বার্ধক্যের কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না গিরিবালা (৭০)। শীতে কাতর হয়ে গৃহকোণে পড়ে থাকেন। গত মঙ্গলবার রাতে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে গিরিবালার ঘরে গিয়ে তাঁর গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। মুখে কথা নেই তাঁর। বন্ধুসভার সদস্যদের গায়ে হাত বুলিয়ে বুঝিয়ে দিলেন নিজের সন্তুষ্টির কথা।
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্ধুসভার সদস্যরা ওই রাতে ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ৪০ শীতার্ত ব্যক্তির মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। কম্বল পেয়ে আরেক বৃদ্ধ তুলশী বালার অভিব্যক্তি, ‘তোমরা মোর কষ্ট নিবারণ করলেন বাহে, তোমার অনেক ভালো হইবে, এইখান পেয়া মোর খিব (খুব) উপকার হইল।’
নীলফামারী বন্ধুসভার সদস্যরা এর আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুস্থ শীতার্ত ব্যক্তিদের তালিকা সংগ্রহ করেন। পরে গতকাল বুধবার বেলা একটার দিকে জেলার জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রামে ৬০টি শীতার্ত পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। পরে বিকেলে ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত বিভিন্ন গ্রামের ১০০টি দুস্থ পরিবারের কাছে কম্বল পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
কনকনে শীতের মাঝে কম্বল পেয়ে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের মসজিদপাড়ার হজরত আলীর (৭০) উচ্ছ্বাস, ‘না চাইতে তোমরা নিজে আসি হামাক কম্বল দিলেন, হামরা খুব খুশি হইছি। এই কম্বল গাওত দিয়া আইজ মোর ভালো ঘুম হইবে।’
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম, প্রথম আলো নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান, নীলফামারী বন্ধুসভার সভাপতি প্রিয়াঙ্কা রায় প্রমুখ।
এ ছাড়া গতকাল প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের বাগডোকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শীতার্ত ব্যক্তিদের মাঝে দেড় শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
আগের রাতে বন্ধুসভার সদস্যরা ঘরে ঘরে গিয়ে গরিব ও শীতার্ত ব্যক্তিদের মাঝে কম্বলের স্লিপ তুলে দেন। এ কাজে অংশ নেন সভাপতি আসাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান, যুগ্ম সম্পাদক আবিদা সুলতানা, সহসভাপতি রেজাউল করিম প্রমুখ। আর গতকাল বিকেলে বিদ্যালয় মাঠে দুস্থ ব্যক্তিদের হাতে কম্বল তুলে দেন ওই স্কুলের শিক্ষক আবদুল মালেক, আনিছুল হক, প্রথম আলোর সৈয়দপুর প্রতিনিধি এম আর আলম।
কম্বল নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব রেজিয়া বেওয়ার বলেন, ‘জারের (শীতে) কষ্ট থেকে থাকি বাঁচিম এবার।’