তথ্যপ্রযুক্তিতে এক টাকা বিনিয়োগে লাভ ৬৬৩

বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করলে সবচেয়ে বেশি লাভ পাবে। এই খাতে এক টাকা বিনিয়োগে লাভ বয়ে আনবে ৬৬৩ টাকার। আর খর্বকায় শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য খাতে এক টাকা বিনিয়োগ করলে ঘরে উঠবে ১৮ টাকার সুফল। কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টার এক বিশ্লেষণ এ সব কথা বলেছে।

আজ রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘নোবেল নাইট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের প্রেসিডেন্ট বিয়র্ন লোমবোর্গ বিনিয়োগ ও লাভের এ হিসেব দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচি ও কোপেনহেগেন কনসেনসাস যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনায় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ফিন কিডল্যান্ড বলেন, ‘জীবনকে সুন্দর করে এমন বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে পছন্দ করি।’ তিনি বলেন, সীমিত সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা বড় ধরনের নীতিগত বিতর্কের বিষয়। তবে বিনিয়োগ করার জন্য শতাধিক লক্ষ্য (গোল) যদি নির্ধারণ করা হয় তবে তাদের লক্ষ্য বলা যাবে না। লক্ষ্য নির্ধারণে অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে।
কম খরচের সমাধানের গুরুত্ব তুলে ধরে ফিন কিডল্যান্ড জানান, জলবায়ু পরিবর্তন বা লাতিন আমেরিকার অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের অগ্রাধিকার ঠিক করার নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। তবে কোনো একটি দেশের অগ্রাধিকার ঠিক করার কাজে যুক্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা এই প্রথম।
উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত, তা চিহ্নিত করতে গবেষণা করছে কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টার ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। সেই গবেষণার বিশ্লেষণ থেকে কিছু বিষয় উপস্থাপন করেন বিয়র্ন লোমবোর্গ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। কিন্তু অনেক যুতসই সমাধানও আছে। পুষ্টি, আর্সেনিক এ সব সমস্যা সমাধানে এক টাকা বিনিয়োগ করলে কী সুফল পাওয়া যাবে তা তুলে ধরেন বিয়র্ন লোমবোর্গ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ একটু দেরিতে শুরু যাত্রা শুরু করলেও এখন অবস্থা অনেক ভালো। বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বিষয়ক মূল্যায়নও তাঁর ভালো লেগেছে, শুধু ভূমি বিষয়ক অংশটুকু ছাড়া।
এটুআই কর্মসূচির নীতি পরামর্শক আনির চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, গবেষক ও বিশ্লেষক দলের কাছ থেকে নীতি নির্ধারকদের জন্য নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ।
মুক্ত আলোচনায় অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, অগ্রাধিকার নির্ধারণে মানব উন্নয়ন, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সুবিধা এসব বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
গবেষকেরা আর্সেনিক বিষয়ে ভুল তথ্য ব্যবহার করেছেন বলে দাবি করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে এটুআই কর্মসূচি ও কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।