'দেবীর সঙ্গে কথোপকথন'

প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। যাঁর উদ্দেশে প্রশ্নটা করা, তিনি তখন হাসিমুখে মঞ্চে বসে আছেন। হাতে মাইক্রোফোন। তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। কিন্তু তাঁকে বলতে হবে ‘রানু’কে নিয়ে! যে রানু কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস ঘুরে ভর করেছে তাঁর ভেতর। সেই রানু কেমন? জয়া বললেন, ‘রানু নিয়ে এখনই কিছু বলব না। শুধু এতটুকু বলব, এটা অসাধারণ ও শক্তিশালী একটা চরিত্র, যেটা করার লোভ আমার অনেক দিনের ছিল।’

গতকাল সোমবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম ক্লাব আয়োজন করেছিল ‘দেবীর সঙ্গে কথোপকথন’ নামে একটি অনুষ্ঠানের। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হলো সরকারি অনুদানে নির্মিত ও জয়া আহসান প্রযোজিত ও অভিনীত দেবী ছবির প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান, পরিচালক ও এই ছবির অভিনেতা অনিমেষ আইচ, কস্টিউম ডিজাইনার আনিকা জাহীন, নির্বাহী প্রযোজক শিমুল বিশ্বাসসহ বেশ কজন কলাকুশলী। বিকেল চারটার খানিক আগে শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান। পরিচয় পর্বের পরপরই শুরু হয় দেবী নিয়ে গল্প। গতানুগতিক ঢঙে নয়, একেবারে কথোপকথনের আদলেই চলতে থাকে অনুষ্ঠান। ততক্ষণে দেবীর গল্প শুনতে মিলনায়তন কানায় কানায় ভরে গেছে।

বানের জলের মতো একের পর এক প্রশ্ন আসছে জয়া আহসান, অনিমেষ আইচসহ মঞ্চে বসে থাকা সবার দিকে। জয়া বললেন, ‘অনেক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। এই যুদ্ধ হয়তো অনেকেই দেখেন না। তাই এই যুদ্ধ দেখার জন্য এবং দেবী উপন্যাস থেকে কেমন হয়েছে চলচ্চিত্রটি, তা দেখার জন্য সবাইকে হলে আসার আমন্ত্রণ জানাই।’

‘দেবীর সঙ্গে কথোপকথন’ অনুষ্ঠানে জয়া আহসান, অনিমেষ আইচ, আনিকা জাহীন ও শিমুল বিশ্বাস
‘দেবীর সঙ্গে কথোপকথন’ অনুষ্ঠানে জয়া আহসান, অনিমেষ আইচ, আনিকা জাহীন ও শিমুল বিশ্বাস

এক ফাঁকে অনিমেষ জানালেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাঝে এলে আমার দারুণ লাগে। নিজেকে তরুণ তরুণ লাগে।’ এক শিক্ষার্থী তাঁর কাছে জানতে চান, কীভাবে দেবীর সঙ্গে যুক্ত হলেন? অনিমেষ বললেন, ‘শুটিংয়ের ঠিক তিন দিন আগে আমাকে জানানো হয় চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করতে হবে। জয়া আমার খুব প্রিয় অভিনেত্রী ও বন্ধু। তাই তার অনুরোধ আমি ফেলতে পারিনি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না দেবীর প্রধান চরিত্র মিসির আলিতে রূপদান করা চঞ্চল চৌধুরী ও পরিচালক অনম বিশ্বাস। তবে ঘুরেফিরে আলাপচারিতায় চলে এলেন দুজন। কেন মিসির আলির জন্য চঞ্চলকে বেছে নেওয়া হলো, এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন নির্বাহী প্রযোজক শিমুল বিশ্বাস। ‘আমরা অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্নভাবে ছবি তুলে দেখেছি। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ বইয়ে যে মিসির আলির বর্ণনা দিয়ে গেছেন, তার সঙ্গে চঞ্চল ছাড়া আর কারও মিল পাইনি। এ কারণেই মিসির আলি চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছেন’, বলেন তিনি।

না থেকেও এই অনুষ্ঠানে আরও একজন ছিলেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। যাঁর হাতেই আসলে জন্ম মিসির আলির মতো জনপ্রিয় চরিত্রের। তাই সামনে বসে থাকা শিক্ষার্থীরা জানতে চাইলেন, জয়া ও অনিমেষের সঙ্গে কেমন ছিল এই কথাসাহিত্যিকের সম্পর্ক? অকপটে দুজন জানালেন সে কথাও।

সবশেষে কেক কাটার পর্ব। ১ জুলাই ছিল জয়া আহসানের জন্মদিন। পরদিন হলেও জন্মদিনের কেক কাটা তো বন্ধ রাখা যায় না। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ফিল্ম ক্লাবের উদ্যোগে এই কেক কাটার পর্বও উপভোগ করলেন সবাই।