ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদের অভাব

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তি যথেষ্ট উন্নত হলেও তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) পেশাজীবীদের মধ্যে দক্ষতার অভাব রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা আইটি গভর্নেন্স নিয়ে। এ কারণেই মাঝেমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা ভেঙে অর্থ আত্মসাতের খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান আলম। তিনি আরও বলেন, মাত্র ১৮ শতাংশ বাংলাদেশি ব্যাংকে সনদপ্রাপ্ত তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী কাজ করেন। এঁদের অনেকেরই নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা নেই। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘সাইবার সুরক্ষা: হামলার অপেক্ষা না করে ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে সাইবার প্রতিরোধ গড়ে তোলা, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং পরবর্তী ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আইটি পেশাজীবীদের জ্ঞানার্জন এবং সচেতনতা বাড়াতে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ ও বিআইবিএম যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বলেন, নিরাপত্তা মোকাবিলা এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ও সচেতনতা।
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার। তিনি বলেন, নিজেদের আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে পারলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই অধিবেশনে অংশ নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আইটি পেশাজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং নতুন নীতিমালা সম্পর্কে নিয়মিত হালানাগাদ করার দাবি জানান উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা। সেমিনারে বক্তারা জানান, হ্যাকারদের লক্ষ্য অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই হামলা প্রথমেই শতভাগ বন্ধ করা হয়তো সম্ভব হবে না, তবে এখন থেকেই প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত নিজস্ব হ্যাকার দল প্রস্তুত করা। যারা নিয়মিত বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতা খতিয়ে দেখবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে দেবে।
সেমিনারের শেষ পর্বে বিআইবিএমের এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক এস এ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং তপন কান্তি সরকারের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।