বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে আনন্দে ভেসেছিলেন যিনি

>
  • ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট পেয়েছিলেন ভাস।
  • ১৫ বছর আগের সেই অর্জন নিয়ে আজ আরেকবার বললেন শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচ।
  • বাংলাদেশে কতটা বদলেছে, সেটিও জানালেন।

চামিন্ডা ভাসকে আজ সকালে পাওয়া গেল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের নেটে। শ্রীলঙ্কান নারী দলের অনুশীলন দেখছিলেন নিবিষ্ট মনে। ভাসকে দেখলেই ভেসে আসে ১৫ বছর আগের স্মৃতিটা। শ্রীলঙ্কান পেস বোলিং কিংবদন্তির কাছে যেটি সুখস্মৃতি, বাংলাদেশের কাছেই তা বড় বেদনার!
২০০৩ বিশ্বকাপে পিটারমারিজবার্গে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। মুভমেন্ট না বুঝে ভাসের প্রথম বলেই চালাতে গিয়ে বোল্ড হান্নান সরকার। পরের বলে ফিরতি ক্যাচ হয়ে ফিরলেন মোহাম্মদ আশরাফুল । তৃতীয় বলে এহসানুল হককে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে দুহাত পাখা মেলে উড়তে থাকলেন ভাস—ইনিংসের প্রথম তিন বলেই হ্যাটট্রিক, ওয়ানডে ইতিহাসে যেটি প্রথম, সেটিও আবার বিশ্বকাপে! আনন্দের ষোলোকলা পূর্ণ করতে তখনো যেন বাকি। পঞ্চম বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেললেন সানোয়ার হোসেনকে, বাংলাদেশের ৫ রানেই ৪ উইকেট শেষ! ভাস ভাসলেন আনন্দে, বাংলাদেশ যন্ত্রণার সাগরে!

২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই হ্যাটট্রিক। ফাইল ছবি
২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই হ্যাটট্রিক। ফাইল ছবি

প্রায় ১০ বছর আগে খেলোয়াড়ি জীবন পেছনে ফেলে আসা ভাস এখন কাজ করছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) বোলিং কোচ হিসেবে। প্রেমাদাসার মেঘলা দুপুরে ১৫ বছর আগের স্মৃতিটা মনে করিয়ে দেওয়া হলো তাঁকে। সেদিন কী পরিকল্পনা ছিল তাঁর? অর্জনের ডালি এতটা পূর্ণ হবে, কল্পনাতেও কি ছিল? ভাসের উত্তর, ‘আপনি পরিকল্পনা করে এটা করতে পারবেন না। আপনার অভিষ্ট লক্ষ্য যেখানে বিশ্বকাপে ভালো করা আর যতটা সম্ভব দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া। আমি অনেক ভাগ্যবান, সবকিছুই আমার পরিকল্পনামতো হয়েছে। এটা আসলে হয়ে গেছে। খুব খুশি এই অর্জনে।’

ভাসের পাঠশালায় এক তরুণ বোলার। ছবি: প্রথম আলো
ভাসের পাঠশালায় এক তরুণ বোলার। ছবি: প্রথম আলো

ভাস যেটিতে খুশি, বাংলাদেশ সেটিতেই দুঃখী! কদিন আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভাসের মতো ইনিংসের শুরুতে না হলেও মাশরাফি বিন মুর্তজাও পেয়েছেন ওভারে ৪ উইকেট (টানা ৪ বলে)। ভাস অবশ্য খবরটা আজ শুনলেন। যদিও দুই ম্যাচের বিস্তর ব্যবধান, উপলক্ষ, প্রতিপক্ষেও অনেক পার্থক্য। তবুও মাশরাফির অর্জনকে বড় করেই দেখছেন ভাস, ‘আমি যদিও দেখেনি, তবে ৪ বলে ৪ উইকেট পাওয়া সহজ কিছু নয়। অনেক সাহস লাগে। প্রতি বলে উইকেট পাওয়া যেনতেন ব্যাপার নয়।’
খেলোয়াড়ি জীবনে যে বাংলাদেশকে দেখেছেন, সেটির সঙ্গে এখনকার দলের কোথায় পার্থক্য, ভাস সেটি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘তখন বাংলাদেশ মাত্রই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেছে। এখন বাংলাদেশ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল। তাদের হারানো সহজ নয়। এখনকার খেলোয়াড়েরা ভালো করছে, নিজেদের অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। যদিও এখনো তারা তরুণ দল, প্রতিদিন শিখছে, ভালো করছে।’
নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ ভালো করবে, মৃদুভাষী, ভীষণ বিনয়ী ভাস সেটিও জানাতে ভুললেন না।