জমিয়ে রাখা স্বপ্ন

স্বপ্ন নিয়ে’র প্রতিটি সংখ্যা আছে কান্তা রায়ের সংগ্রহে
স্বপ্ন নিয়ে’র প্রতিটি সংখ্যা আছে কান্তা রায়ের সংগ্রহে

‘মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় বাবাকে চিঠি লেখার শেষে প্রিয় কোনো মনীষীর উক্তি জুড়ে দিতাম। পরে প্রথম আলোর রোববারের ক্রোড়পত্র “স্বপ্ন নিয়ে”র প্রথম সংখ্যা হাতে পেয়ে প্রথমে মনে পড়েছিল বাবাকেই। সংখ্যাটা যেন ছিল শৈশবে বাবার হাত থেকে পাওয়া মহামূল্যবান বইগুলোর মতো।’ এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে একটু দম নিলেন কান্তা রায়, রিমি নামেও পরিচিত তিনি।দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও অ্যানাটমির বিভাগের প্রধান এই মানুষটি নিজের বাড়ির ড্রয়িংরুমে যখন কথা বলছেন, আমরা দুই চোখ মেলে দেখছি তাঁর সংগ্রহশালা। শোকেসে শোভা পাচ্ছে নানা রকম শিলাখণ্ড, সৈকতের প্রবাল ইত্যাদি। কিন্তু এই চিকিৎসকের কণ্ঠে হঠাৎ ‘স্বপ্ন নিয়ে’ এর কথা কেন? কারণ, এ পর্যন্ত ‘স্বপ্ন নিয়ে’র যত সংখ্যা বের হয়েছে, সবই আছে তাঁর সংগ্রহে! না, সংখ্যাগুলো কেবল সংগ্রহ করেই ক্ষান্ত হননি অধ্যাপক রিমি, এর বিভিন্ন লেখা পড়ে নিজে যেমন উদ্দীপ্ত হয়েছেন, একইভাবে সেই উদ্দীপনার ঝলক ছড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও।

: ‘স্বপ্ন নিয়ে’ সংগ্রহ করেন কেন?

‘এই পাতাটি আমাকে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখায়। এ পাতা পড়ে আমার সন্তানেরাও নতুন কিছু, ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখে।’—রিমির সরল স্বীকারোক্তি। তাঁর স্বামীও চিকিৎসক। ছেলে পড়েন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর মেয়ে দিনাজপুর সরকারি কলেজে, দ্বাদশ শ্রেণিতে।

‘স্বপ্ন নিয়ে’ নিয়ে এন্তার গল্প রিমির। যেমন বললেন, ‘এর সব সংখ্যাই ভীষণ পছন্দের। সব সংখ্যাতেই চেয়ে থাকি “সফলদের স্বপ্নগাথা”র জন্য। এখানে থাকে বিখ্যাত সব মানুষের এগিয়ে যাওয়ার গল্প। কী যে ভালো লাগে আমার!’

একে একে রিমি বলতে থাকেন অনেক কথা। তাঁর জীবনের কাহিনি। হেরে যাব—এ কথা মানতে একদমই নারাজ এই শিক্ষক-চিকিৎসক। তাই বারবার প্রেরণা খুঁজে ফেরেন বাধা পেরোনো মানুষদের জীবনের গল্প থেকে, সফলদের স্বপ্নগাথা থেকে। এটা নাকি তাঁর কাছে ‘টনিক’-এর মতো। জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে ‘টনিক’ এর কাজ করে ‘স্বপ্ন নিয়ে’?

এ প্রশ্নে রিমির উত্তরটি মনে রাখার মতো, ‘আমি তো শিক্ষক। ক্লাসে লেকচার দেওয়ার সময় কখনো শিক্ষার্থীদের মধ্যে একঘেয়ে ভাব আসে। তখন “টনিক”টি কাজে লাগাই। আমি “স্বপ্ন নিয়ে”র কোনো গল্প অথবা নিজের জানা কোনো সফল ব্যক্তির কথা বলে উৎসাহ দিই ওদের। ওরা উৎসাহ পায়। আসলে এই পাতায় দেশের সফল মানুষদের কাহিনি অনেক বেশি বেশি দেখতে চাই। কেননা, নিজের দেশের সফল মানুষেরা আমার ও আমাদের সন্তানদের মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার সাহস দেন।’