নীল রঙের একটি কম্বল গায়ে জড়িয়ে ৮৬ বছর বয়সী ছামেনা বেগম বলে উঠলেন, ‘এক কাপড়ে জাড় (শীত) মইরছে না। এতক্ষণে আরাম পানু বারে’। হাড়কাঁপানো এই শীতে একখানা করে কম্বল পেয়ে ২০০ শীতার্ত নারী-পুরুষের অভিব্যক্তি ছিল কমবেশি তাঁর মতোই।
গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রসাদপাড়া গ্রামে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে রাজশাহী বন্ধুসভা, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার সদস্যরা শীতার্তদের মাঝে ২০০ কম্বল বিতরণ করেন।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পার্শ্ববর্তী আলোকছত্র উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র দাস, সহকারী শিক্ষক মাহাবুব হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আনসার আলী, প্রসাদপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন, ব্যবসায়ী এমরান আল ও এরশাদ আলী।
শিক্ষক গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রথম আলো থেকে আমরা শুধু খবরই পাই না। শীতবস্ত্রও পাচ্ছি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দুর্যোগের সময় ত্রাণ সরবরাহ করার খবর পাই। প্রথম আলো অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের পাশে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াড, ভাষা প্রতিযোগ, বিজ্ঞান জয়োৎসবসহ অনেক কিছু করে। তিনি বলেন, দুদিন আগে এই এলাকায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। এখনো তাপমাত্রা অনেক নিচে রয়েছে। এ সময় এই নিভৃত গ্রামে প্রথম আলোর বন্ধুসভার সদস্যরা এতগুলো কম্বল নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। এরাই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধু।
অনুষ্ঠানে কম্বল নিতে এসেছিলেন প্রায় ৯০ বছর বয়সী ওলেজান ও দেবেন্দ্র নাথ দাস। হাতে একখানা গরম কাপড় পেয়ে তারাও তাদের ভালো লাগার কথা জানান। শীতে ওলেজান এতই কাহিল ছিলেন যে তিনি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। তিনি কম্বলখানা বগলে জড়িয়ে বসে পড়েন। দেবেন্দ্র নাথ দাস বলেন, ‘ভগবান তোমাদের ভালো করুক বাবা।’
অনুষ্ঠানে রাজশাহী বন্ধুসভার বন্ধু ফারুক হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, বেলাল উদ্দিন, সোহানুর রহমান, সাব্বির খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধু মোশাররফ হোসেন, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধু হায়দার আলী, মেজবাউল ইসলাম, জারিন তাসনিম, আশরাফুল ইসলাম ও জাফির আহাম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।