রাডার ক্রয় দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন এরশাদ

দুই যুগ আগের বিমানের রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এ রায় দেন।
খালাস পাওয়া অপর দুই আসামি হলেন বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ ও বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। মামলার অপর আসামি ছিলেন ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। শুরু থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। পলাতক অবস্থায় তিনি মারা যাওয়ায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রায়ে আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার কেনার ব্যাপারে অর্থ আত্মসাৎ বা কাউকে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অপর দুই আসামি। রায় উপলক্ষে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এরশাদ আদালতে হাজির হন। দলের অনেক নেতা-কর্মী আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। রায় ঘোষণার পর সাড়ে চারটার দিকে এরশাদ আদালত চত্বর ত্যাগ করেন। তবে রায়ের ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কোনো কথা বলেননি।
১৯৯২ সালের ৪ মে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এরশাদসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, আসামি এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ইচ্ছা করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিমানবাহিনীর প্রস্তাবিত ১৯৮১ সালের রাডার মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে ফ্রান্সের সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনেন। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এরশাদের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যেসব সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করে, তাঁরাই প্রমাণ করেছেন এরশাদ নির্দোষ। আর যেসব নথি আদালতে উপস্থাপন করা হয়, সেখান থেকেও প্রমাণিত হয়েছে এরশাদ কোনো অপরাধ করেননি। আদালতের কাছ থেকে এরশাদ ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে জানান, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।