁদের মতে, এতে শিশুদের মানসিক বৃদ্ধির পরিবর্তে মন-সংযোগের ব্যাঘাত ঘটে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া।
মার্কিন মনোবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, স্মার্টফোন নিয়ে শিশুদের খেলতে দিলে তাঁদের মস্তিষ্কের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে, তাই এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি।
সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই বছর বা তার চেয়ে কমবয়সী ২৫ শতাংশ শিশুর একটি করে স্মার্টফোন রয়েছে।
সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন অভিভাবকেরা মনে করেন শিশুদের স্মার্টফোন দেওয়া হলে তা শিক্ষার উপকরণ হিসেবে কাজ করবে। তবে, এ ধারণার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শিশুদের খুব কম বয়সে মুঠোফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হলে তা থেকে কিছু শেখে না তারা বরং এতে তাদের মন-সংযোগের ব্যাঘাত ঘটে। শিশুকালে স্মার্টফোনের কারণে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়লে পরবর্তীতে বড় হয়েও তা বয়ে বেড়াতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিদরা জানিয়েছেন, শিশুকাল হলে মস্তিষ্কের উন্নয়নের উপযুক্ত সময়। এসময় স্মার্টফোনের ব্যবহারে তার কথা বলা, পারিবারিক যোগাযোগ এবং শিক্ষা দক্ষতার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

‘সিবিএস দিস মর্নিং’ নামের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মনোবিদ গেইল সল্ট জানিয়েছেন, ছোটবেলায় শিশুদের মুঠোফোন ধরিয়ে দেওয়া মানে তাদের ক্ষতি করা। শিশুরা যাতে বিরক্ত না হয় সেজন্য তাদের মন ভোলাতে অনেক অভিভাবক মুঠোফোন তুলে দেন।

বিশেষজ্ঞ গেইল বলেন, শিশুর ছোটবেলা হচ্ছে তার শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধির সময়। এসময় তার কথা বলা ও কথা শোনার সময়। কিন্তু এসময় যদি তারা প্রযুক্তিপণ্য আসক্তি গড়ে তোলে তাহলে তাদের বুদ্ধিবিকাশে সমস্যা হতে পারে। শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য তাদের সঙ্গে খেলাধুলা জরুরি।

গবেষকেরা বলেন, শিশুরা কোনো পণ্য ছুঁড়ে মারবে, সেটাকে ভাঁজ করবে, কোনো বস্তু স্পর্শ করবে, তা নিয়ে খেলবে এভাবেই তার মস্তিষ্ক উন্নয়ন হবে। এসময় শিশু যদি ইউটিউব ভিডিও দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তবে তা মস্তিষ্ক উন্নয়নে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, অভিভাবকদের শিশুদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়ার আগে সতর্ক হতে হবে কারণ এ সময়টা তাদের বেড়ে ওঠার সময়, মুক্তচিন্তার সময় নয়।