দলছুট হনুমান

দলছুট এই মুখপোড়া হনুমানটি বেড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত রোববারের ছবি l প্রথম আলো
দলছুট এই মুখপোড়া হনুমানটি বেড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত রোববারের ছবি l প্রথম আলো

পাবনার বেড়া পৌর এলাকায় সপ্তাহ খানেক হলো দলছুট একটি মুখপোড়া হনুমান ঘুরে বেড়াচ্ছে। হনুমানটি যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই কৌতূহলী এলাকাবাসী ভিড় করে সেটিকে দেখছে।

 স্থানীয় লোকজন জানান, সপ্তাহ খানেক আগে বেড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে চার-পাঁচটি মুখপোড়া হনুমান দেখা যায়। একপর্যায়ে সেগুলো সাঁথিয়ার দিকে চলে যায়। এরপর গত বুধবার বিকেল থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত একটি হনুমানকে বেড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এ সময়ের মধ্যে অন্য হনুমানগুলোর খোঁজ জানা যায়নি।

 বেড়ার মনজুর কাদের মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক আবদুস সালাম এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, মুখপোড়া হনুমান বৃক্ষচারী শান্তিপ্রিয় প্রাণী। চলাফেরা, ঘুম, খাবার সংগ্রহ, প্রজনন, খেলাধুলা, বিশ্রাম—সবকিছু এরা গাছে সম্পন্ন করে। মূলত গাছের পাতা খেয়ে জীবনধারণ করে বলে এদের পাতা বানরও বলা হয়। এরা বিভিন্ন উদ্ভিদের পরাগায়ণ ও বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, শিল্পায়ন ও কৃষিক্ষেত্রের সম্প্রসারণের জন্য বনভূমি হ্রাস পাওয়ায় এরা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। মূলত এ কারণেই এরা লোকালয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে।

 গতকাল সকাল ১০টার দিকে বেড়ার শেখপাড়া এলাকায় দেখা যায়, কৌতূহলী জনতার উৎপাত থেকে বাঁচতে হনুমানটি গাছের উঁচু ডালে আশ্রয় নিয়েছে। মানুষের ভিড় বেড়ে গেলে এটি স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। কেউ কেউ এটিকে কলা, বিস্কুট, পাউরুটি খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। প্রাণীটি কীভাবে এবং কোথা থেকে বেড়ায় এসেছে, তা কেউ জানে না।

 বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারুনূর রশীদ বলেন, ‘সম্ভবত যশোর থেকে ঈশ্বরদী, পাবনা হয়ে হনুমানটি বেড়ায় এসেছে। বানরটির কোনো ক্ষতি যাতে কেউ না করতে পারে, সে জন্য আমার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সেটির ওপর নজর রাখা হয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ওসিকে জানিয়েছি।’

 বেড়ার ইউএনও ফারজানা খানম বলেন, ‘হনুমানটির ব্যাপারে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তবে এর মধ্যে এলাকাবাসী প্রাণীটির যেন কোনো ক্ষতি না করে, সে বিষয়ে সবার সচেতনতা কামনা করছি।’