গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালায় ত্রাণ বিতরণ

‘হামরা গরিব মানুষ। টাকা দিয়ে পড়ানো হামাঘেরে সম্ভব লয়। হামরা যখন শুনতে পানু এ স্কুলত পড়াতে টাকাপয়সা লাগে না, তখন হামার বেটিকে ভর্তি করে দিনু। ভর্তির পর হামি মেলা জিনিস উপহার পাইছি। কম্বল, মশারি, ঈদের সময় পোশাক, স্কুলড্রেস আবার আজকা করোনাভাইরাসের জন্য ত্রাণও পাইলাম। হামি খুব খুশি হয়ছি।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় দেওয়া ত্রাণসামগ্রী পেয়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুড়িহারী-কামদেবপুর আলোর পাঠশালার এক শিক্ষার্থীর বাবা মিস্ত্রি কিস্কু।

করোনা পরিস্থিতিতে রোববার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণের খবর শুনে শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরাও ছুটে এসেছিলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

এই ব্যবস্থাপনা দেখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদ আহম্মেদ বলেন, কোনো বিদ্যালয় করোনা সংকট মোকাবিলার জন্য ত্রাণ দিচ্ছে, তা তিনি এই প্রথম দেখলেন। তাঁর খুব ভালো লেগেছে। বিদ্যালয়ের কার্যক্রমেরও প্রশংসা করে তিনি বলেন, সুযোগ হলে ভবিষ্যতে তিনিও এই বিদ্যালয়কে সহযোগিতা করবেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, করোনা প্রতিরোধে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সচেতন থাকার পাশাপাশি এলাকার প্রত্যেক মানুষেরও সচেতন থাকা আবশ্যক। সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি প্রথম আলো যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, এ জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বজলুর রহমান, নিয়ামতপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান, ইউপি সদস্য মো. মাসুদ রেজা, গুড়িহারী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূর আলমসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, অভিভাবক ও অন্য শিক্ষকেরা।

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. নাহিদ বাবু জানায়, তার বাবা একজন দিনমজুর। বিদ্যালয় থেকে এই ত্রাণ পাওয়ায় তাদের খুব উপকার হয়েছে।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া জান্নাত বলে, ‘আমি এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে শুনেছি বিদ্যালয় থেকে নাকি অনেক উপহার ও সহযোগিতা পাওয়া যায়। আজকে এই ত্রাণ পেয়ে আমি হাতেনাতে তার প্রমাণ পেলাম।’