ওপরের সমাধান সাকিবে কিন্তু নিচে?

ব্যাটিংয়ের তিন নম্বর পজিশন নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগটা পুরোনো। সাকিব আল হাসানকে দিয়ে পুরোনো সমস্যার নতুন সমাধান খুঁজতে চাইছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রায় ১২ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়ই লোয়ার মিডল অর্ডার সামলানো সাকিবকে দিয়ে সেই সমস্যার না হয় একটা সমাধান হলো। কিন্তু ব্যাটিংয়ের নিচের দিকটা নিয়ে কি হবে? 

১৮১ ওয়ানডেতে সাকিব তিনে ব্যাটিং করেছেন মাত্র তিনবার। গত পরশু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, নতুন এই চ্যালেঞ্জটা তিনি নিচ্ছেন। আজ মাশরাফি বিন মুর্তজার সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটা আবার উঠেছে। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক এই পজিশনে সাকিবকে নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী, ‘গত তিন-চার বছরে অনেককেই এখানে খেলানো হয়েছে। সাকিব গত ১০-১২ বছর ধরে ভালো খেলছে। সে যদি এক-দুই-তিন ম্যাচ ব্যর্থও হয়, আমি নিশ্চিত যে ওই একমাত্র খেলোয়াড় যে আবার ফিরে আসতে পারে। তার নিজস্ব একটা ভাবমূর্তিও তৈরি হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটে।’ 
ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং অর্ডার দেখে বোঝা গেলে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল-এনামুল হক, তিনে সাকিব, চারে মুশফিকুর রহিম ও পাঁচে মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু লোয়ার মিডল অর্ডার, যাদের দায়িত্ব শেষের দিকে, স্লগ ওভারে দ্রুত রান তুলে স্কোরটা বড় করা কিংবা লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচ শেষ করা। তাদের নিয়ে নতুন ভাবনা কি কিছু আছে? এত দিন এই ব্যাপারটা সামলেছেন বেশির ভাগ সময়ই সাকিব। ওয়ানডেতে ১৭১ ইনিংসের ১৩৬টিতেই তিনি নেমেছেন পাঁচ কিংবা ছয়ে।

সাকিবকে দিয়ে ‘তিনে’র সমাধান আপাতত। ছবি: প্রথম আলো
সাকিবকে দিয়ে ‘তিনে’র সমাধান আপাতত। ছবি: প্রথম আলো

সাকিব ওপরে যাওয়ায় লোয়ার মিডল অর্ডার নড়বড়ে হয়ে গেল না তো? মাশরাফি তা মনে করেন না, ‘প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান যদি ব্যর্থ হয় শেষ পর্যন্ত আমরা বড় স্কোর গড়তে পারব না। আমরা আশা করব আমাদের টপ ফাইভ এমন শুরু এনে দেবে বা এমন একটা অবস্থানে নিয়ে যাবে যেটি টেনে নিতে ছয়-সাত-আটের ব্যাটসম্যান ভূমিকা রাখবে। আগেই বলেছি, সাকিব তিনে আসায় সাত-আটে আমাদের বিরাট একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। এখানে যে ধারাবাহিক থাকতে পারবে সে দলে তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারবে।’
ছয়ে সাব্বির রহমান তো আছেনই। সাতে নাসির হোসেনের জায়গাও মোটামুটি নিশ্চিত। মাশরাফিকে ভাবাচ্ছে আট নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে, ‘আটের জায়গাটা...নাসিরের জায়গাতেও অনেক হিসেব-নিকেশ আছে। ওই সময়ে ওখানে ওর মতো ২০ বলে ৩৫ রান করার মতো ব্যাটসম্যান আমাদের নেই। টি টোয়েন্টিতে এটা (আট নম্বর) নিয়ে ভুগেছি। ওই জায়গায় যদি ভালো কাউকে পাই...এখন আবুল হাসান, সাইফউদ্দিন এমনকি মিরাজ (মেহেদী) আছে। এদের দায়িত্ব, এখানে কীভাবে খাপ খাইয়ে নেবে, শট খেলার সামর্থ্য থাকতে হবে। এদের সবাই বোলিংয়ে খুব ভালো। কিন্তু ব্যাটিংয়ে কীভাবে উন্নতি করছে সেটা ওদের ওপর নির্ভর করছে। সাকিব তিনে যাওয়ায় এদের জন্য বড় একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। তারা অবদান বাড়াতে পারলে ম্যাচ উইনারও হতে পারে।’ 
সবার কথাই বললেন। নিজের কথাটা বললেন না মাশরাফি। নিজের দিনে লেট অর্ডারে তাঁর চেয়ে ভয়ংকর আর কে আছে!