প্রথম আলোর পরামর্শ সভা কাউন্সেলিং মাদককে 'না' বলতে শক্তি জোগায়

পরামর্শ, উপদেশ, মন্ত্রণা মাদককে ‘না’ বলার মানসিক শক্তি অর্জনে সহায়তা করে। তাই মাদকাসক্তদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হলে নিয়মিত কাউন্সেলিং (পরামর্শ বা উপদেশ বা মন্ত্রণা) করতে হবে। একবার মাদক ছাড়ার পর পুনরায় মাদকাসক্তি ঠেকাতেও কাউন্সেলিং জরুরি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে এক মাদকবিরোধী পরামর্শ-সহায়তা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। প্রথম আলোর মাদকবিরোধী আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে। মাদকাসক্ত সন্তানদের কীভাবে মাদক থেকে দূরে রাখতে পারবেন অনুষ্ঠানে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চান বেশ কয়েকজন অভিভাবক। অনুষ্ঠানে তাঁদের মাদকাসক্ত সন্তানেরাও উপস্থিত ছিলেন।
একজন মা বলেন, তাঁর ছেলে ১০ বছর ধরে মাদকাসক্ত। ছেলেকে চিকিৎসা করানোর পর ১০ মাস সুস্থ ছিলেন। এ সময় মাদক নেননি। তারপর আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। একজন বাবা বলেন, তাঁর মেয়ে ১৪ বছর ধরে মাদকাসক্ত। ওই মেয়ে একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তাঁর ১৪ মাস বয়সের একটি সন্তানও আছে। বহুবার চেষ্টা করেও তাঁকে বিশেষজ্ঞের কাছে নেওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামাল বলেন, যেসব মাদকাসক্ত ব্যক্তি কাউন্সেলিং করাতে চান না, তাঁদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তাঁদের একটু বেশি সময় দিতে হবে। কেন তিনি মাদক নিচ্ছেন, তা জানতে হবে।
মনোরোগ চিকিৎসক সিফাত-ই-সাঈদ বলেন, জোর করে কাউকে কাউন্সেলিং করালে তাতে ভালো ফল পাওয়া যায় না। কাউন্সেলিংয়ের জন্য মাদকাসক্তদের উৎসাহিত করতে হবে। অন্য মনোরোগ চিকিৎসক মারুফ মুন্তাসির বলেন, মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে সেরে ওঠার পরও পুনরায় মাদকাসক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সেরে উঠেছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য কাউন্সেলিং জরুরি।
মাদক-নির্ভরশীলতার চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ক্রিয়ার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রথমবার চিকিৎসা গ্রহণকারীদের ৪০ শতাংশ আর মাদক নেন না। অন্যরা আবার মাদক নেন। তবে চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং করা হলে তাঁরাও মাদকমুক্ত হন।
প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান রওশনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক আহমেদ হেলাল ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র আপন-এর পরিচালক ব্রাদার রোনাল্ড ড্রাহোজাল বক্তব্য দেন।